Cough Syrup Racket: কনস্টেবলের চাকরি করে প্রাসাদোপম বাড়ি! কয়েক হাজার কোটির কাফ সিরাপ দুর্নীতি উত্তরপ্রদেশে? তপ্ত রাজনীতি
Uttar Pradesh Cough Syrup Scam: বৃহস্পতিবার এ নিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করেন অখিলেশ।

নয়াদিল্লি: ভেজাল কাফ সিরাপে মধ্যপ্রদেশে এবং রাজস্থান থেকে শিশুমৃত্য়ুর ঘটনা সামনে এসেছে। এবার উত্তরপ্রদেশে কয়েক হাজার কোটি টাকার কাফ সিরাপ দুর্নীতির অভিযোগ। ইতিমধ্যেই ৩.৫ লক্ষ বোতল কাফ সিরাপ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। গ্রেফতারও করা হয়েছে অনেককে। কিন্তু দুর্নীতির বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে বলে রাজ্যের বিজেপি সরকারের দিকে আঙুল তুলেছেন সমাজবাদী পার্টির নেতা অখিলেশ যাদব। কোডিন বেসড (Codeine-based) কাফ সিরাপ নিয়ে উত্তরপ্রদেশে কয়েক হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে বলে দাবি করেছেন তিনি। (Uttar Pradesh Cough Syrup Scam)
বৃহস্পতিবার এ নিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করেন অখিলেশ। তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নির্বাচনী কেন্দ্র বারাণসী থেকেই কাফ সিরাপ দুর্নীতির সূচনা। গোটা দেশে তো বটেই, বিদেশেও জাল ছড়িয়ে রয়েছে এই দুর্নীতির। অখিলেশের দাবি, প্রথমে কয়েক কোটি টাকার চক্র বলেই মনে করা হয়েছিল। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে, কয়েক হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে কাফ সিরাপ নিয়ে। বেশ কিছু সংযোগও উঠে এসেছে। উত্তরপ্রদেশ থেকেই গোটা দেশে কাফ সিরাপ চক্রটি চালিত হচ্ছিল। (Cough Syrup Racket)
উত্তরপ্রদেশ থেকে কোডিন বেসড কাফ সিরাপ বাংলাদেশ এবং নেপালে পাচার হচ্ছে বলে কয়েক দিন আগেই জানা যায়। বিশেষ তদন্তকারী দল SIT পর পর ৩২ জনকে গ্রেফতার করে। সেন্ট্রাল ব্যুরো অফ নার্কোটিকসই এই দুর্নীতির পর্দাফাঁস করে। জানায়, নিয়ন্ত্রক সংস্থার নজর এড়িয়ে বিপুল পরিমাণ কাফ সিরাপ মজুত করছিল অপরাধীরা। বেআইনি ভাবে সেই কাফ সিরাপ পাচার করা হচ্ছিল পড়শি দেশগুলিতে। এই দুর্নীতিতে কারা যুক্ত, কাদের মধ্যে লেনদেন হয়েছে, এই মুহূর্তে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পাশাপাশি, সমান্তরাল তদন্ত চালাচ্ছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটও।
ये किसी कारोबारी की कोठी नहीं, बल्कि कोडीन सिरप कांड में आरोपी “कांस्टेबल आलोक सिंह” की कोठी है।
— Luffy Maurya (@luffyspeaking) December 12, 2025
शहर? लखनऊ 🙏🏻 pic.twitter.com/sRnL8Z7hlH
Food And Drug Safety Administration-এর আধিকারিকরা জানিয়েছেন, কোডিন বেসড কাফ সিরাপ H তফসিলের অন্তর্ভুক্ত। প্রেসক্রিপশনে লেখা থাকলে তবেই বিক্রি করা যায়। কিন্তু নেশার জন্য এর অপব্যবহারও হয় দেদার। উত্তরপ্রদেশের ২৮টি জেলায় ১২৮টি সংস্থার বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হয়েছে এই ঘটনায়। আর সেই নিয়েই সরব হয়েছেন অখিলেশ। তাঁর বক্তব্য, “হাইপ্রোফাইল মামলা হলে তড়িঘড়ি বুলডোজার নামানো হয়। এখন তো দেখে মনে হচ্ছে, বুলডোজারের চালক নেমে পালিয়েছেন, চাবিও হারিয়ে গিয়েছে।”
কাফ সিরাপ দুর্নীতির তবন্তপ্রক্রিয়া নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অখিলেশ। তিনি জানিয়েছেন, যে STF গঠন করা হয়েছে, তাতে একটি জেলার লোকের সংখ্যা বেশি। তদন্তকারীদের উপর চাপসৃষ্টি করা হচ্ছে। বিধানসভার আসন্ন অধিবেশনেও বিষয়টি নিয়ে তাঁরা সরব হবেন বলে জানিয়েছেন অখিলেশ। রাজ্য সরকার বিষয়টি থেকে সকলের নজর ঘোরাতে চাইছে, দুর্নীতি ধামাচাপা দিতে চাইছে বলেও অভিযোগ তোলেন তিনি।
এখনও পর্যন্ত তদন্তে যে তথ্য উঠে এসেছে, তা হল, উত্তরপ্রদেশের কিছু দোকানে অতিরিক্ত কাফ সিরাপ সরবরাহ করা হচ্ছে। কিছু সংস্থা এবং কিছু ব্যক্তি কোডিন ফসফেট ফর্মুলা অন্য কাজে ব্যবহার করছেন। সংগঠিত ভাবে এই অপরাধ ঘটানো হচ্ছে। উত্তরপ্রদেশের স্বরাষ্ট্র বিভাগের প্রধান সচিব সঞ্জয় প্রসাদ জানান, রাজ্য সরকার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে দেখছে। তবে রাজ্যে এখনও পর্যন্ত কোডিন সিরাপ পান করে কারও মৃত্যুর ঘটনা সামনে আসেনি বলে জানিয়েছেন তিনি। এই কাফ সিরাপ দুর্নীতির মূল চাঁই হিসেবে নাম উঠে এসেছে শুভম জয়সওয়ালের। কিন্তু এখনও তাঁর নাগাল পাওয়া যায়নি। তিনি বিদেশে পালিয়ে গিয়ে থাকতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে। তবে শুভমের গ্রেফতারিতে আপাতত অন্তর্বর্তীকালীন স্থগিতাদেশদিয়েছে এলাহাবাদ হাইকোর্ট। শুভমের বাবা ভোলাপ্রসাদকে গ্রেফতার করা হয়েছে কলকাতা থেকে।
তদন্তে অলোক প্রতাপ সিংহ নামের পুলিশ কনস্টেবলের নামও উঠে এসেছে। তাঁর বাড়িতে হানা দেন ED-র আধিকারিকরা। আর সেই বাড়ি দেখে রীতিমতো চমকে ওঠেন সকলে। কনস্টেবলের চাকরিতে যা বেতন, তাতে ওই প্রাসাদোপম, বিলাসবহুল বাড়ি তৈরি করা সম্ভব কি না, ওঠে প্রশ্ন। লখনউ-সুলতানপুর হাইওয়ের কাছে ওই বাড়ি তৈরিতেই কোটি কোটি টাকা খরচ হয়েছে বলে মনে করছে ED. অলোককে গ্রেফতার করা হয়েছে। লখনউয়ের জেলে বন্দি তিনি। চাকরি থেকেও বরখাস্ত করা হয়েছে তাঁকে। তবে এই ঘটনায় আরও বড় মাথা রয়েছে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা।






















