East Bengal: প্লে অফে খেলার স্বপ্ন দেখলে আরও ম্যাচ জিততে হবে, ওড়িশা-দ্বৈরথের আগে বলছেন লাল-হলুদ কোচ
ISL: শুক্রবার ঘরের মাঠে ইস্টবেঙ্গলের (East Bengal FC) প্রতিপক্ষ ওড়িশা এফসি, আইএসএলে গত পাঁচটি ম্যাচের মধ্যে চারটিতেই যারা জিতেছে এবং গত ছ’টি ম্যাচে যারা অপরাজিত।
কলকাতা: মুম্বই সিটি এফসি-র (Mumbai City FC) মতো শক্তিশালী দলকেও যারা তাদের মাঠে গিয়ে আটকে দিয়েছে, তাদের শিবিরের খেলোয়াড়রা যে আত্মবিশ্বাসী হবেনই, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু কোচের মুখে উল্টো কথা। তিনি আত্মবিশ্বাসী হওয়ার চেয়ে বেশি পরিশ্রমের ওপর জোর দিচ্ছেন। মুম্বইয়ের ম্যাচে গোলশূন্য ড্রয়ের পর শুক্রবার তাদের সামনে আরও এক কঠিন প্রতিপক্ষ। এই পরীক্ষায় ওতরানো যে আরও কঠিন হবে, তাও মেনে নিলেন কোচ। কিন্তু দলের খেলোয়াড়দের কাছে তাঁর স্পষ্ট দাবি, জয় চাই। জয় ছাড়া প্লে অফে ওঠার স্বপ্ন না দেখাই ভাল।
শুক্রবার ঘরের মাঠে ইস্টবেঙ্গলের (East Bengal FC) প্রতিপক্ষ ওড়িশা এফসি, আইএসএলে গত পাঁচটি ম্যাচের মধ্যে চারটিতেই যারা জিতেছে এবং গত ছ’টি ম্যাচে যারা অপরাজিত। ওড়িশা এফসি-ই এই মুহূর্তে চলতি ইন্ডিয়ান সুপার লিগে সবচেয়ে ভাল ফর্মে থাকা দল। লিগের আর কোনও দলই তাদের গত পাঁচ ম্যাচের মধ্যে চারটিতে জেতেনি। তাদেরই এই মুহূর্তে সবচেয়ে কঠিন প্রতিপক্ষ মেনে নিয়ে লাল-হলুদ শিবিরের স্প্যানিশ কোচ কার্লেস কুয়াদ্রাত সাংবাদিকদের বলেন, “ওড়িশা এফসি আটটা ম্যাচে অপরাজিত (আইএসএল ও এএফসি কাপ মিলিয়ে) থাকার পর কাল সল্ট লেকে নামছে। এর মধ্যে একটা মাত্র ড্র করেছে ওরা। চারটে ক্লিন শিট রয়েছে ওদের। এই সংখ্যাগুলো তো দুর্দান্ত। আমাদের পক্ষে ম্যাচটা বেশ কঠিন হবে”।
ওড়িশা এফসি-র কোচ সের্খিও লোবেরাকেও খুব ভাল করে চেনেন বলে জানালেন কুয়াদ্রাত। বলেন, “লোবেরার সঙ্গে বার্সেলোনায় আমি ২০ বছর আগে একসঙ্গে কাজ করেছি। আমরা ভাল বন্ধু। একে অপরকে যথেষ্ট শ্রদ্ধা করি। অবশ্যই ওরা কাল আমাদের হারানোর চেষ্টা করবেই। আমরাও ওদের বিরুদ্ধে জয় পাওয়ার চেষ্টা করব। আগে যা হয়েছে হয়েছে। এখন দল, পরিস্থিতি সবই আলাদা। আমরা দু’জনেই একটা নতুন প্রকল্পে হাত দিয়েছি। দেখা যাক কাল কে পয়েন্ট জিততে পারে”।
প্রশ্নপত্র কঠিন হলেও ভাল পরীক্ষা দিতে চান ইস্টবেঙ্গল কোচ। শুধু পাসমার্কে সন্তুষ্ট হতে চান না তিনি। বলেন, “ওড়িশার বিরুদ্ধে এক পয়েন্ট পেলে আমি সন্তুষ্ট হব না। আমরা মাত্র দুটো ম্যাচে জয় পেয়েছি। আরও জয় দরকার। প্লে অফে খেলার স্বপ্ন দেখছি আমরা। তাই আমাদের জিততে হবে”।
তবে দলের উন্নতি ও অগ্রগতি নিয়ে তিনি যে খুশি, তা কুয়াদ্রাতের কথাতেই স্পষ্ট। বলেন, “আমার মনে হয় যে কোনও দলকে আমরা হারাতে পারি। এত দিন অনেকগুলো ম্যাচেই আমরা ফলের কাছে গিয়েও ফিরে এসেছি। কখনও এক গোলে জিতেছি, কখনও আবার এক গোলে হেরেছি। এর অর্থ, আমরা ভাল অবস্থাতেই রয়েছি”।
