কোভিশিল্ড ও স্পুটনিকের আড়ালে কী কম্পোজিশন ব্যবহার? পরীক্ষা করতে ভায়াল পাঠানো হল নাইসেডে
দেবাঞ্জনের বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া ভায়াল সম্পর্কে ইতিমধ্যেই প্রাথমিক রিপোর্ট জমা দিয়েছে রাজ্য ফরেন্সিক দল।
ময়ূখ ঠাকুর চক্রবর্তী, পার্থপ্রতিম ঘোষ ও সমিত সেনগুপ্ত, কলকাতা: ভুয়ো ভ্যাকসিনকাণ্ডে দেবাঞ্জন দেবের বাড়ি থেকে বাজেয়াপ্ত করা ভায়াল পাঠানো হল নাইসেডে। সেখানে পরীক্ষা করে দেখা হবে, উদ্ধার হওয়া ভায়ালে কোভিশিল্ড ও স্পুটনিকের নামে কী ধরনের কম্পোজিশন ব্যবহার করা হয়েছে। দেবাঞ্জনের বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া ভায়াল সম্পর্কে ইতিমধ্যেই প্রাথমিক রিপোর্ট জমা দিয়েছে রাজ্য ফরেন্সিক দল।
ভ্যাকসিনের ভায়ালের ভেতরে আসলে কী? অ্যামিকাসিন? নাকি ন্যাডিকোর্ট ইঞ্জেকশন? ভুয়ো ভ্যাকসিনকাণ্ডে এই প্রশ্ন ঘিরেই দানা বেধেছে রহস্য। আর সেই রহস্য উদঘাটন করতেই এবার ভুয়ো আইএএস দেবাঞ্জন দেবের বাড়ি থেকে, বাজেয়াপ্ত করা ভায়াল পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে নাইসেডে। উদ্ধার হওয়া ভায়ালে কোভিশিল্ড ও স্পুটনিক ভি-এর নামে কী ধরনের কম্পোজিশন ব্যবহার হয়েছে তা জানতেই পাঠানো হল ভায়াল।
শুক্রবারই কলকাতা হাইকোর্টে হলফনামা দিয়ে রাজ্য সরকার জানায়, ভুয়ো আইএএস দেবাঞ্জনের ডেরায় তল্লাশিতে ২ ধরনের ভায়াল উদ্ধার হয়। সবুজ ঢাকনা দেওয়া, ভায়ালের গায়ে লাগানো ছিল কোভিশিল্ড স্টিকার। তা তুলতেই দেখা যায়, তার নীচে রয়েছে অ্যামিকাসিনের স্টিকার।পাশাপাশি লাল ঢাকনা দেওয়া আরেকটি ভায়ালের গায়ে স্পুটনিক ভি-এর স্টিকার লাগানো ছিল। তার নীচে ছিল ট্রায়ামসিনোলোন অ্যাসিটোনাইড বা ন্যাডিকোর্ট ইঞ্জেকশনের স্টিকার।
ভুয়ো ভ্যাকসিনকাণ্ডে কলকাতা হাইকোর্টে ৩টি জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়। তারই প্রেক্ষিতে শুক্রবার হলফনামা জমা দেয় রাজ্য সরকার। হলফনামায় রাজ্য জানিয়েছে, ভায়ালগুলিতে কী ধরনের তরল ছিল, তা ঘটনাস্থলে পরীক্ষা করা সম্ভব হয়নি। ফরেন্সিক পরীক্ষার রিপোর্ট এখনও আসেনি বলে জানিয়েছে কলকাতা পুলিশ। তাহলে ভ্যাকসিনের নামে কী দেওয়া হয়েছিল গ্রাহকদের? পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াই বা কী? চিকিৎসক-রা জানাচ্ছেন, অ্যামিকাসিন, অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল ইঞ্জেকশন। স্টেরয়েড হিসেবে ব্যবহার করা হয় ন্যাডিকোর্ট ইঞ্জেশন। সুস্থ মানুষকে যদি এই ধরনের ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়, তাহলে মারাত্মক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে।
চিকিৎসক দীপ্তেন্দ্র সরকারের জানাচ্ছেন, শরীরে ফাঙ্গাল ইনফেকশন হতে পারে। স্টেরয়েড শরীরে গেলে যাদের হার্টের প্রব্লেম আছে, কোমর্বিডিটি আছে, আলসার থাকলে ব্লিডিং হতে পারে। কলকাতা পুরসভার পুর-প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান তথা রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, “একটা মেডিকেল টিম তৈরি করে যারা ভুগছেন পেয়েছে তাদের পরীক্ষা করা হয়েছে। সেই মেডিকেল বোর্ডের নির্দেশে এদের ভ্যাকসিনেশনের ব্যবস্থা করা হবে। বোতলে কি ছিল সেটা যেহেতু বিচারাধীন বিষয় সেই বিষয়ে কিছু বলা যাবে না।’’