একটা ছোট্ট গ্রামের মহিলাদের এই সাহসিকতা বায়ুসেনার মন কেড়ে নেয়। গ্রামবাসীদের ধন্যবাদ জানিয়ে বায়ুসেনার পক্ষ থেকে চিঠিও পাঠানো হয়েছিল। কেন্দ্রীয় সরকারের সাহায্যে গ্রামের প্রবেশ পথে ওই বীরাঙ্গনাদের স্মরণে একটি স্মারকও তৈরি করা হয়। ওই মহিলাদের মধ্যে এখন মাত্র দুইজন জীবিত। তাঁরা এখন বিদেশে থাকেন। কিন্তু তাঁদের বীরত্বের কাহিনী চিরস্মরণীয় হয়ে রয়েছে।
2/5
কিন্তু এই কাজের জন্য যখন লোক পাওয়া যাচ্ছিল না, তখন এগিয়ে এলেন মাধাপুর গ্রামের সাহসিনীরা। নিজেদের কাঁধে তাঁরা এই দায়িত্ব তুলে নেন। যুদ্ধের মতো কঠিন পরিস্থিতিতেই ওই মহিলারা ঘরের বাইরে বেরিয়ে আসেন এবং রানওয়ের মেরামতির কাজ শুরু করে দেন। প্রথমে তো ৩০-৪০ জন মহিলা কাজ শুরু করেছিলেন। কিন্তু তাঁদের সাহসিকতায় অনুপ্রাণিত হয়ে ৩০০ জন মহিলা এগিয়ে আসেন। মাথার ওপর যখনই পাকিস্তানি বিমান আসার সাইরেন বেজে উঠত ওই মহিলারা তখন আশেপাশের গাছ ও ঝোপঝাড়ের আড়ালে লুকিয়ে পড়তেন। দেখতে দেখতে ৭২ ঘন্টার মধ্যেই তারা ভুজের নয়া রানওয়ে তৈরি করে দেন।
3/5
পাকিস্তানের যুদ্ধবিমান ১৯৭১-এর ৩ ডিসেম্বর এবং ১৭ ডিসেম্বর এই এলাকায় ৯২ টি বোমা এবং ২২ রকেট ছোঁড়ে। পাকিস্তানের এই বোমাবর্ষণের ফলে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এলাকার লোকজন পালিয়ে যান। ভুজের পাশে মাধাপুর গ্রামের লোকজন ঘরবাড়ি নির্মাণ ও মেরামতির কাজ করতেন। কিন্তু যুদ্ধের সময় কেউ জীবনের ঝুঁকি নিতে চাননি। ফলে বিমানবন্দর মেরমতির জন্য লোক মিলছিল না। রানওয়ের মাঝে ১২ ফুট গর্ত হয়ে গিয়েছিল। ফলে এখান থেকে ভারতের বায়ুসেনার বিমানের উড়ান অসম্ভব হয়ে পড়েছিল। কিন্তু বায়ুসেনার সেই সময় একটা স্ট্যান্ডবাই বিমানবন্দরের প্রয়োজন ছিল। ফলে ভুজের বিমানবন্দর মেরামত করা একান্তই আবশ্যিক হয়ে উঠেছিল।
4/5
সীমান্ত ঘেঁষা কচ্ছের ভুজের পরতে পরতে জড়িয়ে রয়েছে পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের ১৯৬৫ এবং ১৯৭১-র যুদ্ধের অনেক কাহিনী। এরকমই একটি কাহিনী ভুজের মাধাপার গ্রামের। এই গ্রামের বীরাঙ্গনারা দেশের হয়ে তাঁর অসাধারণ সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছিলেন ১৯৭১-র যুদ্ধে। যুদ্ধ চলাকালে বোমাবর্ষণ করে গুজরাতের ভুজ বিমান বন্দর ক্ষতিগ্রস্ত করে দিয়েছিল পাক বাহিনী। রানওয়ে বেহাল হয়ে পড়েছিল। যুদ্ধের সময় ভারতীয় বায়ুসেনা এই বিমানবন্দর ব্যবহার না করে পার্শ্ববর্তী জামনগর বিমানবন্দর ব্যবহার করছিল। কিন্তু পাক সীমান্তের খুব কাছে হওযায় ভুজ বিমানবন্দর মেরামতির প্রয়োজন ছিল।
5/5
১৯৭১-এ পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধে দেশের মহিলারাও পিছিয়ে ছিলেন না। সীমান্ত সংলগ্ন গুজরাতের ভুজ বিমান বন্দরে ব্যাপক বোমাবর্ষণ করেছিল পাক বাহিনী। বিধ্বস্ত হয়ে গিয়েছিল এই ঘাঁটি। কিন্তু স্থানীয় মহিলারা দেশের বায়ুসেনার জন্য কঠোর পরিশ্রমে রাতারাতি নতুন রানওয়ে তৈরি করে দিয়েছিলেন। মাথার ওপর ঘুরছে হানাদার পাকিস্তানের যুদ্ধবিমান। এরকম অবস্থায় সেই কাজ মোটেই সহজ ছিল না।