বনগাঁর গোপালনগরে মনুয়াকাণ্ডের ছায়া, স্বামীকে খুনের অভিযোগ স্ত্রী ও তাঁর প্রেমিকের বিরুদ্ধে
গতকাল ওই ব্যক্তির স্ত্রী ও তাঁর প্রেমিককে গ্রেফতার করে পুলিশ।
সমীরণ পাল, বনগাঁ: গোয়ালঘরে পড়ে আছেন প্রৌঢ়। রক্তে ভাসছে গোটা শরীর। উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁর গোপালনগরে মনুয়াকাণ্ডের ছায়া। ৬০ বছরের স্বামীকে খুনের অভিযোগ স্ত্রী ও তাঁর প্রেমিকের বিরুদ্ধে। বিষ খাইয়ে ও মাথায় আঘাত করে খুনের অভিযোগ। গতকাল ওই ব্যক্তির স্ত্রী ও তাঁর প্রেমিককে গ্রেফতার করে পুলিশ। খুনের কথা স্বীকার করে নিয়েছেন স্ত্রী।
গোপালনগর থানার মোল্লাহাটি শিকারিপারা এলাকার ঘটনা৷ অভিযুক্ত স্ত্রী আল্পনা সর্দার ও তাঁর প্রেমিক মধু হালদার। মঙ্গলবার সকালে ঘরের মধ্যে থেকে প্রফুল্ল মিস্ত্রীর মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছিল৷ ঘটনার পর থেকে থেকে পলাতক ছিল অভিযুক্তরা। বৃহস্পতিবার রাতে তাদের গোপালনগর থানার নহাটা এলাকা থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। মৃত প্রফুল্লর পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, প্রফুল্ল দ্বিতীয় স্ত্রী আল্পনা। অভিযোগ আলপনার সঙ্গে বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্ক ছিল মধু হালদারের৷ প্রফুল্ল তাঁর প্রতিবাদ করত। পথের কাঁটা সরিয়ে দিতে আল্পনা ও মধু প্রফুল্লকে খুন করেছে বলে দাবি পরিবারের সদস্যদের। এরকম চাঞ্চল্যকর খুনের ঘটনা দেখে এলাকাবাসীরাও স্তম্ভিত।
খুনের কথা কবুল করে নিয়েছেন অভিযুক্ত স্ত্রী। অভিযুক্ত ও মৃতের স্ত্রী আল্পনা মিস্ত্রি বলেন, বিষ খাইয়ে ভারী জিনিস দিয়ে মেরেছি। আমাকে অত্যাচার করত। গোপালনগরে বাসিন্দা তথা মৃতের প্রতিবেশী পূর্ণিমা সর্দার বলেন, বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের জন্য খুন করেছে। মাঝে মাঝেই অশান্তি হত। কিন্তু এরকম কিছু ঘটতে পারে ভাবতেই পারিনি। মৃতের ছেলে প্রভাত মিস্ত্রি বলেন, কাজে গেছিলাম ফিরে এসে দেখি এই অবস্থা। ভাবতেই পারছি না।
এ ছবি মনে করিয়ে দিয়েছে ২০১৭ সালের ২ মে বারাসাতের বুকে ঘটে যাওয়া রোমহর্ষক ঘটনার। সেদিনই বারাসাতের বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় ভ্রমণ সংস্থার ম্যানেজার অনুপম সিংহর রক্তাক্ত দেহ। স্ত্রী মনুয়া মজুমদারের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে প্রেমিকের সঙ্গে মিলে স্বামীকে খুন করার। ঠান্ডা মাথার খুনের সেই ঘটনা নাড়িয়ে দিয়েছিল গোটা রাজ্যকে। তারপর চলেছিল লম্বা বিচারপর্বও।