(Source: ECI/ABP News/ABP Majha)
Dev on Ghatal Flood: দুর্গাপুর ব্যারেজ ও মাইথন-পাঞ্চেত থেকে ছাড়া হল বাড়তি জল, 'চিন্তার কারণ নেই', জানাল সেচ দফতর
ডিভিসি ব্যারেজ থেকে জল ছাড়ার ফলে ঘাটালের কয়েকটি জায়গায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেন অভিনেতা-তৃণমূল সাংসদ দেব।
মনোজ বন্দ্যোপাধ্যায়, পশ্চিম বর্ধমান: বর্ষার প্রাক্কালেই ফের বন্যার ভ্রূকুটি। পূর্ব বর্ধমান, হুগলি ও হাওড়ার একাংশে দামোদরের নিম্ন তীরবর্তী এলাকায় ফি বছরই ফিরে আসে বন্যার চেনা ছবি। এবারেও বর্ষাতেও কি তিন জেলার লক্ষাধিক মানুষকে ভোগ করতে হবে একইরকম ভোগান্তি?
সেই আশঙ্কার মেঘই যেন জমতে শুরু করল দুর্গাপুর ব্যারেজ ও মাইথন-পাঞ্চেত বাঁধের জল ছাড়া বাড়ানোর জেরে। তিন বাঁধ থেকেই জল ছাড়ার পরিমাণ বেড়েছে এদিন। যদিও এখনই দুশ্চিন্তার কোনও পরিস্থিতি তৈরি হয়নি বলেই আশ্বস্ত করছে রাজ্য সেচ দফতর।
ঝাড়খণ্ড ও পশ্চিম বর্ধমান জেলায় বৃষ্টির ভিত্তিতে বাঁধগুলি থেকে জল ছাড়া হয়ে থাকে। গত দুদিনের ভারী বৃষ্টির জেরে শুক্রবার এখনও পর্যন্ত ৩৬ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে দুর্গাপূর ব্যারেজ থেকে।
সকালের দিকে প্রায় ৩০ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে দুর্গাপুর ব্যারেজ থেকে। গতকাল ২১ হাজার ৫০০ কিউসেক জল ছাড়া হয়েছিল। পাশাপাশি, এদিন ডিভিসি মাইথন বাঁধ থেকে ৮ হাজার ৫০০ ও পাঞ্চেত থেকে ১৪ হাজার কিউসেক জল ছেড়েছে।
দিনের বাকি সময়ে গোটা এলাকা জুড়ে কীরকম বৃষ্টিপাত হয়, তার ওপরই নির্ভর করবে বাঁধগুলি থেকে আরও জল ছাড়া হবে কি না, সেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে। উল্লেখ্য, ৬০ থেকে ৭০ হাজার কিউসেকের বেশি জল ছাড়া হলে সেক্ষেত্রে জারি করা হয় রেড অ্যালার্ট। ১ লক্ষ কিউসের পর্যন্ত জল ছাড়া হয় আপদকালীন পরিস্থিতিতে।
প্রসঙ্গত, মাইথন ও পাঞ্চেত এই দুই বাঁধ ডিভিসি-র অধীনে। আর দুর্গাপুর ব্যারেজ রাজ্য সেচ দফতরের অধীনে। প্রত্যেক বছর বর্ষার পরে বন্যার চেনা ছবি রুখতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ডিভিসি-র সঙ্গে সেচ দফতরের আধিকারিকদের বাড়তি সমন্বয় রেখে কাজ করার বার্তাই দিয়েছেন ইয়াস পরবর্তী সময়ের বৈঠকের মাঝে।
শুক্রবার সেচ দফতরের আধিকারিরক গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, 'আজ এখনও পর্যন্ত ৩৬ হাজার জল ছাড়া হয়েছে দূর্গাপুর ব্যারেজের পক্ষ থেকে। গোটা পরিস্থিতির ওপর কড়া নজর রাখা হচ্ছে।'
ডিভিসি ব্যারেজ থেকে জল ছাড়ার ফলে ঘাটালের কয়েকটি জায়গায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেন অভিনেতা-তৃণমূল সাংসদ দেব।
তিনি লেখেন, ডিভিসি ব্যারেজ থেকে জল ছাড়ার ফলে মনসুকা এবং ঘাটাল পৌরসভার ১, ২, ৫, ৬, ৭, ৮, ৯, ১০, ১১, ১২ নম্বর ওয়ার্ডে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। আমার প্রতিনিধিরা ওখানে রয়েছে এবং আমিও পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছি।
দেব আর লেখেন, প্রশাসনের অক্লান্ত পরিশ্রম ও সহযোগিতার ফলে পরিস্থিতি এই মুহূর্তে আমাদের অনুকূলে আছে। অযথা আতঙ্কিত হবেন না, সকলে সুস্থ ও সুরক্ষিত থাকুন।
এমনিতেই সারা বছর দামোদর নদ কার্যত শুকনো থাকলেও প্রাক-বর্ষার বৃষ্টিতে এমনিতেই ফুলে-ফেঁপে উঠতে শুরু করেছে 'বাংলার দুঃখ'। নদীর তীরবর্তী অঞ্চলগুলির বাসিন্দারা এমনিতেই আতঙ্কে রয়েছেন বেড়ে যাওয়া জলস্তর নিয়ে। তার ওপর ব্যারেজগুলির বাড়তি জল ছাড়া লক্ষাধিক মানুষের ফি বছরের চেনা দূর্গতি ফের ফেরারই আশঙ্কা বাড়িয়ে তুলছে।