এক্সপ্লোর
Advertisement
Ganguly Hospitalised: মদ বা সিগারেট, কোনও নেশা নেই, হার্টের পেশিও মজবুত, দ্রুত সেরে উঠবেন সৌরভ, আশাবাদী ব্যক্তিগত ট্রেনাররা
সৌরভের অসুস্থতার খবর প্রকাশ্যে আসতেই উদ্বেগ পরিজন-বন্ধু ও দেশ-বিদেশে ছড়িয়ে থাকা অজস্র অনুরাগীদের মধ্যে। কবে সেরে উঠবেন ‘মহারাজ’? কবে আবার স্বাভাবিক জীবনে দেখা যাবে তাঁকে? যে সমস্ত ট্রেনারদের সঙ্গে সৌরভ বিভিন্ন সময়ে ট্রেনিং করেছেন, তাঁদের আশ্বাস, দ্রুতই সুস্থ হয়ে উঠবেন তিনি।
কলকাতা: শনিবার সকালে আচমকা একটা খবর নাড়িয়ে দিয়েছে সকলকে। মাইল্ড হার্ট অ্যাটাক হয়েছে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের। সকালে বাড়িতে জিম করার সময় ব্ল্যাক আউট হয় জাতীয় ক্রিকেট দলের প্রাক্তন অধিনায়ক তথা ভারতীয় বোর্ডের সভাপতির। বুকে-পিঠে ও হাতে ব্যথা নিয়ে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পরিবার সূত্রের খবর, তাঁর আর্টারিতে তিনটি ব্লকেজ পাওয়া গিয়েছে। বসানো হচ্ছে স্টেন্ট। আপাতত স্থিতিশীল তিনি।
সৌরভের অসুস্থতার খবর প্রকাশ্যে আসতেই উদ্বেগ পরিজন-বন্ধু ও দেশ-বিদেশে ছড়িয়ে থাকা অজস্র অনুরাগীদের মধ্যে। কবে সেরে উঠবেন ‘মহারাজ’? কবে আবার স্বাভাবিক জীবনে দেখা যাবে তাঁকে? যে সমস্ত ট্রেনারদের সঙ্গে সৌরভ বিভিন্ন সময়ে ট্রেনিং করেছেন, তাঁদের আশ্বাস, দ্রুতই সুস্থ হয়ে উঠবেন তিনি।
যেমন চিন্ময় রায়। ২০১২-২০১৩ সালে আইপিএলে যেবার শেষ খেলেছিলেন সৌরভ, চিন্ময়ের তত্ত্বাবধানেই ট্রেনিং করতেন। এবিপি আনন্দকে চিন্ময় বললেন, ‘মদ্যপান হোক বা ধূমপান, ও কোনও নেশা করে না। শৃঙ্খলাপরায়ণ জীবন যাপন করে। কার্ডিও ভাসকুলার মানে হৃদপিণ্ড ও ফুসফুস সংক্রান্ত যে কোনও সমস্যায় ধকল নেওয়ার ক্ষমতা ওর অনেক বেশি। লম্বা ইনিংস খেলত। প্রচুর দম লাগত সেগুলো খেলতে। সৌরভের হৃদপিণ্ডের পেশিগুলো অনেক মজবুত। তাই দ্রুত সেরে ওঠার সম্ভাবনা উজ্জ্বল।’
চিন্ময় যোগ করলেন, ‘তবে সৌরভ খাদ্যরসিক। বিরিয়ানি, ভাত খেতে ভালবাসে। খেলোয়াড় জীবনে অবশ্য অনেক সংযত থাকত।’ নিয়মিত ট্রেনিংয়ে থাকা খেলোয়াড়দের দ্রুত সেরে ওঠার সম্ভাবনা থাকে বলে মনে করেন চিন্ময়। বলছেন, ‘খেলোয়াড়দের নির্দেশিকা মেনে শরীরচর্চা করতে হয়। নিয়মিত শরীরচর্চা করে সৌরভ। ওর কার্ডিও রেসপিরেটরি সিস্টেম শক্তিশালী। কোনও গ্যারান্টি নেই যে, শরীরচর্চা করলে হৃদরোগে আক্রান্ত হবে না। তবে মেটাবলিক ইস্যু থাকলে, রক্তচাপ বা ডায়াবিটিস সংক্রান্ত কোনও সমস্যা থাকলে সতর্ক থাকতে হয়। ওয়েট ট্রেনিং করত সৌরভ। ওয়েট ট্রেন করলে সাময়িকভাবে রক্তচাপ বেড়ে যায়। পরে আবার সেটা কমেও যায়। চল্লিশের কোঠায় থাকলে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়াটা বিস্ময়কর নয়।’
