Science News: ৮টি আইফেল টাওয়ারের সমান, পৃথিবীর খুব কাছ দিয়ে উড়ে যাবে বিধ্বংসী গ্রহাণু Apophis, দেখা যাবে খালিচোখেই
Asteroid 99942 Apophis: বিধ্বংসী এই গ্রহাণুটির নাম 99942 Apophis.

নয়াদিল্লি: একমাত্র চাঁদকেই যা ভাল ভাবে দেখা যায়। পৃথিবীর আকাশে অন্য় সব-গ্রহ নক্ষত্রই দেখতে বিন্দুর মতো, যেন একজায়গায় স্থির। কিন্তু এবার তার ব্যতিক্রম ঘটতে চলেছে। বিধ্বংসী এক গ্রহাণুকে খালিচোখেই ছুটে যেতে দেখতে পারবেন পৃথিবীবাসী। মহাকাশ গবেষণার ইতিহাসে, এই প্রথম খালিচোখে কোনও বিধ্বংসী গ্রহাণুকে ছুটে যেতে দেখা যাবে। (Asteroid 99942 Apophis)
বিধ্বংসী এই গ্রহাণুটির নাম 99942 Apophis. ২০২৯ সালের ১৩ এপ্রিল পৃথিবীর গা ঘেঁষে ছুটে যাবে সেচিষ আফ্রিকা এবং পশ্চিম ইউরোপের প্রায় ২০০ কোটি মানুষ সেটিকে রাতের আকাশে ছুটে যেতে দেখতে পাবেন, তাও আবার খালিচোখে। পৃথিবী থেকে যদিও নক্ষত্রের মতোই দেখাবে গ্রহাণুটিকে, সরে সরে যেতে দেখা যাবে সেটিকে। (Science News)
MIT-র প্ল্যানেটারি সায়েন্সেস বিভাগের অধ্যাপক রিচার্ড বিনজেল জানিয়েছেন, মহাকাশ গবেষণার ইতিহাসে এই প্রথম এমন ঘটনা ঘটতে চলেছে, যেখানে বিধ্বংসী কোনও গ্রহাণুকে খালিচোখে দেখা সম্ভব হবে। তিনি জানিয়েছেন, 99942 Apophis গ্রহাণুটির আয়তন ১১০০ ফুট, আটটি আইফেল টাওয়ারের সমান। ৭৫০০ বছরে একবারই এত বড় কোনও গ্রহাণু পৃথিবীর কাছাকাছি আসে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
বিজ্ঞানীদের মতে, জীবিত অবস্থায় এমন অভিজ্ঞতা সচরাচর হয় না। বিজ্ঞানীদের জন্য়ও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত হতে চলেছে সেটি। কারণ পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ শক্তির কোনও প্রভাব গ্রহাণুটির উপর পড়ে কি না, তা দেখতে উৎসুক তাঁরা। তবে চরিত্রগত ভাবে বিধ্বংসী হলেও, 99942 Apophis গ্রহাণুটির জন্য় পৃথিবীর উপর কোনও বিপদ নেমে আসবে না বলে নিশ্চিত বিজ্ঞানীরা।
২০০৪ সালেই 99942 Apophis গ্রহাণুটি আবিষ্কৃত হয়। সেই সময় গ্রহাণুটির পৃথিবীর উপর প্রভাব ফেলার সম্ভাবনা ছিল ২.৭ শতাংশ। এযাবৎ আর কোনও গ্রহাণুর পৃথিবীতে আছড়ে পড়ার এত বেশি সম্ভাবনা দেখা যায়নি। মিশরের পাতাললোকের দেবতার নামে তাই নামকরণ হয় 99942 Apophis গ্রহাণুটির, যিনি ‘বিশৃঙ্খলার দেবতা’ হিসেবে পরিচিত। কিন্তু গত দু’দশক ধরে লাগাতার নজরদারি, গবেষণা চালিয়ে দেখা যায়, ততটাও বিপজ্জনক নয় 99942 Apophis গ্রহাণুটি। আগামী ১০০ বছর অন্তত সেটি পৃথিবীর জন্য কোনও বিপদ সৃষ্টি করবে না। তবে পৃথিবীর মাধ্যকর্ষণ শক্তির প্রভাব পড়লে কী হবে, তা নিয়ে এখনও শঙ্কিত অনেকেই।
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, পৃথিবীপৃষ্ঠ থেকে 99942 Apophis গ্রহাণুটির উচ্চতা থাকবে মাত্র ৩০ হাজার কিলোমিটার, বেশ কিছু স্যাটেলাইটের থেকেও যা কম। সেচির কক্ষপথ পৃথিবীর কক্ষপথের মধ্যেই পড়ে, তবে সূর্যকে ঘিরেই অবস্থান। পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ শক্তির প্রভাবে সেটির কক্ষপথ বদলে যেতে পারে বলেও মত বিজ্ঞানীদের একাংশের। সেটির উপর নজরদারি চালাবে NASA-র OSIRIS-REx মহাকাশযান, যেটি Bennu নামক গ্রহাণুটির বুকে অভিযান চালায়, নমুনা সংগ্রহ করে আনে। 99942 Apophis গ্রহাণুটির আয়কন, তার ঘূর্ণন, কম্পন, পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ শক্তির প্রভাব পর্যবেক্ষণ করবে OSIRIS-REx. পৃথিবীর জন্য গ্রহণু কতটা বিপজ্জনক, তা বোঝার জন্য এই অভিযান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে।






















