এক্সপ্লোর
US-Israel Relations: ক্লিন্টন-ওবামা-ট্রাম্প, মতবিরোধ সত্ত্বেও নেতানিয়াহুর পাশেই, কেন ইজরায়েলকে নিঃশর্ত সমর্থন আমেরিকার?
Benjamin Netanyahu: বোঝাপড়ার দীর্ঘ ইতিহাস। তাই বরাবর ইজরায়েলের পাশে আমেরিকা। -ফাইল চিত্র।
-ফাইল চিত্র।
1/12

বছরের গোড়ার দিকেই তাঁদের মতভেদের খবর মিলেছিল। সপ্তাহখানেক আগে পর্যন্তও দূরত্ব চোখে পড়ছিল বেশ। কিন্তু আমেরিকায় হামলা চালিয়ে ফের ইজরায়েলের পাশে থাকারই বার্তা দিলেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেই নিয়ে দেশের অন্দরেই সমালোচনার মুখে পড়তে হচ্ছে তাঁকে। কিন্তু প্রশ্ন এখানেই। এত সমালোচনা, মতভেদ সত্ত্বেও কেন নিঃশর্ত ভাবে ইজরায়েলকে সমর্থন করে চলেছে আমেরিকা? উত্তর মোটেই সহজ নয়।
2/12

১৯৯৬ সালে প্রথম বার ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন নেতানিয়াহু। আর তার এক মাস পরই আমেরিকার তদানীন্তন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিন্টনের সঙ্গে মতবিরোধ ঘটে তাঁর। পরিস্থিতি এত তেতে ওঠে যে সহযোগীদের কাছে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন ক্লিন্টন, আসল সুপার পাওয়ার কে, আমেরিকা না ইজরায়েল, এই প্রশ্নও ছুড়ে দেন।
3/12

এর পর, ১৯৯৯ সালের নির্বাচনে পরাজিত হন নেতানিয়াহু। এর প্রায় একদশক পর, ২০০৯ সালে ফের ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী পদে আসীন হন তিনি। সেই সময় আমেরিকার প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। ওবামাও ক্লিন্টনের মতো ডোমেক্র্যাট। সেই সময় ওবামা এবং নেতানিয়াহুর মতপার্থক্য প্রকট হয়ে ওঠে। অধিকৃত প্যালেস্তাইনে ইজরায়েলের বসতি গড়ার বিরোধী ছিলেন ওবামা।
4/12

পরমাণু শক্তি সংবরণ নিয়ে সেই সময় ইরানের সঙ্গে সমঝোতার চেষ্টা চালাচ্ছিলেন ওবামা। ইজরায়েলের দাবি ছিল, পরমাণু বোমা তৈরি করার জন্যই গবেষণা শুরু করেছে ইরান। যদিও তেহরানের দাবি ছিল, শান্তিপূর্ণ গবেষণাই তাদের লক্ষ্য। ওবামা নিজের লক্ষ্যে প্রায় পৌঁছেই গিয়েছিলেন। কিন্তু সেই সময়, ২০১৫ সালে নেতানিয়াহু রিপাবলিকানদের আমন্ত্রণে আমেরিকার কংগ্রেসে ভাষণ দিয়ে ওই সমঝোতার বিরোধিতা করেন। হোয়াইট হাউসকে কিছু জানানো পর্যন্ত হয়নি বলে জানা যায়।
5/12

সেই সময় নেতানিয়াহুর বক্তব্য ছিল, “এই বোঝাপড়া ইরানকে বোমা তৈরিতে বাধা দেয় না, বরং রাস্তা করে দেয়”। নেতানিয়াহুর উপর ক্ষুব্ধ হলেও, তার পরের বছরই ইজরায়েলের হাতে সর্বোচ্চ সামরিক বরাদ্দ তুলে দেয় আমেরিকা, ১০ বছরের জন্য প্রায় ৩৮ বিলিয়ন ডলার।
6/12

একই ভাবে, এ বছর জানুয়ারি মাসে ট্রাম্প আমেরিকার মসনদে ফেরার পর, তাঁর সঙ্গেও মতবিরোধ দেখা দেয় নেতানিয়াহুর। মাসখানেক আগেও দু’জনে মধ্যে বনিবনা না হওয়ার খবর আসছিল লাগাতার। বিশেষ করে সিরিয়ার উপর থেকে ট্রাম্প নিষেধাজ্ঞা তুলে নিলে, নেতানিয়াহু বিষয়টি ভাল ভাবে নেননি। ইরানের সঙ্গে ট্রাম্প সরকারের পরমাণু সমঝোতাতেও আপত্তি জানাতে থাকেন নেতানিয়াহু।
7/12

