Corona in Bengal: ভ্যাকসিনের ২টি ডোজ নেওয়ার পরও কৃষ্ণনগরে করোনায় মৃত্যু ওষুধের দোকানের মালিকের
২৪-ঘণ্টা চেয়ারে পড়ে দেহ, বাড়িতে একা মৃতের বৃদ্ধা স্ত্রী
কৃষ্ণনগর, নদিয়া: নদিয়ার কৃষ্ণনগরে শক্তিনগরে দীর্ঘক্ষণ পড়ে রইল এক করোনা রোগীর মৃতদেহ।
পরিবার সূত্রে খবর, কাল রাত দুটো নাগাদ কৃষ্ণনগরের শক্তিনগর জেলা হাসপাতালের বিপরীতে ওষুধের দোকানের মালিকের করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়।
অভিযোগ, স্থানীয় পুরসভাকে খবর দেওয়া হলেও প্রশাসনের তরফে মৃতদেহ নিয়ে যাওয়ার কোনও ব্যবস্থা করা হয়নি । করোনার সরকারি হেল্প লাইন নম্বরে ফোন করেও মেলেনি সহযোগিতা।
পরিবার সূত্রে খবর, মৃত ব্যক্তি কোভিড ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ডোজও নিয়েছিলেন। অভিযোগ, কাল রাতে শ্বাসকষ্টের সমস্যা বাড়লেও কৃষ্ণনগর পুর-হাসপাতাল বন্ধ থাকায় ওই ব্যক্তিকে ভর্তি করা সম্ভব হয়নি।
চেয়ারে বসা অবস্থায় মারা যান তিনি। সেই অবস্থায় ২৪-ঘণ্টা ধরে পড়ে রয়েছে দেহ। বাড়িতে একা রয়েছেন মৃতের বৃদ্ধা স্ত্রী।
কৃষ্ণনগরে ঘটেছে প্রায় একই ধরনের দু-দুটি ঘটনা। নরহরি মুখার্জি লেনের বাসিন্দা সত্তোরর্ধ্ব গৌতমপাল চৌধুরীর গতকাল বিকেলে মৃত্যু হয়। তাঁর ছেলে বিদেশে থাকেন। স্ত্রী ও মেয়ে করোনা আক্রান্ত হয়ে কলকাতার হাসপাতালে ভর্তি বলে স্থানীয় সূত্রে খবর।
গতকাল বিকেলে বৃদ্ধের মৃত্যুর পর তাঁর আত্মীয়দের খবর দেওয়া হয়। তাঁরা স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। কিন্তু আজ দুপুর পর্যন্ত, প্রায় ২৪ গণ্টা কাটতে চলল, মৃতদেহ পড়ে রয়েছে বাড়িতেই।
জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, নবদ্বীপ শ্মশানে রাতে করোনায় মৃত রোগীদের দেহ সত্কার করা হয়। ফলে আজ রাতে দেহ উদ্ধার করে নিয়ে গিয়ে সত্কারের সম্ভাবনা রয়েছে।
প্রায় একই ঘটনা দক্ষিণ ২৪ পরগনাতেও। সোনারপুরে ১৫ ঘণ্টারও বেশি বাড়িতে পড়ে কোভিড আক্রান্তের দেহ। ১৭ এপ্রিল আক্রান্ত হন প্রৌঢ়। পরিবারের দাবি, অবস্থার অবনতি হওয়ায় হাসপাতালে ভর্তির চেষ্টা করা হয়। একাধিক হাসপাতালে ফোন করেও মেলেনি বেড। চেষ্টা করেও মেলেনি অক্সিজেন, দাবি মৃতের ছেলের। মৃত্যুর পর থেকে দেহ পড়ে আছে বাড়িতে। প্রশাসনকে বারবার জানিয়েও কাজ হয়নি বলে অভিযোগ।
অন্যদিকে, বিনা চিকিৎসায় ফের বিনা চিকিৎসায় করোনা রোগী মৃত্যুর অভিযোগ উঠল মধ্যমগ্রামে। পরিবারের অভিযোগ, প্রবল শ্বাসকষ্ট সত্ত্বেও অক্সিজেন দেয়নি কলকাতা মেডিক্যাল। চিকিৎসা না করেই এনআরএসে রেফার করা হয় ৬৫ বছরের বৃদ্ধাকে। এনআরএসে নিয়ে গেলে বৃদ্ধাকে মৃত বলে ঘোষণা।
মৃত্যুর পরে বৃদ্ধার করোনা রিপোর্ট পজিটিভ আসে। বৃদ্ধার ছেলেও করোনা আক্রান্ত হয়ে এনআরএসে ভর্তি। অভিযোগ পেলে খোঁজ নিয়ে দেখব, প্রতিক্রিয়া মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষর।
এর আগে, কলকাতাতেও অক্সিজেনের অভাবে উঠল রোগীমৃত্যুর অভিযোগ ওঠে। ঘটনা ঘটে গড়ফা থানা এলাকায়। কোভিড পজিটিভ রিপোর্ট না থাকায় সাতাত্তর ঊর্ধ্ব মহিলাকে হাসপাতালে ভর্তি না নেওয়ার অভিযোগ।
দোকানে দোকানে ঘুরেও মেলেনি অক্সিজেন। গতকাল রাত ৮টা নাগাদ হাসপাতালে ভর্তি হতে না পেরে, অক্সিজেন না পেয়ে মৃত্যু হয় সন্ধ্যারানি পালের।
মৃত্যুর তিন ঘণ্টা পর আসে করোনা পরীক্ষার পজিটিভ রিপোর্ট। মৃত্যুর পরও ১৬ ঘণ্টা ঘরেই পড়েছিল মৃতদেহ।
এবিপি আনন্দের খবরের জেরে অবশেষে নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। ১৬ ঘণ্টা পর পুরসভার তরফ থেকে শববাহী শকট আসে। নিয়ে যাওয়া হয় মৃতদেহ।