Teachers Transfer Agitation: কোন যুক্তিতে কয়েকশো কিলোমিটার দূরে বদলি ? হাইকোর্টের দ্বারস্থ ৫ শিক্ষিকা
কোন যুক্তিতে কয়েকশো কিলোমিটার দূরে বদলি করা হয়েছে ? এই প্রশ্ন তুলে আত্মহত্যার চেষ্টা করা ৫ শিক্ষিকা এবার হাইকোর্টের দ্বারস্থ।
কলকাতা : আত্মহত্যার চেষ্টা করা পাঁচ শিক্ষিকার বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করেছে পুলিশ। এবার পাল্টা আইনের দ্বারস্থ শিক্ষিকারা। কোন যুক্তিতে কয়েকশো কিলোমিটার দূরে বদলি করা হয়েছে ? এই প্রশ্ন তুলে আত্মহত্যার চেষ্টা করা ৫ শিক্ষিকা এবার হাইকোর্টের দ্বারস্থ। বদলির সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে আরও কয়েকজন মামলা করেছেন বলে খবর। আগামী সপ্তাহেই এনিয়ে হাইকোর্টে মামলার শুনানির সম্ভাবনা রয়েছে।
বেতন বৈষম্য, বদলি-সহ একাধিক অভিযোগে দীর্ঘদিন ধরেই আন্দোলন চালিয়ে আসছে পশ্চিমবঙ্গ শিক্ষক ঐক্য মুক্ত মঞ্চ। কখনও নবান্নে, কখনও আবার এক্কেবারে শিক্ষামন্ত্রীর পাড়ায়। এই আন্দোলনের জেরে কয়েকজনকে গ্রেফতারও করা হয়েছিল। কিন্তু অভিযোগ, ছাড়া পাওয়ার পর আন্দোলনকারী ১৭ জন শিক্ষক-শিক্ষিকাকে বদলি করা হয়েছে। যাঁদের মধ্যে ৫০ ঊর্ধ্ব পাঁচজন শিক্ষিকাকে উত্তরবঙ্গে বদলি করা হয়েছে বলে অভিযোগ। প্রতিবাদে গতকাল বিকাশভবনের সামনে জমায়েত হন পশ্চিমবঙ্গ শিক্ষক ঐক্য মুক্ত মঞ্চের সদস্যরা। পুলিশ আটকালে ধস্তাধস্তি বেধে যায় দু-পক্ষের মধ্যে। এরপর আচমকাই শিশি থেকে কিছু বার খেতে শুরু করেন একের পর এক শিক্ষিকা।
অন্যায়ভাবে বদলি করা হয়েছে অভিযোগ তুলে বিষ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন তাঁরা। তাঁদের দাবি, দিনের পর দিন আন্দোলন করেও লাভ হয়নি। কাটেনি বেতন বৈষম্য। মেটেনি বদলির সমস্যা। এই অভিযোগ তুলে একেবারে পুলিশের সামনেই বিষ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন তাঁরা। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার হইচই পড়ে যায় বিকাশভবনের সামনে। আন্দোলনের পর বিকাশভবনে যান শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, যা ঘটেছে তা দুর্ভাগ্যজনক। তবে দেখতে হবে প্ররোচনা কারা দিলেন। বদলির জন্য হলে এই সমস্যা চিরদিনের। দূরে পোস্টিং এগুলি সব জায়গায় আছেন। বরং মমতা চাইছেন, যাতে কাছাকাছি পোস্টিং হয়।
ফেসবুক পোস্টে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সুবিধার্থে রাজ্য সরকারের নেওয়া একাধিক পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। একইসঙ্গে আন্দোলনরত শিক্ষিক-শিক্ষিকাদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন।
অন্যদিকে, সরকারকে নিশানা করেছে বিরোধীরা। সিপিএম কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলেন, নির্বোধের মতো কথা বলা বন্ধ করুক, প্ররোচনা দিতে হবে এটা কথা নয়। বিষ খাওয়াকে সমর্থন করি না। চাকরি প্রার্থীদের কথা শোনার মতো কেউ নেই। মন্ত্রী দেখা করবেন, সরকার কথা বলবে না। সরকার প্ররোচনা দিচ্ছে।
রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, এ রাজ্যে সব থেকে কম বেতন পান শিক্ষকরা। দীর্ঘদিন ধরে ডিএ বাড়ানো হয়নি। প্রতিবাদে তাঁরা আন্দোলনে নেমেছেন। এ রাজ্যে সরকারের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুললেই তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করা হচ্ছে।
এদিকে, বদলির প্রতিবাদে পুলিশের সামনেই বিষ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করা পাঁচ শিক্ষিকার বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করেছে পুলিশ। একাধিক জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু বিধাননগর উত্তর থানায়। পুলিশের কাজে বাধা, আত্মহত্যার চেষ্টা, সরকারি নির্দেশ অমান্য সহ একাধিক ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।