এক্সপ্লোর
Advertisement
পলিটব্যুরোয় সংখ্যালঘু কোটা-য় জায়গা পেয়েছেন সেলিম, এবিপি আনন্দে সাক্ষাৎকারে বিস্ফোরক ঋতব্রত
কলকাতা: দলের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক সিপিএমের রাজ্যসভা সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়। সরাসরি বললেন, সিপিএমের পলিটব্যুরোয় রয়েছে সংখ্যালঘু কোটা। সেইজন্যই সিপিএম পলিটব্যুরোয় জায়গা পেয়েছেন মহম্মদ সেলিম। দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বর বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন ঋতব্রত। এবিপি আনন্দ-র ‘ঘন্টাখানেক সঙ্গে সুমন’ অনুষ্ঠানে এক সাক্ষাত্কারে ঋতব্রত বলেছেন, দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব বাংলা-বিরোধী। তাঁর অভিযোগ, রাজ্যসভায় দলের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরিকে ফের পাঠানোর ক্ষেত্রে বাধা তৈরি করেছিলেন পলিটব্যুরো সদস্য প্রকাশ কারাত ও তাঁ স্ত্রী বৃন্দা কারাত। তাঁর দাবি, ইয়েচুরির জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত কারাট-বৃন্দারা। কায়েমি স্বার্থ থেকে রাজ্যসভায় পাঠাতে বাধা দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেছেন, সিপিএমের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশই বাংলা বিরোধী। ১৯৯৬-এ তারাই জ্যোতি বসুকে প্রধানমন্ত্রী হতে দেয়নি। পরে জ্যোতি বসু দলের ওই সিদ্ধান্তকে ঐতিহাসিক ভুল হিসেবে মন্তব্য করেছিলেন।
উল্লেখ্য, দামী পেন ও রিস্টওয়াচ ঋতব্রতকে ব্যবহার করতে দেখে সিপিএমের সদস্যদের মধ্যেই নিন্দার ঝড় উঠেছিল। ঋতব্রত-র জীবনযাত্রা নিয়ে দলের অন্দরে পাহাড়প্রমাণ অভিযোগ জমা হয়েছিল। তারপর অকমিউনিস্টসুলভ আচরণের অভিযোগ উঠেছিল তাঁর বিরুদ্ধে। এছাড়াও ব্যক্তিগত জীবনে নীতিহীনতা ও বিশৃঙ্খলার পাশাপাশি দলের খবর সংবাদমাধ্যমে ফাঁস করারও অভিযোগ উঠেছিল তাঁর বিরুদ্ধে। সেগুলি খতিয়ে দেখতে তিন সদস্যের কমিশন গড়ে সিপিএম।তাতে ছিলেন মহম্মদ সেলিম,মদন ঘোষ,মৃদুল দে। কমিটির রিপোর্ট জমা পড়ার পর ঋতব্রতকে তিন মাসের জন্য সাসপেন্ড করেছিল সিপিএম। কমিশন রাজ্য কমিটি থেকে ঋতব্রতকে বহিষ্কারেরও সুপারিশ করে।
ঋতব্রত অবশ্য কমিশনের সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি দাবি করেছেন, আমার বিচারের নামে প্রহসন হয়েছে। কমিশনের শুনানি টেপবন্দি করেছি। ঋতব্রত আরও বলেছেন, সেলিম ও কমিশনের অন্যান্য সদস্যরা তাঁর বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নিতে পারে বলে তিনি সন্দেহ করছিলেন। তাই রুদ্ধদ্বার তদন্ত প্রক্রিয়া তিনি গোপনে রেকর্ডিং করেছেন।
তদন্ত কমিশন বেআইনিভাবে তাঁর ব্যাঙ্ক স্টেটমেন্ট সংগ্রহ করেছেন মন্তব্য করে ঋতব্রত বলেছেন, এ ব্যাপারে তদন্তের জন্য তিনি কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলির কাছে আর্জি জানিয়েছেন। কলকাতা পুলিশের সাইবার শাখারও দ্বারস্থ হয়েছেন তিনি।
তিনি বলেছেন, সাসপেন্ড হওয়ার পর তিন মাস তিনি চুপ করে থাকলেও দিনের পর দিন দলের একাংশ সোশ্যাল মিডিয়া ও অন্যত্র তাঁর বিরুদ্ধে কুৎসা চালিয়ে গিয়েছেন। এ ব্যাপারে দলের সাংসদ মহম্মদ সেলিম ও তাঁর ছেলের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন ঋতব্রত। তিনি দাবি করেছেন, কুৎসাকারীরা দলের কর্মী হওয়া সত্ত্বেও দল কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। তদন্ত কমিশনেও তাঁর বক্তব্যকে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। তাই প্রকাশ্যে আত্মপক্ষ সমর্থনে তিনি বাধ্য হচ্ছেন বলে ঋতব্রতের যুক্তি। টিভি চ্যানেলে তিনি সরাসরিই বলেছেন, কমিশনের চেয়ারম্যান সেলিমের উপরে তিনি কোনও বিশ্বাসই রাখতে পারছেন না। ওই কমিশনে বিচারের নামে প্রহসণ ছাড়া অন্য কিছু হয়নি বলেই তাঁর দাবি। এই প্রসঙ্গেই সেলিম কোটায় পলিটব্যুরোয় জায়গা পেয়েছেন বলে দাবি করেছেন ঋতব্রত।
ঋতব্রতর এই বিস্ফোরক সাক্ষাত্কার সিপিএমের অন্দরে ঝড় তুলেছে।
সেলিম তাঁর প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, আরএসএসের মতো কথা বলেছেন ঋতব্রত। তিনি আরও বলেছেন, দলীয় শৃঙ্খলা বোঝেন না বলেই তদন্ত কমিশন সম্পর্কে মনগড়া মন্তব্য করেছেন ঋতব্রত। সোশ্যাল মিডিয়ায় কুৎসার অভিযোগকে গুরুত্ব দিতে চাননি সেলিম।
দলের অনেক নেতাই বলেছেন, সিপিএমে এ ধরনের ঘটনা নজিরবিহীন। দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের চরম নিদর্শন রাখলেন ঋতব্রত। দল থেকে বহিষ্কারই এর শাস্তি।
ঋতব্রত দাবি করেছেন, এখনই অন্য কোনও দলে যোগ দেওয়ার কোনও পরিকল্পনা তাঁর নেই। তবে তিনি বিজেপি-তে যোগ দিতে পারেন বলে জোর জল্পনা চলছে। সিপিএম নেতাদের একাংশ বলেছেন, এখনই হয়ত দল তাঁকে বহিষ্কার করবে না।
ইয়েচুরি এ ব্যাপারে বলেছেন, সাক্ষাত্কারটি তাঁর এখনও দেখা হয়নি। প্রথমে বিস্তারিত জানতে হবে।
খবর (News) লেটেস্ট খবর এবং আপডেট জানার জন্য দেখুন এবিপি লাইভ। ব্রেকিং নিউজ এবং ডেলি শিরোনাম দেখতে চোখ রাখুন এবিপি আনন্দ লাইভ টিভিতে
আরও দেখুন
Advertisement
ট্রেন্ডিং
Advertisement
Advertisement
সেরা শিরোনাম
জেলার
জেলার
জেলার
জেলার
Advertisement