Adani Group Crisis: আদানি গোষ্ঠীকে নিয়ে সংসদে চাপের মুখে কেন্দ্র, বিরোধীদের বৈঠকে গেল না তৃণমূল, উঠছে প্রশ্ন
TMC Skips Congress Meeting: কার্যত উল্কার গতিতে উত্থান, দেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সুসম্পর্ক থাকা গৌতম আদানির ব্যবসায়িক কাজকর্ম নিয়ে বর্তমানে হাজার প্রশ্ন উঠছে।
বিজেন্দ্র সিংহ ও কৃষ্ণেন্দু অধিকারী: আদানি গোষ্ঠীর (Adani Group) বিরুদ্ধে কারচুপি এবং জালিয়াতির অভিযোগে উত্তাল দেশ (Adani Group Crisis)। সেই আবহে সংসদে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে চাপ বাড়াচ্ছে বিরোধীরাও। সেই নিয়ে কংগ্রেসের (Congress) নেতৃত্বে বিরোধীদের রণকৌশল বৈঠকে বৃহস্পতিবার উপস্থিত ছিল তৃণমূলও (TMC)। কিন্তু শুক্রবার সেই বৈঠকে অনুপস্থিত থাকলেন বাংলার শাসকদলের প্রতিনিধিরা, যা নিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতোর শুরু হয়েছে।
শুক্রবার বৈঠকে অনুপস্থিত থাকলেন বাংলার শাসকদলের প্রতিনিধিরা
কার্যত উল্কার গতিতে উত্থান, দেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সুসম্পর্ক, একরকম রাতারাতি বিশ্বের ধনীতম শিল্পপতির তালিকায় প্রথম তিনে উঠে আসা গৌতম আদানির ব্যবসায়িক কাজকর্ম নিয়ে বর্তমানে হাজার প্রশ্ন উঠছে। সংশয়ে শেয়ার বাজারও। ভারতীয় জীবন বিমা, স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার বিপুল টাকা তাতে জড়িয়ে যাওয়ায়, কোটি কোটি মানুষের কষ্টার্জিত টাকা পয়সা ফিরে পাওয়ার সম্ভাবনা ঘিরে দেখা দিয়েছে সংশয়।
সেই নিয়ে শুক্রবার উত্তাল হয়েছিল সংসদের উভভয় কক্ষই। নরেন্দ্র মোদির ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত আদানির সংস্থার বিরুদ্ধে মার্কিন সংস্থা হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ শেয়ারের দাম নিয়ে কারচুপি, কর নিয়ে জালিয়াতি সংক্রান্ত চাঞ্চল্য়কর রিপোর্ট সামনে এনেছে। তাতে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক অবস্থান নিতে শুরু করেছে কংগ্রেস-বিরোধী দলগুলি। স্বভাবতই অস্বস্তি বেড়েছে কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকারের।
আরও পড়ুন: LIC Exposure to Adani Group: ‘জিন্দেগী কে সাথ ভি, জিন্দেগী কে বাদ ভি’, শ্রুতিকথা হয়ে যাবে না তো! সর্বস্ব হারানোর আশঙ্কায় কোটি কোটি মানুষ
সেই আবহে তৃণমূলের অবস্থানের দিকেও নজর গিয়ে পড়েছে সকলের। কারণ দিন কয়েক আগেই প্রশাসনিক সভা থেকে বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেছিলেন মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়। সরাসরি কারও নাম না করলেও, দেশের মানুষের টাকা ফেরতের সম্ভাবনা নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি। শেয়ার বাজারের পতনে সরকার পড়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল, এমন দাবিও করেন প্রকাশ্য সভায়।
তাই আদানি গোষ্ঠীকে নিয়ে সংসদে তৃণমূল অন্য বিরোধী দলের মতোই কড়া অবস্থান নেবে বলে মনে করা হচ্ছিল। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সেই সমীকরণ চোখেও পড়ে। মোদির সরকারের উপর চাপ বাড়াতে বৈঠক ডাকেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে। তাতে যোগ দেয় তৃণমূলও। কিন্তু শুক্রবার খড়্গে ফের বৈঠক ডাকলে ১৬টি বিরোধী দল উপস্থিত থাকলেও, তৃণমূল থাকেনি।
তৃণমূলের এই অবস্থান নিয়েই জল্পনা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে
তৃণমূলের এই অবস্থান নিয়েই জল্পনা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে। বাংলায় তাজপুর বন্দরের জন্যই আদানিদের নিয়ে তৃণমূলের অবস্থান স্পষ্ট করতে চাইছে না বলে মত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশ। যদিও দলের সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, বৃহস্পতিবারের বৈঠকেই কৌশল ঠিক হয়ে গিয়েছিল। একই অবস্থানে রয়েছেন তাঁরা। লোকসভায় বিরোধিতা করছেন বাকি বিরোধীের সঙ্গে মিলে। কিন্তু তার সঙ্গেই কংগ্রেস ডাকা প্রত্যেক বৈঠকে যাওয়ার প্রয়োজন নেই বলেও সংযোগ করেন সুদীপ।
এ নিয়ে যদিও তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে কংগ্রেস। লোকসভায় দলের নেতা অধীররঞ্জন চৌধুরী বলেন, "ওঁরা মনে করেছেিলেন, আসা জরুরি ছিল, তাই এসেছিলেন। আবার মনে হয়েছে, জরুরি নয়, তাই আসেননি। দিদি হয়ত উপর থেকে বকাবকি করেছেন। মনেপ্রাণে কিন্তু সংসদে ওঁরা আমাদের বক্তব্য সমর্থন করেছেন। জেপিসি-ও চেয়েছেন। দিদি কখনও হ্যাঁ বলেন, কখনও না। এক এক সময় যাঁরা এক এক কথা বলেন, তাঁদের রাজনৈতিক দ্বিচারী বলা হয়। "
সিপিএম-এর কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলেন, "আদানির গডফাদার মোদি। মোদি আবার আদানির চৌকিদার। নতুন কথা নয়, সকলে জানেন। তাই দেশের স্বার্থেই আলোচনা প্রয়োজন। ১৬টি বিরোধী দল গেল, অথচ তৃণমূল অংশ নিল না! ওরা যে নিজেদের বিরোধী বলে! এতেই স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে, আসলে ওরা বিরোধী নয়। মোদির যেন কোনও বিড়ম্বনা না হয়, তাই বিরোধী শক্তিকে ভাগ করে দেয়। "