(Source: ECI/ABP News/ABP Majha)
কলকাতায় এটিএম প্রতারণার তদন্তে ভিন রাজ্যে পাড়ি পুলিশের ৩ দলের
ইতিমধ্যে এটিএম কাণ্ডে পুলিশের হাতে এসেছে সিসিটিভি ফুটেজ
কলকাতা: কলকাতায় এটিএম প্রতারণার তদন্তে ভিন রাজ্যে গেল পুলিশের ৩টি টিম। সূত্রের খবর, এর আগে হরিয়ানার ফরিদাবাদে একই ধরনের প্রতারণার অভিযোগে যাকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তাকে জেরার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে এটিএম কাণ্ডে পুলিশের হাতে এসেছে সিসিটিভি ফুটেজ। তার থেকে সন্দেহভাজনদের চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে। প্রতারণার জন্য এটিএমে কী ধরনের ডিভাইস ব্যবহার করেছিল অভিযুক্তরা, তা বোঝার চেষ্টা করছেন ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরা। অভিযুক্তরা ভিন রাজ্যের বাসিন্দা বলে প্রাথমিকভাবে সন্দেহ পুলিশের। তার যে সব হোটেল বা গেস্ট হাউসে থাকতে পারে, সেখানকার সিসিটিভি ফুটেজও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর।
কলকাতায় ম্যান ইন দ্য মিডল অ্যাটাক কৌশলে এটিএম জালিয়াতির নেপথ্যে কি ফরিদাবাদ গ্যাং? আগেই এই সন্দেহ দানা বাধছে। গোয়েন্দাদের অনুমান, টেকস্যাভি জালিয়াতরা ইতিমধ্যেই ভিনরাজ্যে পালিয়েছে। মঙ্গলবার নিউ মার্কেট এলাকার একটি এটিএম পরীক্ষা করে ফরেন্সিক দল। প্রতারণার জাল ছিড়তে সাহায্য নেওয়া হচ্ছে উন্নততর প্রযুক্তিও।
ডেবিট কার্ডের পিন নম্বর হাতিয়ে জামতাড়া গ্যাংয়ের জালিয়াতি। এটিএমে স্কিমার বসিয়ে রুমানিয়ান ফ্রডস্টারদের দৌরাত্ম্য।এবার এটিএমে ম্যান ইন দ্য মিডল অ্যাটাকের পিছনে ফরিদাবাদ গ্যাং?প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে কলকাতার একাধিক এটিএম থেকে কোটি কোটি টাকা লোপাট! গোয়েন্দা মহল যাকে, হাইলি সফিস্টিকেটেড অ্যাটাক বলে চিহ্নিত করছেন। আর সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে এবার ভিন রাজ্যে পাড়ি দিল পুলিশের ৩টি দল।
উল্লেখ্য, এটিএম থেকে টাকা লুঠ হয়েছে। কিন্তু এটিএমের গায়ে আঁচড় পর্যন্ত নেই। তাই ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদের পাশাপাশি এটিএম রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থার সহায়তা নিচ্ছে পুলিশ। তদন্তকারীরা নিশ্চিত, জালিয়াতরা প্রযুক্তিবিদ্যায় তুখোড়। কারণ, অত্যন্ত উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করেই এটিএমে ব্যবহৃত সফটওয়্যারকে অকেজো করে টাকা লুঠ করা হয়েছে।তদন্তের পরিভাষায় যাকে বলা হচ্ছে ম্যান ইন দ্য মিডল অ্যাটাক পদ্ধতি।
গোয়েন্দা সূত্রের খবর, এটিএমের লোকাল এরিয়া নেটওয়ার্ক বা LAN কেবিলের সঙ্গে বিশেষ ডিভাইস যা যন্ত্র বসিয়ে দিচ্ছে প্রতারকরা।এরপর মাস্টার কি দিয়ে এটিএমের ডিসপ্লে-র ওপরের হুড খুলে লোপাট করা হচ্ছে টাকা। ডিভাইস ইনস্টলের ফলে, ব্যাঙ্কের বিশেষ সফটঅয়্যার অকেজো হয়ে যাচ্ছে। ফলে এটিএম থেকে টাকা লোপাট করলেও ব্যাঙ্কের কাছে কোনও তথ্য পৌঁছচ্ছে না।
করোনা আবহে কড়ি বিধি জারি হয়েছে রাজ্যে। পুলিশ সূত্রের খবর, কাশীপুর, যাদবপুর, নিউমার্কেট, বেহালা, বেনিয়াপুকুর, ফুলবাগান ও বউবাজারের, ১০টি এটিএম থেকে অন্তত ২ কোটি টাকা লুঠ হয়েছে! তদন্তকারীদের দাবি, এই জালিয়াতিতে গ্রাহকের অ্যাকাউন্টে ক্ষতি হচ্ছে না। ব্যাঙ্কেরও না। কিন্তু থার্ড পার্টি - যারা ব্যাঙ্কের এটিএমে টাকা ভরার দায়িত্বে থাকে, ক্ষতি হচ্ছে তাদের। গোয়েন্দা সূত্রের দাবি, ফরিদাবাদে এটিএম লুঠের ঘটনায় দুষ্কৃতীদের বেশ কয়েকজন অধরা। তারাই কলকাতায় অপরাধের জাল বিছিয়ে ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কয়েকজন মুখের সঙ্গে মিলও পাওয়া গেছে বলে পুলিশ সূত্রের খবর। অপরাধীরা কোন হোটেল বা গেস্ট হাউসে উঠেছিল, তাও সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষার মাধ্যমে চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে।