Makar Sankranti 2021: আগামীকাল মকর সংক্রান্তির পুণ্যস্নান, সাগরের পাড়জুড়ে চলছে বাহিনীর প্যাট্রলিং
কথায় বলে, সব তীর্থ বারবার, গঙ্গাসাগর একবার! তবে করোনা আবহে এবছর ভিড়ের চাপ অনেকটাই কম...
দক্ষিণ ২৪ পরগনা: কথায় বলে, সব তীর্থ বারবার, গঙ্গাসাগর একবার! প্রতি বছর গঙ্গাসাগর মেলায় লক্ষ লক্ষ মানুষের সমাগম হয়। এবার করোনা আবহে ভিড়ের চাপ অনেকটাই কম।
আগামীকাল মকর সংক্রান্তির পুণ্যস্নান। তার আগে, প্রস্তুত রয়েছে উপকূলরক্ষী বাহিনী, নৌবাহিনী ও জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। সাগরের পাড়জুড়ে চলছে প্যাট্রলিং। পাশাপাশি, যে কোনও পরিস্থিতির মোকাবিলা করার জন্য মহড়াও চলছে।
এর মধ্যে মঙ্গলবার গঙ্গাসাগর মেলায় গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়া দুই ব্যক্তিকে এয়ার অ্যাম্বুল্যান্সে উড়িয়ে আনা হল হাওড়ায়।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, মুকুল গিরি নামে এক ব্যক্তির মেলা প্রাঙ্গনে বুকে ব্যথা শুরু হয়। মৃত্যুঞ্জয় বর নামে আরেক ব্যক্তি মেলা প্রাঙ্গণে কীটনাশক খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন।
দু’জনকেই এয়ার অ্যম্বুল্যান্সে হাওড়ায় আনা হয়। ডুমুরজলা হেলিপ্যাড গ্রাউন্ড থেকে অ্যাম্বুল্যান্সে গ্রিন করিডর করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
অন্যবারের মতো এবারও মেলা প্রাঙ্গনে রয়েছে জোরদার নিরাপত্তা। পিটিএমএস মাধ্যমে ঘাটগুলি থেকে অধিক ভিড় আটকাতে নৌকা গুলিতেও নজর রাখা হচ্ছে। কোভিড পরিস্থিতিতে ভিড়ের ওপর নজর রাখা হচ্ছে।
মেলা প্রাঙ্গনে তৈরি করা হয়েছে মেগা কন্ট্রোল রুম। বাবুঘাট থেকে সাগর পর্যন্ত প্রায় ১১০০ সিসি ক্যামেরার মাধ্যেম নজরদারি চালানো হচ্ছে।
দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলাশাসক পি উলগানাথন মেগা কন্ট্রোল রুম তৈরি হয়েছে সেখান থেকে নিজেও পর্যবেক্ষণ। এয়ার অ্যাম্বুল্যান্সের ব্যবস্থা।
মঙ্গলবার সন্ধেয় মেগা কন্ট্রোলরুম ঘুরে দেখেন রাজ্যের তিন মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়, অরূপ বিশ্বাস ও সুজিত বসু। করোনা-আবহে এবার ই-স্নানের ওপর জোর দিয়েছে রাজ্য সরকার।
এদিকে, মকর সংক্রান্তির পূণ্য লগ্নে রাঢ় বঙ্গ সহ বাঁকুড়া জেলা জুড়ে উৎসবের মেজাজ। চলছে টুসু জাগরণের প্রস্তুতি। নিরবিচ্ছিন্ন একমাসের টুসু আরাধণা শেষে এখন পৌষ সংক্রান্তিতে জাগরণ শেষে উৎসবের সমাপ্তি ঘোষণা।
তার আগে বাঁকুড়া শহর সংলগ্ন জুনবেদিয়া, শুশনিডাঙ্গা সহ বেশ কিছু গ্রামে গিয়ে দেখা গেল টুসু পরবের আনন্দে মশগুল আট থেকে আশি সকলেই।
তবে এতো সবের মধ্যেও আধুনিক নগর সভ্যতার চাপে কমছে টুসুকে নিয়ে উন্মাদনা। মানছেন বর্তমান প্রজন্মের অনেকেই। স্থানীয় স্কুল পড়ুয়া শ্রাবণী কর্মকারের কথায়, মূলতঃ মোবাইল আসক্তির কারণেই কমছে টুসু প্রীতি। তবে প্রাচীণ এই ঐতিহ্যকে তারা ধরে রাখার চেষ্টা চালাবেন বলে তিনি জানান।
আরেক স্থানীয় রবিলোচন ঘোষ বলেন, টুসু উৎসব মূলতঃ আমোদ প্রমোদের অনুষ্ঠান। নিজেদের সুখ, দুঃখ, অভাব, অভিযোগের কথা এই গানের মধ্যে তুলে ধরা হয়। তবে আধুনিক নগর সভ্যতার যুগে টুসুকে নিয়ে মানুষের উন্মাদনা কমছে বলে তিনি জানান।
টুসু জাগরণের রাত পোহালেই ফুলমালা, রঙিন কাগজ সহযোগে সাজানো টুসুর প্রতীক চৌদলা বা টুসু মূর্তি নিয়ে মেয়েরা স্থানীয় নদী বা পুকুরঘাটে উপস্থিত হয়।
তার আগে উঠোনে নামানো হয় টুসুকে। বিষাদের ছায়াপড়ে এতদিন ধরে আরাধনা করে আসা গ্রামের কুমারী মেয়েদের মুখে। এর প্রতিফলন ঘটে গানের মাধ্যমে। গান গাইতে গাইতে বিসর্জন দেওয়া হয় টুসুকে। টুসু বিসর্জনের পর মকর চান সেরে চলে সই পাতানোর ধুম।
তারপর অপেক্ষা চলতে থাকে আবার পৌষ মাসের, আবার স্বচ্ছল দিনের, আবার তুষু বা টুসু পরবের। আবার মকরের।