Ranji Trophy: সারাদিন বৃষ্টি নেই, তবু পণ্ড তৃতীয় দিনের খেলা, বিহার ম্যাচই না বাংলার অভিশাপ হয়ে দাঁড়ায়
Bengal vs Bihar: গ্রুপের দুর্বলতম দল বিহারের সঙ্গে পয়েন্ট ভাগাভাগি হওয়ার আশঙ্কা ঘিরে ধরেছে বাংলা শিবিরকে। যে বিহারের সঙ্গে বোনাস-সহ ৭ পয়েন্টের অঙ্ক কষছে সব দল, তাদের কাছেই হোঁচট খাওয়ার সম্ভাবনা।
সন্দীপ সরকার, কল্যাণী: বৃষ্টি তো দূর অস্ত, প্রায় সারাদিন ধরে ঝকঝকে আকাশ। ঝলমলে রোদ। স্বাভাবিক গতিতেই দিনভর সমস্ত কাজকর্ম এগিয়েছে আম আদমির।
কল্যাণীর বেঙ্গল ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে গেলে অবশ্য আঁতকে উঠতে পারেন। মনে হতে পারে, কেউ যেন টাইমমেশিনে চাপিয়ে আপনাকে প্রাগৌতিহাসিক যুগে ফিরিয়ে নিয়ে গিয়েছে।
বেঙ্গালুরুর এম চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে প্রবল বর্ষণ সত্ত্বেও ভারত বনাম নিউজিল্যান্ড (IND vs NZ) টেস্ট ম্যাচ সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছে। ম্যাচের ফলাফলও হয়ে গিয়েছে। আর কল্যাণীতে ম্যাচের অনেক আগের বৃষ্টিতে বাংলা বনাম বিহার (Bengal vs Bihar) রঞ্জি ট্রফির (Ranji Trophy) ম্যাচের তিন-তিনটে দিনের খেলা পণ্ড হল। মাঠ এমনই ভিজে যে, গোড়ালি টিপলে এখনও কাদায় বসে যাচ্ছে। দুপুর তিনটে পর্যন্ত দফায় দফায় পিচ ও মাঠ পর্যবেক্ষণ করার পর দিনের খেলা পরিত্যক্ত ঘোষণা করেন দুই আম্পায়ার ও ম্যাচ রেফারি।
জানা গেল, পিচ শুকনো থাকলেও মাঠের ৩টি জায়গা নিয়ে খুশি নন আম্পায়াররা। জোর করে ম্যাচ শুরু করানো হলে ক্রিকেটারদের চোট আঘাত লাগতে পারে। বাংলা দলের তিন ক্রিকেটারের আবার অস্ট্রেলিয়া সফরে ভারতীয় এ দলে থাকার কথা। তাই ঝুঁকি নিতে চাননি আম্পায়াররা। বাংলা শিবির থেকে যদিও কেউ কেউ বলছেন, চাইলে চা পানের বিরতির পর খেলা শুরু করানো যেত শুক্রবার, ম্যাচের প্রথম দিনই। যদিও মাঠের বন্দোবস্ত নিয়ে অসন্তোষের বারুদও জমা হচ্ছে।
চারদিনের ম্যাচের তিনদিনই বৃষ্টিতে ভেস্তে যাওয়ার পর সিএবি-র পরিকাঠামো নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন উঠে যাচ্ছে। প্রশ্ন তুলছেন সিএবি ও বঙ্গ ক্রিকেটের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরাই।
কেন রঞ্জি ট্রফির ম্যাচ ইডেন থেকে কল্যাণীতে সরানো হচ্ছে জেনেও এবং বৃষ্টির পূর্বাভাস থাকা সত্ত্বেও আরও বেশি সতর্ক হল না সিএবি? কেন ইডেনের মতো কল্যাণীতেও অন্তত অস্থায়ী ভিত্তিতে গোটা মাঠ ঢাকার বন্দোবস্ত করা হল না? কেন গুরুত্বপূর্ণ দুই ম্যাচ আয়োজনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কল্যাণীতে আরও বেশি মাঠকর্মী নিয়োগ করা হল না, প্রয়োজনে কলকাতা থেকে পাঠানো হল না? মাঠ পরিচর্যার কাজে অনভ্যস্ত ও অপেশাদার স্থানীয় কিছু যুবককে দিয়ে কেন মাঠ শুকনোর উদ্যোগ নেওয়া হল, যাঁদের পরিচালনা করতে হিমশিম খেলেন বোর্ডের নিরপেক্ষ কিউরেটরও? কেন অক্টোবর মাসে পূর্ব ভারতে বৃষ্টি হয় জেনেও বোর্ডকে বলা হবে না যে, বাংলার হোম ম্যাচ পরের দিকে দেওয়া হোক? কেন আগামী সপ্তাহে কেরল ম্যাচেও বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে জেনেও কল্যাণীতেই সেই ম্যাচ রাখা হচ্ছে?
শেষ প্রশ্নের যদিও একটা যুক্তিগ্রাহ্য উত্তর পাওয়া গেল বাংলা শিবির থেকে। বলা হল, ইডেনে সিনিয়র মহিলাদের ম্যাচ থাকায় হাতে কল্যাণী ও সল্ট লেকের যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মাঠ ছাড়া বিকল্প ছিল না। কিন্তু সল্ট লেকের পিচ ব্যাটিং সহায়ক হওয়ায় চারদিনের ম্যাচে ফয়সালা হওয়ার সম্ভাবমা কম। তাই কল্যাণীতে পরের ম্যাচ খেলার সিদ্ধান্ত।
কিন্তু বাকি প্রশ্নের উত্তর না আছে বাংলা ক্রিকেটারদের কাছে, না কর্তাদের কাছে।
যার নিটফল, গ্রুপের দুর্বলতম দল বিহারের সঙ্গে পয়েন্ট ভাগাভাগি হওয়ার আশঙ্কা ঘিরে ধরেছে বাংলা শিবিরকে। যে বিহারের সঙ্গে বোনাস-সহ ৭ পয়েন্টের অঙ্ক কষছে সব দল, তাদের কাছেই হোঁচট খাওয়ার প্রবল সম্ভাবনা। সোমবার, ম্যাচের শেষ দিন খেলা শুরু করা গেলেও দুই দলের একটি করে ইনিংস শেষ না হলে ১ পয়েন্ট করে ভাগাভাগি হয়ে যাবে। তাতে দুই ম্যাচে ৪ পয়েন্ট হবে বাংলার। নক আউট পর্বে ওঠার অঙ্কে এই ম্যাচে পয়েন্ট হারানো বিরাট ধাক্কা হতে পারে বাংলা শিবিরের কাছে। বিহার ম্যাচই না লক্ষ্মীরতন শুক্ল-অনুষ্টুপ মজুমদারদের কাছে অভিশাপ হয়ে দাঁড়ায়। ২-৩ পয়েন্টের জন্য নক আউট হাতছাড়া হলে লক্ষ্মী-রুকুদের কপাল চাপড়ানো ছাড়া উপায় থাকবে না।
আর সত্যিই যদি তা হয়, সিএবি কর্তারাও হয়তো নিজেদের দায় এড়াতে পারবেন না, মত ময়দানের সঙ্গে জড়িত সকলেরই।
আরও পড়ুন: জোড়া গোলে ইস্টবেঙ্গলের মশাল নিভিয়ে যুবভারতীতে অকাল দীপাবলী সবুজ-মেরুন শিবিরে
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।