East Burdwan: অন্ধকারে ভরসা হ্যারিকেন, ঘরের ভিতরে ভর্তি জল, ১২ বছর ধরে অসহায় অবস্থায় দিনযাপন মা-ছেলের
উন্নয়নের ছিটেফোঁটাও পৌঁছয়নি সেখানে। একটু বৃষ্টিতেই ঘরের ভিতরে ঢুকে যায় জল। তার উপর আছে সাপের উপদ্রপ।
কমলকৃষ্ণ দে, বর্ধমান- ঘরের ভিতরে ভর্তি জল। চৌকির উপরে কোনওরকমে অসুস্থ মাকে নিয়ে দিনযাপন ছেলের। ১২ বছর ধরে বর্ধমান পুরসভা এলাকায় শ্বাপদ-সংকুল পরিবেশে বাস করছেন মা ও ছেলে। উন্নয়নের ছিটেফোঁটাও পৌঁছয়নি সেখানে। একটু বৃষ্টিতেই ঘরের ভিতরে ঢুকে যায় জল। তার উপর আছে সাপের উপদ্রপ।
বর্ধমান পুরসভার ১৬নং ওয়ার্ডের মীরছোবা দক্ষিণ এলাকা। গত ১২ বছর ধরে অসহায় অবস্থায় দিন কাটাচ্ছে ওই পরিবার। অভিযোগ স্থানীয় ক্লাব থেকে বর্ধমান পুরসভার প্রাক্তন স্থানীয় কাউন্সিলার সহ তৃণমূল নেতাদের জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি। ফলে বৃদ্ধা রোগাতুর মা আরতি রুইদাসকে নিয়ে কোনোরকমে বেঁচে রয়েছেন ছেলে বাবু রুইদাস। তাঁদের অভিযোগ, চারদিকে বড়বড় বাড়ি হয়ে যাওয়ায় ড্রেনেজ সিস্টেম ভেঙে পড়েছে। ফলে সমস্ত জল জমে তাঁদের ঘরে ঢুকে পড়ছে।
প্রতিবছর বর্ষার সময় ঘরের ভেতর এক হাঁটু করে জল ঢুকে যায়। এমনকি একটু বৃষ্টি পড়লেই তাঁদের আশ্রয় স্থল চৌকির উপর। সেখানেই হয় রান্নাবান্না। রাতের অন্ধকারে হ্যারিকেনের আলোই ভরসা। খুব বেশি জল হয়ে গেলে বাধ্য হয়ে প্রতিবেশীদের বাড়িতে আশ্রয় নিতে হয় মা ও ছেলেকে। একাধিক রোগাক্রান্ত বৃদ্ধা মাকে ছেড়ে অন্য কোনও কাজেও যেতে পারে না ছেলে বাবু রুইদাস। পাড়ারই একটি দোকানে কর্মচারি হিসাবে কাজ করেন। কোনওদিন ৫০টাকা আবার কোনওদিন ৬০টাকা মজুরি মেলে। আয় বলতে এটাই।
আরতি রুইদাস জানিয়েছেন, প্রায় ১২ বছর ধরে এখানে রয়েছি। একটু বৃষ্টি হলেই ঘরের মধ্যে জল ঢুকে পড়ে। তখন অন্যজনের বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নিতে হয়। আর্থিক কারণে ঘর মেরামত তো দূর নিজের চিকিত্সাও করাতে পারেননি বলে জানান বৃদ্ধা। বাবু রুইদাস জানান, অসুস্থ বৃদ্ধা মাকে ছেড়ে তিনি কোথাও যেতে পারি না। তাঁর দেখভাল করতে হয়। পাড়ারই একটা দোকানে কাজ করি। গড়ে প্রতিদিন ৫০-৬০ টাকা পাই, সেটা দিয়েই চলে সংসার। পরিস্থিতির কথা জেনে, বর্ধমান দক্ষিণের বিধায়ক খোকন দাস জানিয়েছেন, বর্ষা মিটলেই ঘরের ব্যবস্থা এমনকী ওই বৃদ্ধার চিকিৎসারপ ব্যবস্থা করা হবে।