Union Budget 2023: দৈনিক আয় ২৭ টাকা, জনমোহিনী ঘোষণায় হাল ফিরবে কৃষকদের!
Union Budget 2023 India: ২০২২-’২৩ অর্থবর্ষ শেষ হওয়ার মুখে। তার আগে ২০২৩-’২৪ অর্থবর্ষের দিকে তাকিয়ে গোটা দেশ।
নয়াদিল্লি: অতিমারির ধাক্কা সামলে সংসদে ২০২৩-’২৪ অর্থবর্ষের বাজেট পেশ করতে চলেছে কেন্দ্র (Union Budget 2023)। তার আগে ফের আলোচনার কেন্দ্রে কৃষকদের রোজগার। ক্ষমতায় আসার পর কৃষকদের আয় দ্বিগুণ করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও, এখনও পর্যন্ত সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষায় সাফল্য পায়নি কেন্দ্র। বরং বিতর্কিত কৃষি আইন ঘিরে বিক্ষোভের মুখে পড়ে তারা (Union Budget 2023 India)। তাতে বাধ্য হয়ে আইনই তুলে নিতে হয়। তাই ২০১৪-এর লোকসভা নির্বাচনের আগে বর্তমান সরকারের শেষ পূর্ণ বাজেটে কৃষকদের আয়বৃদ্ধি নিয়ে সরকার কী সিদ্ধান্ত নিতে পারে তা নিয়ে শুরু হয়েছে কাটাছেঁড়া। আর তাতেই উদ্বেগজনক তথ্য সামনে এল। জানা গেল, বর্তমানে কৃষকদের দৈনিক আয় ২৭ আয় টাকা (Farmers' Income)।
কৃষকদের দৈনিক আয় ২৭ আয় টাকা!
২০২২-’২৩ অর্থবর্ষ শেষ হওয়ার মুখে। তার আগে ২০২৩-’২৪ অর্থবর্ষের দিকে তাকিয়ে গোটা দেশ। বুধবার সংসদে সেই পূর্ণ বাজেট পেশ করবেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। করোনার জেরে বিগত কয়েক বছরে কৃষিক্ষেত্র কার্যতই অবহেলিত থেকেছে। তাই নতুন করে কৃষিকে প্রাধান্য দেওয়া হতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু বর্তমানে কৃষকদের আয় যে জায়গায় রয়েছে, তাতে এই কাজে সরকারকে বেগ পেতে হবে বলে মনে করা হচ্ছে। কৃষকদের দৈনিক আয় ২৭ টাকা থেকে বাড়াতে হলে, কেন্দ্রকে বরাদ্দ বাড়ানোর পাশাপাশি, ন্যূনতম সহায়ক মূল্য এবং সারের উপর ভর্তুকিতেও জোর দিতে হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
এর আগে, ২০২২-’২৩ অর্থবর্ষে কৃষির উন্নয়ন এবং কল্যাণমূলক প্রকল্পের জন্য কেন্দ্রের তরফে ১.২৪ লক্ষ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়। কৃষিশিক্ষা এবং গবেষণার কাজে আরও ৮ হাজার ৫১৩.৬২ কোটি টাকা বাড়তি বরাদ্দ করে কেন্দ্র। আবার ২০২২-এর বাজেট অনুযায়ী, ২০২১-’২২ অর্থবর্ষে কৃষি এবং সংশ্লিষ্ট খাতে মোট মূল্য সংযোজন ছিল ১৮.৮ শতাংশ। ওই বছর কৃষিক্ষেত্রে উন্নয়নের হার ৩.৯ শতাংশ ছিল (২০২২ সালের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত হিসেব অনুযায়ী)।