এমনকি ইজরায়েল যখন প্রথম ইরানে হামলা চালায়, সেই সময়ও ট্রাম্প সরকার বিষয়টি থেকে দূরত্ব বজায় রাখছিল। এই হামলার সঙ্গে তাদের কোনও সম্পর্ক নেই বলেও জানান ট্রাম্প। কিন্তু হঠাৎ কী এমন হল তিনি ইরানে হামলার সিদ্ধান্ত নিলেন, কেন নেতানিয়াহুর পাশে দাঁড়াচ্ছেন, নেপথ্য কারণ হিসেবে উঠে আসছে একাধিক তত্ত্ব।
8/12

আমেরিকা এবং ইজরায়েলের এই পারস্পরিক বোঝাপড়ার ইতিহাস দীর্ঘ। ১৯৪৮ সালে ইজরায়েলকে রাষ্ট্র হিসেবে প্রথম স্বীকৃতি দেন আমেরিকারই প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট হ্যারি ট্রুম্যান। সেই সময় ট্রুম্যান ব্যক্তিগত সম্পর্ককে এগিয়ে রেখেছিলেন বলে শোনা যায়। ট্রুম্যানের বিজনেস পার্টনার এডওয়ার্ড জেকবসন ছিলেন ইহুদি। ইজরায়েলকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিতে তিনিই ট্রুম্যানকে রাজি করান বলে শোনা যায়।
9/12

আমেরিকা এবং ইজরায়েলের মধ্যে এই বোঝাপড়ার কৌশলগত কারণও রয়েছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর যে ঠান্ডা যুদ্ধের পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়, তাতে রাশিয়াকে চাপে রাখতে পশ্চিম এশিয়ার সমর্থন প্রয়োজন ছিল আমেরিকার। কারণ পশ্চিম এশিয়াই ছিল তেলের ঘাঁটি। তাই সুয়েজ খালের উপর কর্তৃত্ব স্থাপন প্রয়োজন ছিল। ইউরোপীয় শক্তিকে ছাপিয়ে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সুপার পাওয়ার হয়ে ওঠার দিকে এগোচ্ছিল আমেরিকা।
10/12

আর সেই লক্ষ্যে পৌঁছতে ইজরায়েল ভরসা হয়ে ওঠে আমেরিকার। বিশেষ করে ১৯৬৭ সালের যুদ্ধে ইজরায়েল যখন মিশর, সিরিয়া এবং জর্ডানকে পরাজিত করে, অবশিষ্ট প্যালেস্তাইন এবং সিরিয়া ও মিশরের বেশ কিছু অংশ দখল করে, সেই সময় সামরিক ভাবে শক্তিশালী ইজরায়েলকে সাহায্য প্রদানকারী দেশ হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করে আমেরিকা।
11/12

এর পর ১৯৭৩ সালে ইজরায়েল যখন মিশর এবং সিরিয়ার সেনাবাহিনীকে পরাস্ত করে, সেই সময় ওই দুই দেশকে সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রভাব থেকে মুক্ত করতে বোড়ের ভূমিকা পালন করে ইজরায়েল। আমেরিকার মধ্যস্থতায় ইজরায়েল এবং মিশরের মধ্যে শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরিত হয় ১৯৭৯ সালে। এমনিতেই ইহুদিদের প্রতি সমব্যথী আমেরিকার সাধারণ নাগরিক। ১৯৭২ সালে মিউনিখে প্যালেস্তিনীয় সশস্ত্র সংগঠন হামলা চালালে, ১১ জন ইজরায়েলি অলিম্পিক খেলোয়াড় প্রাণ হারান। তার পর সেই সমবেদনা আরও বেড়ে যায়।
12/12

ইজরায়েলের প্রতি আমেরিকার এই সমর্থনের নেপথ্য়ে রয়েছে ধর্মীয় কার্যকারণও। আমেরিকার ধর্মপ্রাণ শ্বেতাঙ্গ খ্রিস্টান, যাঁরা প্রোটেস্ট্যান্ট এবং বাইবেলকে চূড়ান্ত বলে মনে করেন, তাঁরা ওল্ড টেস্টামেন্টের প্রত্যেকটি কথা অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলেন। বিশ্বাস করেন, ইজরায়েল রাষ্ট্রের উপর একমাত্র অধিকার ইহুদিদের। ইহুদিদের তাঁরা অ্যাব্রাহামের বংশধর বলে মনে করেন এবং তাঁদের ‘গডস চোজেন পিপল’ বলে মনে করেন।
Published at : 22 Jun 2025 09:48 PM (IST)
আরও দেখুন
সেরা শিরোনাম
ব্যবসা-বাণিজ্যের
ব্যবসা-বাণিজ্যের
খুঁটিনাটি
ক্রিকেট






















