IND vs ENG 4th Test: স্টোকসের ৫ উইকেটের পর ওপেনারদের দাপটে ম্যাঞ্চেস্টারে দ্বিতীয় দিনশেষে এগিয়ে ইংল্যান্ড
Ben Stokes: ইংল্যান্ড টেস্ট দলের অধিনায়ক বেন স্টোকস আট বছর পর এই ম্যাচেই ইনিংসে পাঁচ উইকেট নিলেন।

ম্যাঞ্চেস্টার: প্রথম দিনশেষে ম্যাচ ছিল ৫০-৫০। তবে ওল্ড ট্রাফোর্ডে চতুর্থ টেস্টের (IND vs ENG 4th Test) দ্বিতীয় দিনশেষে ম্যাচের রাশ নিজেদের হাতে তুলে নিল ইংল্যান্ড। সৌজন্য বেন স্টোকস এবং দলের দুই ওপেনার। আট বছর পর টেস্ট ক্রিকেটে ইনিংসে পাঁচ উইকেট নিলেন বেন স্টোকস (Ben Stokes)। অপরদিকে, ইংল্যান্ডের দুই ওপেনার জ্যাক ক্রলি এবং বেন ডাকেট, উভয়েই শতরান হাতছাড়া করলেও ১৬৬ রানের ওপেনিং পার্টনারশিপপে দলকে ম্যাচে এগিয়ে দিলেন। দ্বিতীয় দিনশেষে ইংল্যান্ডের স্কোর দুই উইকেট ২২৫ রান। আপাতত ১৩৩ রানে পিছিয়ে রয়েছে ইংল্যান্ড।
এদিনের শুরুতে ভারতীয় দলের স্কোর ছিল চার উইকেটের বিনিময়ে ২৬৪ রান। ক্রিজে উপস্থিত ছিলেন রবীন্দ্র জাডেজা ও শার্দুল ঠাকুর। দিনের শুরুতেই নতুন বল নিয়ে ভারতীয় দলের বিরুদ্ধে আক্রমণে নামে ইংল্যান্ড। লক্ষ্য ছিল ইনিংসকে দ্রুত গুটিয়ে দেওয়া। সেশনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই চললেও রান বেশি উঠেনি।
দিনের দ্বিতীয় ওভারেই জোফ্রা আর্চারের বলে ২০ রানে সাজঘরে ফেরেন রবীন্দ্র জাডেজা। অপরপ্রান্তে অবশ্য নিজের আগ্রাসী ব্যাটিং শিকেয় তুলে নতুন বলে ইংল্যান্ড বোলারদের এক দারুণ স্পেল বেশ দেখেশুনে খেলেন শার্দুল ঠাকুর। তাঁকে সঙ্গ দেন ওয়াশিংটন সুন্দর। দুইজনে মিলে ভারতীয় দলকে বেশ ভাল জায়গায় নিয়ে যাচ্ছিলেন। তিনশো রানের গণ্ডিও পার করে ফেলে ভারত।
তবে বেন স্টোকসের বলেই ড্রাইভ মারতে গিয়ে গালিতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন শার্দুল। তাঁর সংগ্রহ ৪১ রান। শার্দুল আউট হতে এরপরেই ব্যাটিংয়ে নামেন ঋষভ পন্থ। ওল্ড ট্রাফোর্ডে উপস্থিত খোঁড়াতে খোঁড়াতে ব্যাট নামা পন্থকে উপস্থিত সকলে স্ট্যান্ডিং ওভেসান দেন। ভারত প্রথম সেশনে আর কোনও উইকেট হারায়নি। এখনও ম্যাচ ৫০-৫০-ই ছিল। তবে দ্বিতীয় সেশনেই ইংল্যান্ড ম্যাচের রাশ নিজেদের হাতে নিয়ে নেয়।
ভারতীয় দল লাঞ্চের পর ব্যাটে নেমে শুরু থেকেই চাপে ছিল। এক ওভারে ওয়াশিংটন সুন্দরকে ২৭ ও অভিষেক ঘটানো অংশুল কম্বোজকে ফিরিয়ে বেন স্টোকস ভারতীয় দলের চাপ আরও বাড়ান। আট বছর পর ইনিংসে নিজের পাঁচ উইকেটও নিয়ে ফেলেন স্টোকস। পরিস্থিতি বুঝে পন্থ ব্যাট চালান। স্টোকসকে চার মারেন, আর্চারকে ছক্কা হাঁকান। কার্যত এক পায়ে দাঁড়িয়ে নিজের অর্ধশতরান পূরণ করেন ভারতের তারকা কিপার ব্যাটার। তবে আর্চারের দুরন্ত বলে পন্থের স্টাম্প ভাঙে। ৩৪৯ রানে নবম উইকেট হারায় ভারতীয় দল। সিরাজ ও বুমরা একটি করে চার মেরে ভারতীয় দলকে ৩৫০ রানের গণ্ডি পার করান। তবে বুমরা পুল মারতে গিয়ে আউট হন তিনি। ৩৫৮ রানেই শেষ হয়ে যায় ইনিংস।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকে বেশ কয়েকটি বল মারতে গিয়ে মিস করেন জ্যাক ক্রলিরা। তারপরেই ইংরেজ ওপেনাররা খানিকটা সময় দেখেশুনে খেলেন। তবে সেটা একদমই অল্প। ডাকেট সর্বপ্রথম ভারতীয় বোলারদের পাল্টা চাপ দেওয়া শুরু করে। তারপরেই ক্রলিও তাঁকে সঙ্গ দেন। দুই ওপেনার মিলে ভারতীয় বোলারদের চাপে ফেলেন। যশপ্রীত বুমরাকে নতুন বল হাতে একেবারেই নিষ্প্রভ দেখা যায়। কম্বোজও নতুন বল হাতে পেয়ে তেমন প্রভাব ফেলতে ব্যর্থ হন। সেশন শেষ হওয়ার আগেই ইংরেজ ওপেনাররা বোর্ডে ৭৭ রান যোগ করে ফেলেন।
এরপর চা বিরতির পর তৃতীয় সেশনে নেমেও থামার কোনও ইঙ্গিত দেখাননি তাঁরা। সাধারণ বোলিংয়ের বিরুদ্ধে ক্রলি ও ডাকেট আগ্রাসী ব্যাটিং করে ইংল্যান্ডকে ১০০, তারপর ১৫০ রানের গণ্ডিও পার করান। মনে হচ্ছিল ইংল্যান্ড ওপেনাররা অতি সহজেই উভয়েই সেঞ্চুরি করে ফেলবেন। ঠিক এই সময়ই রবীন্দ্র জাডেজা ভারতীয় দলকে সাফল্য এনে দেন। ৮৪ রানে জ্যাক ক্রলিকে ফেরান তিনি। এর খানিক পরে আরেক ওপেনার বেন ডাকেটকে ফিরিয়ে কেরিয়ারের প্রথম আন্তর্জাতিক উইকেট পান অংশুল কম্বোজ।
দুই সাফল্য পাওয়ার পর দিনশেষে ম্যাচে ফেরার জন্য শুভমন যশপ্রীত বুমরার হাতে বল দেন। প্রথম স্পেলে বুমরা তেমন প্রভাব ফেলতে না পারলেও, শেষ লগ্নে তিনি পোপ, রুটদের বিরুদ্ধে বেশ ভালই বল করেন। তবে সাফল্য আসেনি। দিনশেষে দুই উইকেট হারিয়েই সাজঘরে ফেরে ইংল্যান্ড।




















