ABP Exclusive: বেদীর টোটকায় আঙুলের চোট উপেক্ষা করে মাঠে নেমে পড়েছিলেন সম্বরণ
Bishan Singh Bedi Demise: প্রয়াত হলেন কিংবদন্তি স্পিনার তথা জাতীয় দলের প্রাক্তন অধিনায়ক বিষাণ সিংহ বেদী (Bishan Singh Bedi)। সোমবার দুপুরে যে খবর ছড়িয়ে পড়তেই শোকের আবহ ভারতীয় ক্রিকেট মহলে।
সন্দীপ সরকার, কলকাতা: মহানবমীর আলোয় ঝলমল করছে সারা বাংলা, শহর কলকাতা। আর সেদিনই কি না অন্ধকার নামল ভারতীয় ক্রিকেটমহলে (Indian Cricket)!
প্রয়াত হলেন কিংবদন্তি স্পিনার তথা জাতীয় দলের প্রাক্তন অধিনায়ক বিষাণ সিংহ বেদী (Bishan Singh Bedi)। সোমবার দুপুরে যে খবর ছড়িয়ে পড়তেই শোকের আবহ ভারতীয় ক্রিকেট মহলে। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড থেকে শুরু করে বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ামক সংস্থা আইসিসি, সব মহলেই শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করা চলছে।
বেদীর মৃত্যুতে মর্মাহত বাংলার রঞ্জি জয়ী অধিনায়ক সম্বরণ বন্দ্যোপাধ্যায়। এবিপি লাইভকে বললেনব, 'আমার অধিনায়ক ছিলেন বেদী। ১৯৭৫-৭৬ সালে দিল্লির ফিরোজ শাহ কোটলা মাঠে ছিল ইরানি ট্রফি। ম্যাচটা ছিল মুম্বইয়ের (তৎকালীন বম্বে) বিরুদ্ধে। সেই ম্যাচটাকে কার্যত ভারতের টেস্ট দলে ঢোকার মঞ্চ বলে মনে করা হচ্ছিল। সফল হলেই ভারতীয় দলে সুযোগ পাওয়ার হাতছানি। অবশিষ্ট ভারতীয় দলে আমার অধিনায়ক ছিলেন বিষাণ সিংহ বেদী। বাংলা থেকে সেই দলে তিনজন ছিলাম। আমি, পলাশ নন্দী ও বরুণ বর্মন। কত স্মৃতি...।'
বেদী যে সতীর্থদের কীভাবে উদ্বুদ্ধ করতেন, সেই অভিজ্ঞতার কথা শুনিয়েছেন সম্বরণ। বলেছেন, 'ইরানি ট্রফির সেই ম্যাচের সময় খুব সাহায্য করেছিলেন বেদী। আমাকে ম্যাচের আগের দিন এসে জিজ্ঞেস করেছিলেন, তুমি কত নম্বরে ব্যাট করতে চাও। ম্যাচের দ্বিতীয় দিন আমার আঙুলে চোট লাগে। আমি কিছুক্ষণের জন্য মাঠের বাইরে গিয়েছিলাম। বেদী ভীষণ উৎসাহ দিয়েছিলেন। বুঝিয়েছিলেন, ম্যাচটা কতটা গুরুত্বপূর্ণ। মনোবল চাঙ্গা হয়ে গিয়েছিল। ফের মাঠে নেমে পড়েছিলাম। এতটাই উৎসাহিত করতে পারতেন বেদী। আমার সঙ্গে অত্যন্ত ভাল সম্পর্ক ছিল। ভারতীয় দলের শিবির ছিল চেন্নাইয়ে। প্রায় মাস দেড়েক একসঙ্গে কাটিয়েছিলাম। খেলা ছেড়ে দেওয়ার পরেও বিভিন্ন জায়গায় দেখা হয়েছে।'
সম্বরণ যোগ করলেন, 'ওঁর নেতৃত্বে অন্যান্য ম্যাচও খেলেছি। ভারতীয় দলের দরজায় তখন কড়া নাড়ছি। ভারতীয় দলের অধিনায়ক ছিলেন বেদী। বিরাট মনের মানুষ। সব সময় উৎসাহ দিতেন। নর্দাম্পটনশায়ারের হয়ে কাউন্টি খেলেছেন। পাকিস্তানের মুস্তাক মহম্মদের সঙ্গে গাঢ় বন্ধুত্ব ছিল।'
বরাবরই স্পষ্টবক্তা ছিলেন বেদী। হরভজন সিংহের বোলিং অ্যাকশন হোক বা সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের নেতৃত্ব, ভুলত্রুটি দেখলেই সরব হয়েছেন। সম্বরণ বলছেন, 'সেরা ছন্দে থাকাকালীনও স্পষ্টবক্তা ছিলেন। সাদাকে সাদা আর কালোকে কালো বলতেন। এমনকী, বোর্ড প্রেসিডেন্টকেও পরোয়া করতেন না। কারও থেকে কিছু পাওয়ার আশা রাখতেন না। স্পষ্টবক্তা বলেই অনেক মর্যাদা থেকে বঞ্চিত হয়েছিলেন। গাওস্করের সঙ্গেও মধুর সম্পর্ক ছিল না।'
বাংলার হয়ে খেলার সময় প্রতিপক্ষ শিবিরের দ্রোণাচার্য ছিলেন বেদী। সম্বরণ বলছেন, 'যেবার আমরা রঞ্জি ট্রফির ফাইনালে দিল্লির কাছে ১ রানে হারলাম, সেবার দিল্লির কোচ ছিলেন বেদীই। মাঠের বাইরে খুব প্রাণখোলা মানুষ। আর বোলার হিসাবে ছিলেন কিংবদন্তি। বেদীর মতো লুপ, ফ্লাইট ও অভ্রান্ত নিশানা কোনও বোলারের দেখিনি। অধিনায়ক হিসাবেও ডাকাবুকো ছিলেন। পাকিস্তানের ইমরান খান-সরফরাজ় আমেদরা বাউন্সার দিচ্ছে বলে ইনিংস ডিক্লেয়ার করে দিয়েছিল। হৃদয় যেটা চাইত, সেটাই করতেন বেদী।'
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম টেলিগ্রামেও। যুক্ত হোন