সীমান্তবর্তী প্রত্যন্ত গ্রামে দুয়ারে ভ্যাকসিন প্রকল্পে সামিল খোদ জেলাশাসক
ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে নদীবেষ্টিত গ্রাম দরিবস। ভারতীয় মূল ভূখণ্ড থেকে ধরলা নদী দিয়ে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন এই গ্রাম। যা মূলত একটি দ্বীপের মতো।
শুভেন্দু ভট্টাচার্য, কোচবিহার: ভ্যাকসিন নিয়ে হাহাকার। কখনও জেলায়, কখনও আবার খাস কলকাতা। বিশৃঙ্খলা থেকে বেনিয়ম। রাতভর লাইনে দাঁড়িয়েও মিলছে না ভ্যাকসিন। এই সব কিছুর অভিযোগই সামনে এসেছে। আর এই আবহে একেবারে উলটপুরাণ। একেবারে অন্য ছবি দেখা গেল কোচবিহারে। খোদ জেলাশাসক পবন কাদিয়ান ভ্যাকসিন নিয়ে পৌঁছে যাচ্ছেন সাধারণ মানুষের দরজায়।
ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে নদীবেষ্টিত গ্রাম দরিবস। ভারতীয় মূল ভূখণ্ড থেকে ধরলা নদী দিয়ে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন এই গ্রাম। যা মূলত একটি দ্বীপের মতো। আর এর পাশেই বাংলাদেশ। জানা যায়, একসময় এই গ্রামের মানুষের বাজার ঘাট থেকে লেখাপড়া সবই চলত বাংলাদেশ। স্কুল যাওয়াই হোক বা বাজারে, ওপার বাংলায় যেতে হতো তাঁদের। এখন পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তবে সমস্যা মেটেনি। নদী পেরিয়ে এখনো মূল ভূখণ্ডে আসতে হয় তাঁদের। সেখানে রয়েছে বিএসএফের পাহারা। এমনই একটি ভৌগোলিক অবস্থান দিনহাটা মহকুমার গীতালদহ এলাকার দারিবস গ্রামের। সেই গ্রামের বাসিন্দারাই পেলেন রাজ্য সরকারের দুয়ারে ভ্যাকসিন প্রকল্পের সুবিধা।
আজ, শনিবার এই গ্রামেই দুয়ারে ভ্যাকসিন প্রকল্পে ভ্যাকসিন দেওয়া হল ৪৫ ঊর্ধ্ব ব্যক্তিদের। আর এই কর্মযজ্ঞে সামিল হলেন জেলাশাসক। প্রথমে সীমান্তরক্ষী বাহিনীর স্পিডবোটে ও পরে নদীর চর দিয়ে, কখনও বা হেঁটে আবার কখনও বাইকে চেপে জেলাশাসক পবন কাদিয়ান পৌঁছে গেলেন দরিবস গ্রামে। দরিবস পঞ্চম পরিকল্পনা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আয়োজন করা হয় এই দুয়ারে ভ্যাকসিন প্রকল্প। রাজ্য সরকারের এই প্রকল্পে ভ্যাকসিন পেলেন ৩৮৭ জন।
ঘরের কাছে ভ্যাকসিন পেয়ে স্বাভাবিকভাবে খুশি প্রত্যন্ত এই দ্বীপ গ্রামের সাধারণ মানুষ। শুধু ভ্যাক্সিনেশনই নয়। তার পাশাপাশি গ্রামের নদী ভাঙনের সমস্যা খতিয়ে দেখেন জেলাশাসক। জেলাশাসক পবন কাদিয়ান বলেন “সফলতার সঙ্গে কোচবিহার জেলায় দুয়ারে ভ্যাকসিন প্রকল্প চলছে। বিভিন্ন গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকাগুলিতে ক্যাম্প করে সাধারণ মানুষকে ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে। দরিবস এলাকার মানুষ মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন। তাঁদের সমস্যার কথা ভেবে গ্রামে গিয়েই ভ্যাকসিন দেওয়া হল।“