সৌরভের শরীরে সহজাতভাবে চর্বি জমার প্রবণতা আছে বলে জানালেন চিন্ময়। বললেন, ‘বীরেন্দ্র সহবাগের শরীরে ফ্যাট পার্সেন্টেজ বেশি। মহারাজদারও তাই। এটা জিনগত। ঋদ্ধিমান সাহা-অশোক ডিন্ডাদের ফ্যাট পার্সেন্টেজ খুব কম। ফ্যাট পার্সেন্টেজ যাদের বেশি, তাদের হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা থাকে।’ পাশাপাশি তিনি ফুটবলার নুয়ানকো কানুর উদাহরণ দিচ্ছেন। বলছেন, ‘কানুর হার্ট অপারেশন হওয়ার পর ফুটবল খেলেছে। সৌরভও খেলোয়াড়। এখন প্রযুক্তি অনেক উন্নত। সৌরভ দ্রুত সেরে উঠবে।’
গ্রেগ চ্যাপেলের জমানায় ভারতীয় দল থেকে বাদ পড়ার সময় থেকে গৌতম দেবের তত্ত্বাবধানে ট্রেনিং করতেন সৌরভ। তাঁর ফিটনেসের দিকে আঙুল উঠেছিল। সৌরভের প্রত্যাবর্তন সামনে থেকে দেখেছেন গৌতম। বলছিলেন, ‘এখনও আমার কাছেই ট্রেনিং করে। তবে গত মাস দুয়েক একাই ট্রেনিং করছিল। ওর হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার খবরে আমি খুব অবাক। কখনও কোনও শারীরিক সমস্যা দেখিনি। কোনওদিন বলেনি হাঁফিয়ে যাচ্ছি বা আর পারছি না।’ গৌতম যোগ করলেন, ‘সৌরভের সঙ্গে লম্বা দৌড়তাম। দুমাস আগেও ফিটনেস ট্রেনিং করিয়েছি। জানি না সম্প্রতি বেশি ইন্টেনসিটির কোনও ট্রেনিং করে ফেলেছিল কি না। এই জন্য একা ট্রেনিং করতে নেই। শরীরের কোনও গ্যারান্টি নেই। শরীরচর্চা করলে রোগ হবে না তা নয়। তবে সাধারণ মানুষের চেয়ে যারা ট্রেনিংয়ের মধ্যে থাকে তারা অনেক দ্রুত সেরে ওঠে। খেলোয়াড়েরা সেই কারণ এত দ্রুত সেরে ওঠে। লড়াই করার ক্ষমতা অনেক বেশি মহারাজদার।’
বাড়িতেই জিম রয়েছে। বাড়ির জিমে নতুন যন্ত্র বসাতে চাইছিলেন সৌরভ। গৌতম বলছেন, ‘একদিন হোয়াটসঅ্যাপ করেছিল, একরকম ট্রেনিং একঘেয়ে লাগছে। নতুন মেশিন চাই। আমি সব বিশদে লিখে ছবি পাঠালাম। খুব অবাক হচ্ছি এই খবরে।’
রণদীপ মৈত্রের কাছেও একসময় দীর্ঘদিন ট্রেনিং করেছেন সৌরভ। অধিনায়ক হিসাবে অস্ট্রেলিয়া সফরে ব্রিসবেন টেস্টে ঐতিহাসিক সেঞ্চুরি করেছিলেন। তার আগে রণদীপের কাছেই ট্রেনিং করে অস্ট্রেলিয়া উড়ে গিয়েছিলেন। রণদীপ বলছেন, ‘সেবার অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার আগে আমার কাছে অফ সিজন ট্রেনিং করেছিল। একটু পুশ করতে হতো শরীরচর্চার জন্য। আসলে সকলে তো একরকম হয় না। তবে ওর ট্রেনার হিসাবে আমি খুশিই ছিলাম। কারণ ওর দায়বদ্ধতা দেখার মতো ছিল।’ প্যারাশ্যুট ট্রেনিং হোক বা স্ট্রেংথ, ইডেনে রণদীপের সঙ্গে নিয়মিত দেখা যেত সৌরভকে। রণদীপ বলছেন, ‘কোনও সমস্যা কখনও দেখিনি। আমি লম্বা দৌড়তে বারণ করেছিলাম। সেটা হৃদপিণ্ডের জন্য খুব খারাপ। ক্রিকেটে লম্বা দৌড়নো ঠিক নয়। এটা বিজ্ঞানসম্মত নয়। শুনেছি সাম্প্রতিককালে ও লম্বা দৌড়য়। জানি না কেন। ভারতীয় দলের ক্রিকেটারেরা যেরকম ট্রেনিং করত, আমিও সেটাই করাতাম সৌরভকে।’ পাশাপাশি রণদীপের আশ্বাস, ‘ওর শরীরে ধকল নেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে। দ্রুত সেরে উঠবে।’
আপাতত সেই প্রার্থনাতেই আপামর ক্রিকেটপ্রেমীরা।
খেলার (Sports) লেটেস্ট খবর এবং আপডেট জানার জন্য দেখুন এবিপি লাইভ। ব্রেকিং নিউজ এবং ডেলি শিরোনাম দেখতে চোখ রাখুন এবিপি আনন্দ লাইভ টিভিতে
আরও দেখুন
Advertisement
ট্রেন্ডিং
Advertisement
Advertisement
সেরা শিরোনাম
ক্রিকেট
জেলার
জেলার
জেলার
Advertisement