২০২২ সালে রাসায়নিক মুক্ত কৃষিকাজে জোর দিয়েছিল কেন্দ্র। গঙ্গার উপকূলবর্তী কৃষকদের মাধ্যমে তা শুরু করার কথা জানানো হয়। এ ছাড়াও, ফসল তোলার পর মূল্য সংযোজন, বাজরার মতো ফসলের ব্র্যান্ডিংয়ের কথা বলেছিল কেন্দ্র। ডিজিটাল মাধ্যম এবং প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপস-এর কথা বলেন নির্মলা সীতারামন, যার আওতায় সরকার এব বেসরকারি সংস্থার মধ্যে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তিতে কৃষকদের হাতে কৃষিকাজ ব্যবহৃত উন্নত প্রযুক্তি এবং পরিষেবা পৌঁছে দেওয়ার কথা বলা হয়।
কিন্তু ২০১৯- সালের সিচুয়েশন অ্যাসেসমেন্ট অফ এগ্রিকালচারাল হাউজহোল্ডস অ্যান্ড লাইভস্টক হোল্ডিংস অফ হাউসহোল্ডস ইন রুরাল ইন্ডিয়ার পরিসংখ্যান অনুযায়ী, কৃষকদের দৈনিক টাকায় আটকে রয়েছে বলে জানিয়েছেন কৃষি নীতি নির্ণায়ক দেবেন্দ্র শর্মা। তিনি বলেন, “দৈনিক ২৭ টাকা আয় মোটেই যথেষ্ট নয়। গত ৭৫ বছর ধরে ভারতের কৃষকদের অবস্থা অত্যন্ত সঙ্কটজনক। কারণ এত বছর ধরে কৃষকদের ন্যায্য আয় থেকে বঞ্চিত করে রাখা হয়েছে। একরকম ইচ্ছাকৃত ভাবেই দরিদ্র করে রাখা হয়েছে তাঁদের।”
দেবেন্দ্র বলেন, “২০২১ সালে শেষ বার যে পরিসংখ্যান সামনে আসে, তাতে দেখা যায়, এ দেশের কৃষকদের মাসিক গড় আয় ১০ হাজার ২০০ টাকা কর, এর মধ্যে কৃষিকাজের পাশাপাশি পশুপালন এবং খাবারবাড়ি সংক্রান্ত অন্য কাজও রয়েছে। কিন্তু শুধু কৃষিকাজ থেকে দৈনিক আয় ২৭ টাকাই। সে ক্ষেত্রে নিয়ম-নীতি কেমন হওয়া উচিত? বোঝাই যাচ্ছে, ভারতে কৃষকদের অবস্থা মোটেই ভাল নয়।“ নিশ্চিত রোজগারের ভরসাই কৃষকদের এই পরিস্থিতি থেকে বার করে আনতে পারবে বলে মত তাঁর।
পিএম কিসান প্রকল্পে বার্ষিক ৬ হাজার টাকা অর্থসাহায্য দেওয়া হয়
দেবেন্দ্রর মতে, কৃষকদের নিশ্চিত রোজগারের আশ্বাস জোগানো সবচেয়ে জরুরি। দৈনিক ২৭ টাকা রোজগার করে কেউ বাঁচতে পারেন না বলে মন্তব্য করেন তিনি। তাই কৃষিকাজের উপর থেকে কোনও ভর্তুকি তুলে নেওয়া উচিত হবে না বলে মত তাঁর। সারের উপর ভর্তুকি না দিলে ফসলের উৎপাদন হবে কী করে, রাসায়নিক যুক্ত সার বাদ দিলেই বা চলবে কী করে, প্রশ্ন তোলেন তিনি। এ বছর যে ৪০ লক্ষ কোটি খরচের জন্য বরাদ্দ করতে চলেছে কেন্দ্র, তার মধ্যে মাত্র ২.৫ লক্ষ কোটিই সারের ভর্তুকিতে গেলে, সমস্যার সমাধান হবে না বলে মনে করছেন অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। প্রধানমন্ত্রী পিএম কিসান প্রকল্পের আওতায় কৃষকদের বছরে যে ৬ হাজার টাকা অর্থসাহায্য দেওয়া হয়, তা বাড়িয়ে ১২ হাজার টাকা করলে, কিছুটা সুরাহা হয় বলে মত তাঁদের।