Durga Puja 2023: সোনাগাছির পুজোয় 'নেই ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর', দুর্বারের 'পুজোর মুখ' এবার তাই যৌনকর্মীরাই
Sonagachi Durga Puja: সোনাগাছির পুজো নিয়ে 'উৎসাহ' দেখালেও, কেন কেউ এই পুজোর ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর হতে চায় না? এই প্রশ্নই তুলেছেন যৌনকর্মীরা।
কলকাতা: দুর্গাপুজোয় (Durga Puja) যৌনপল্লির মাটি প্রয়োজন হয় পুজোর বিধিতে। যদিও এ নিয়ে একাধিক পক্ষে-বিপক্ষে মন্তব্যও রয়েছে। চণ্ডী পুরাণ কিংবা পৌরাণিক পুজো বিধিতে যদিও এ নিয়ম নেই। ইতিহাসবিদদের কথায়, পুরাণে নেই এমন অনেক নিয়মই পরবর্তীকালে চলে এসেছে। তবে মনে করা হয়, সমাজে জাতিভেদ, পিছিয়ে পড়া শ্রেণি, অস্পৃশ্যতাকে সমাজের মূল স্রোতের সঙ্গে মিলিয়ে দেওয়ার জন্যই এ নিয়ম হয়তো শুরু হয়েছিল। কিন্তু এখনও হয়তো এই 'সরিয়ে রাখার' বিষয়টি থেকে গিয়েছে সমাজের রন্ধ্রে। অন্তত এমনটাই মনে করছে দুর্বার সংস্থার মহিলারা। (Durga Puja 2023)
সোনাগাছিতে (Sonagachi) দুর্বার আয়োজিত পুজো নিয়ে মাতামাতি হলেও থেকে গিয়েছে বেশ কিছু ফারাক। সামনেই পুজো। সেই মতো অন্যান্য বড় পুজোর পোস্টার দেখা দিতে শুরু করেছে শহর জুড়েই। সেই সব ব্যানারে হাসিমুখে হাতজোড় করে পুজোর ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর হিসেবে নায়ক নায়িকাদের ছবি থাকে। কিন্তু সোনাগাছির পুজো নিয়ে 'উৎসাহ' দেখালেও, কেন কেউ এই পুজোর ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর হতে চায় না? এই প্রশ্নই তুলেছেন যৌনকর্মীরা।
সমাজকে 'বার্তা' দিতেই এবার তাই সোনাগাছির পুজোর উদ্যোক্তা যৌনকর্মী নিজেরাই নিজেদের পুজোর মুখ হলেন। আর এই ভাবনাকে সমর্থন জানিয়ে তাঁদের পাশে দাঁড়ালেন আরেক মহিলা পুজো কমিটির সদস্যরা।
অর্জুনপুর আমরা সবাইয়ের পুজো উদ্যোক্তা মৌসুমী বলেন, 'দিদিরা যে মায়ের এই আরাধনা করছেন, আমি শুনেছি তাঁদের সেভাবে কেউ সাহায্য করে না। একটি পুজো করলে সকলের সহযোগিতা নিয়েই করতে হয়। আমার মনে হয় যারা বড় বড় পুজো করে থাকেন, তাঁদের উচিত এরকম পুজোর পাশে দাঁড়ানো। সাহায্য করে তাঁদেরও এগিয়ে নিয়ে চলা। আমাদের কাছে খবর আসতেই আমরা এক কথায় রাজি হয়েছি হয়তো অনেকে নাক উচুঁ মনোভাব দেখিয়েছেন । আমরা নিজেদের ধন্য মনে করছি দিদিদের পুজোর পাশে দাঁড়াতে পেরে।'
শুধু তাই নয়, যৌনকর্মীদের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে দুর্বারের পাশে দাঁড়ালেন সোনাঝুড়ি হাটের রাজর্ষি দাশ। সেখানকার শাড়িতেই সেজে ওঠেন যৌনকর্মীরা কুমোরটুলিতে এই ছক ভাঙ্গা প্রচারের ফটোশ্যুটও হয়।
এই ভাবনা নিয়ে নিজের ক্ষোভ যেমন জানিয়েছেন দুর্বারের সভাপতি বিশাখা লস্কর, তেমন ইতিবাচক মনোভাবও প্রকাশ পেয়েছে তাঁর কথায়। বিশাখার কথায়, "সব পুজোর প্রচার হয় শহরজুড়ে পোস্টার-ব্যানার দিয়ে। আমাদের সামর্থ্য অভিজ্ঞতা থেকে মনে হল এভাবেই আত্মপ্রকাশ করা উচিত। আমাদের মুখ, আমাদের পুজো, এ বছর আমাদের এটাই থিম। আমাদের অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ের গল্প এখানে থাকবে। তাই আমাদের পুজোতে আমাদের মুখ যতটা থাকবে ততটাই প্রচার পাবে। যারা আমাদের পাশে থাকেন আছেন, থাকবেন, সবাইকেই ধন্যবাদ জানাই।"
আগামী ৩০ তারিখে সোনাগাছি দুর্বারে দুর্গাপুজোর খুঁটিপুজোর দিন উদ্বোধন করা হবে এই ফ্লেক্স ব্যানারের। শহরের বিভিন্ন জায়গায় এবার পুজোর প্রচারে দেখা যাবে দুর্বারের দুর্গাদের।