Howrah Hooghly Flood Situation : হাওড়ার বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে প্রাক্তন ও বর্তমান সেচমন্ত্রীর তুঙ্গে তরজা, আজ পরিদর্শনে মুখ্যমন্ত্রী
হাওড়ার উদয়নারায়ণপুর, আমতা-সহ বিস্তীর্ণ এলাকায়! বাড়ি-ঘর, রাস্তা-ঘাট, চাষের ক্ষেত থেকে স্কুল সবই জলের তলায়!
সুনীত হালদার, রুমা পাল ও ঋত্বিক মণ্ডল, হাওড়া: বাঁধ উপচে গ্রামে ঢুকেছে দামোদরের জল! হুহু করে ঢুকছে নদীর জল। বন্যা পরিস্থিতি হাওড়ার উদয়নারায়ণপুর, আমতা-সহ বিস্তীর্ণ এলাকায়! বাড়ি-ঘর, রাস্তা-ঘাট, চাষের ক্ষেত থেকে স্কুল, সবই জলের তলায়! যাতায়াতের ভরসা নৌকা! এই পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার হাওড়ার আমতায় যান সেচমন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র। সেখানে বন্যা পরিস্থিতির জন্য চাঞ্চল্যকর অভিযোগ করেছেন মন্ত্রী! কেন্দ্রের দিকে আঙুল তুলে তিনি বলেছেন, ' কেন্দ্র ইচ্ছে করে এটা করে। যার ফলে আমতা উদয়নারায়ণপুরে এই অবস্থা। এই দু’দিনে জল ছাড়ার পরিমাণ কমাচ্ছে না। পলি তোলার দরকার, তাও করে না। '
অন্যদিকে, রাজ্য সরকারের সেচ দফতরের দিকেই আঙুল তুললেন প্রাক্তন সেচনমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেন, 'এই সরকারের আমলে, গত ১০ বছরে কোনও স্থায়ী পরিকল্পনা হয়নি। স্থায়ী পরিকল্পনা না হওয়ার জন্য যখন অতিরিক্ত বৃষ্টি হয় এবং ডিভিসি জল ছাড়ে দুইয়ে মিলে নিম্ন দামোদরের এলাকা প্লাবিত হয়। সেচ দফতর কোনও কাজ করেনি।'
ডিভিসির ছাড়া জলে প্লাবিত উদয়নারায়ণপুরের ৯টি পঞ্চায়েতের ৮৫টি গ্রাম। দুর্গতদের অভিযোগ, স্থায়ী বাঁধ না হওয়ায়, প্রতি বছর দুর্ভোগে পড়তে হয় তাঁদের। টোকাপুরে ঢোকার মুখে বকপোতা সেতু লাগোয়া এলাকার অবস্থা শোচনীয়। রাস্তার ওপর খোলা আকাশের নীচে ঠাঁই নিয়েছেন অনেকেই।
অন্যদিকে , হুগলির খানাকুলের পরিস্থিতি এখনও উদ্বেগজনক। জলের তলায় প্রায় ৬৫টি গ্রাম। নতুন করে জল বাড়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন গ্রামবাসীরা। উঠেছে ত্রাণ না মেলার অভিযোগ। তবে প্রশাসনের দাবি, দুর্গতদের সবরকম সাহায্যই করা হচ্ছে।
হাওড়ায় ত্রাণ না মেলার অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ দেখান গ্রামবাসীরা। গ্রামবাসীদের যাতায়াতের ভরসা বলতে একমাত্র নৌকা। এদিকে, দামোদরের জলে নতুন করে প্লাবিত হয়েছে আমতা ১ নম্বর ব্লকের রসপুর-সহ বিভিন্ন এলাকা। জলমগ্ন হয়ে পড়েছে ২ নম্বর ব্লকের জয়পুর, ঝামটিয়া, ঝিকিরা পঞ্চায়েত এলাকা। হাওড়া-হুগলির সীমানা এলাকায় তিন জায়গায় মুণ্ডেশ্বরীর বাঁধ ভেঙেছে। সেখান দিয়ে তিনটি পঞ্চায়েত এলাকার ১৫টি গ্রামের জল ঢোকায় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে।
হুগলিতেও আরামবাগ-গড়েরঘাট রাস্তার আরও বেশকিছু জায়গা জলের তলায় চলে যাওয়ায় খানাকুল যেতে সমস্যা দেখা দিয়েছে। চারিদিকে জল থইথই। অথচ নেই পানীয় জল। কোনও কোনও এলাকায় সম্পূর্ণ ডুবে গিয়েছে একতলা বাড়ি। ছাদ হারিয়ে অনেকেই আশ্রয় নিয়েছেন রাস্তায়। ত্রিপল খাঁটিয়ে চলছে বসবাস।
এই পরিস্থিতিতে আজ হাওড়া-হুগলির বিপর্যস্ত এলাকা পরিদর্শন করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নবান্ন সূত্রে খবর, এলাকা পরিদর্শনের পর জেলা প্রশাসনের কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকও করবেন তিনি।