এই প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, “আমি আত্মবিশ্বাসী নই, চেষ্টা করছি বছরটা যাতে ভাল ভাবে শেষ করা যায়। আমি খুব পজিটিভ। অনুশীলনে দলের ছেলেদের পারফরম্যান্স দেখে মনে হয় আমাদের দলটা ক্রমশ তৈরি হয়ে উঠছে। তবে একটা ম্যাচের ফলে কিছু যায়-আসে না। দল যে গতিশীল হচ্ছে, এটাই জরুরি। লিগ টেবলে আমরা একটা জায়গায় আছি। কিন্তু আমরা যা পরিশ্রম করছি এবং উন্নতি করছি, তাতে আমাদের আরও ভাল জায়গায় থাকার কথা ছিল। এখন আমাদের জয় দরকার। জয় ছাড়া কোনও দল প্লে অফে উঠতে পারে না। কালও আমাদের জয়ের জন্যই ঝাঁপাতে হবে”।
কতটা ভাল অবস্থায় রয়েছে তাঁর দল, তা বোঝা যাবে শুক্রবারের ম্যাচে, যখন আহমেদ জাহু, রয় কৃষ্ণা, দিয়েগো মরিসিওদের মুখোমুখি হবেন তাঁর দলের ফুটবলাররা। এই প্রসঙ্গে কুয়াদ্রাত বলেন, “এ পর্যন্ত আমরা ভাল ভাল ফরোয়ার্ড ও মিডফিল্ডারদের আটকেছি। জর্জ পেরেইরা দিয়াজ ও গ্রেগ স্টুয়ার্টের জুটিকে রুখেছি। আহমেদ জাহু ও রয় কৃষ্ণা, আহমেদ জাহু ও দিয়েগো মরিসিও বা এই তিনজনের কম্বিনেশনও খুব বিপজ্জনক। আমরা নিজেদের মতো খেলার চেষ্টা করছি। গত কয়েক সপ্তাহে আমরা কৌশলে অনেক উন্নতি করেছি। নতুন খেলোয়াড়রা নতুন পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে সময় নেয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পরিশ্রম করলে তার ফল মেলে। দলে যে ইদানীং ধারাবাহিকতা এসেছে, এ পরিশ্রমেরই ফল”।
ওড়িশার সেটপিস আক্রমণ নিয়েও যে চিন্তায় রয়েছে লাল-হলুদ শিবির, তাও বোঝা গেল তাদের কোচের কথায়, যখন বললেন, “সেট পিসে যে ওরা বিপজ্জনক, তা আমরা জানি। তাই আমরা সেট পিসে কী ভাবে ডিফেন্স করব, গত কয়েকদিন ধরে সেই অনুশীলন করেছি। এখন পর্যন্ত সেট পিসের বিরুদ্ধে আমাদের রক্ষণ ভালই হয়েছে। সেটপিস থেকে গোল করতে না পারলেও গোল বাঁচাচ্ছি। কালও আশা করি পরিকল্পনা অনুযায়ীই এই কাজটা করব আমরা”।
চলতি মরশুমে ইন্ডিয়ান সুপার লিগে প্রতিদ্বন্দ্বিতা অনেক বেড়েছে বলে মনে করেন স্প্যানিশ কোচ। বলেন, “এই মরশুমটা দারুন। ভাল ভাল দল খেলছে, তাদের ভাল ভাল কোচও রয়েছেন। প্রত্যেকেই একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। প্রতিটা ম্যাচই চ্যালেঞ্জ। পাঞ্জাব এফসি সে দিন আমাদের প্রায় হারিয়েই দিত। কিন্তু আমরা ড্র করি। দু’দিন আগেই পাঞ্জাব এফসি হারিয়ে দেয় চেন্নাইন এফসি-কে। প্রতিদ্বন্দিতা অনেক বেড়েছে। প্রতি ম্যাচই কঠিন”।
আরও পড়ুন: ৩ জন একসঙ্গে খেললেই ভয় পাবে প্রতিপক্ষ! কেকেআর সমর্থকদের জন্য আশার কথা শোনালেন গম্ভীর
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে