Rajib Banerjee Poster: মমতার সভার আগে মতুয়া-গড়ে রাজীবের সমর্থনে পোস্টার
পোস্টারে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে "কাজের মানুষ, কাছের মানুষ", "ছাত্র-যুবর নয়নের মণি" বলে উল্লেখ করা হয়েছে
উত্তর ২৪ পরগনা: গোপালনগরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভার আগে ঠাকুরনগর, গাইঘাটায় রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমর্থনে পোস্টার।
এদিন দুই জায়গায় স্টেশন চত্বর, রাস্তায় বনমন্ত্রীর ছবি দেওয়া পোস্টার, ফ্লেক্স দেখতে পাওয়া যায়। পোস্টারে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে "কাজের মানুষ, কাছের মানুষ", "ছাত্র-যুবর নয়নের মণি" বলে উল্লেখ করা হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ বন্যপ্রাণী লাভার্স সংগঠনের তরফে এই প্রচার বলে পোস্টার, ফ্লেক্সে উল্লেখ।
তবে, ঠাকুরনগর, গাইঘাটায় রাজীবের নামে এই পোস্টার পড়া তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। কারণ, এই জায়গাগুলিতে মতুয়া ভোটব্যাঙ্কের একটা বড় অংশ থাকে। আর এদিনই বনগাঁ গোপালনগরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জনসভা। বিধানসভা নির্বাচনে মতুয়া ভোট ফেরানোই লক্ষ্য তৃণমূল তথা তৃণমূলনেত্রীর।
বনগাঁ লোকসভা কেন্দ্রটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। গত লোকসভা ভোটে তৃণমূলের কাছ থেকে আসনটি ছিনিয়ে নেয় বিজেপি। মতুয়া ভোটের বড় অংশ বিজেপি পাওয়ায় এই কেন্দ্রে পিছিয়ে পড়ে তৃণমূল। ফলে বিধানসভা নির্বাচনের আগে এই কেন্দ্রে দাঁড়িয়েই আজ বিজেপির বিরুদ্ধে সর্বাত্মক লড়াইয়ের ডাক দেবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এই প্রথম নয়। এর আগে গত তিনদিন ধরে রাজ্য তথা কলকাতার বিভিন্ন প্রান্তে রাজীবের নামে পোস্টার পড়ছে। মঙ্গলবারও পোস্টার পড়ে বনমন্ত্রীর নিজের জেলা হাওড়ায়। টি রোড সংলগ্ন বালি খাল, বালি নিমতলা-সহ একাধিক জায়গায় রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি-সহ পোস্টার দেখা যায়।
কোথাও লেখা ‘শীত-গ্রীষ্ম-বর্ষা, রাজীবদা ভরসা।’ কোথাও আবার লেখা ‘দিকে দিকে লাখে লাখে, চাইছে মানুষ রাজীবদাকে।’ ‘আমরা দাদার সমর্থক’ ও ‘দাদার ভক্তদের’ নামে দেওয়া হয়েছে পোস্টারগুলি।
অন্যদিকে একই রকম ছবি-সহ পোস্টার-ফেস্টুন পড়েছে বাঁকুড়া শহরের মাচানতলা ও স্টেট ব্যাঙ্ক মোড়ে। এখানে পোস্টার-ফেস্টুন দেওয়া হয়েছে ‘আমরা রাজীবপন্থীদের’ নামে। কিন্তু কারা দিচ্ছে এই পোস্টার-ফেস্টুন? নেপথ্যে বিজেপি রয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছে ঘাস-ফুল শিবির।
প্রসঙ্গত, গত রবিবার হরিদেবপুরে একটি অনুষ্ঠানে গিয়ে ক্ষোভ উগড়ে দেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেছিলেন, যাঁরা যোগ্যতার সঙ্গে কাজ করছেন তাঁরাই প্রাধান্য পাচ্ছেন না। আমাকে কষ্ট দেয় দুঃখ দেয়। যাঁরা ঠান্ডা ঘরে বসে থাকেন তাঁরাই সামনের সারিতে চলে আসছেন। যোগ্যতার সঙ্গে কাজ করার চেষ্টা করেছি। সঙ্গে সঙ্গে পিছনের সারিতে ফেলে দিয়েছে।
এরইসঙ্গে আরও একটি তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য করেন রাজীব। বলেছিলেন, এখনও পর্যন্ত আমি দলের একজন কর্মী। মন্ত্রিসভার একজন সদস্য। আমি এখনো দলের মধ্যে থেকেই কথা বলছি। স্বাভাবিকভাবেই গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে সব কথা সব জায়গায় বলাই যায়। এর মধ্যে অপরাধের তো কিছু নেই। তবে দলের মধ্যে কিছু কথা হলে আগামী দিনে নিশ্চিত বলব। এভাবে প্রকাশ্যে নয়।
রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই মন্তব্যের পরই জল্পনা জোরাল হয়, তাহলে কি শুভেন্দুর পর এবার রাজীবের সঙ্গেও তৃণমূলের দূরত্ব তৈরি হচ্ছে? এরপরই জেলায় জেলায় শুভেন্দুর মতো রাজীবের সমর্থনে পোস্টার পড়তে শুরু করে। যা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।