US-India Tariff : মিথ্যে বলছেন ট্রাম্প, রাশিয়ার থেকে সবথেকে বেশি তেল কেনে কোন দেশ ?
US-India Tariff War: যদিও বাস্তব পরিসংখ্য়ান বলছে, ভারতের সম্পর্কে মিথ্যে কথা বলছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। জেনে নিন, রাশিয়ার থেকে বেশি তেল কেনে কোন কোন দেশ।

India Russia Relation : রাশিয়ার থেকে তেল (Russian oil) কেনায় ভারতের বিরুদ্ধে আমদানি শুল্ক বাড়িয়েছে আমেরিকা (Trump Tariff)। বার বার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের (Donald Trump) মুখে শোনা গেছে এই কথা। যদিও বাস্তব পরিসংখ্য়ান বলছে, ভারতের সম্পর্কে মিথ্যে কথা বলছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। জেনে নিন, রাশিয়ার থেকে বেশি তেল কেনে কোন কোন দেশ।
কবে থেকে ভারতের ওপর আরও বেশ শুল্ক আরোপ
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বুধবার ভারতের উপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা করেছেন। ট্রাম্পের দাবি, রাশিয়া থেকে তেল কেনার উপর অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শাস্তিমূলক শুল্ক আরোপের ঘোষণা করা হয়েছে, যা ২৭ অগাস্ট থেকে কার্যকর হবে। এই পদক্ষেপ বিশ্বব্যাপী বাণিজ্য কৌশল নিয়ে নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। বিশেষ করে রাশিয়া থেকে বিপুল পরিমাণে জ্বালানি পণ্য আমদানিকারী দেশগুলির জন্য এটি একটি খারাপ খবর।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন একসময় রাশিয়ার তেলের সবচেয়ে বড় ক্রেতা ছিল। যদিও এখন চিন, ভারত ও তুরস্কের মতো এশিয়ার দেশগুলি এই জায়গা নিয়ে নিয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন আরোপিত নিষেধাজ্ঞার পর, এশিয়া রাশিয়া থেকে অপরিশোধিত তেলের সবচেয়ে বড় বাজারে পরিণত হয়েছে।
ইইউর পরে, এশিয়া এখন সবচেয়ে বড় ক্রেতা
বর্তমানে, চিন রাশিয়া থেকে প্রায় ২১৯.৫ বিলিয়ন ডলার মূল্যের জ্বালানি (তেল, গ্যাস এবং কয়লা) ক্রয় করে। যেখানে ভারত প্রায় ১৩৩.৪ বিলিয়ন ডলার ও তুরস্ক প্রায় ৯০.৩ বিলিয়ন ডলার মূল্যের পণ্য় কেনে। এর বাইরে হাঙ্গেরির মতো কিছু ইউরোপীয় দেশ এখনও পাইপলাইনের মাধ্যমে সীমিত পরিমাণে রাশিয়ান তেল ক্রয় করছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় দেশগুলির নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও তেল থেকে রাশিয়ার আয় উল্লেখযোগ্যভাবে কমেনি।
কিয়েভ স্কুল অফ ইকোনমিক্সের মতে, জুন মাসেই রাশিয়া তেল বিক্রি করে ১২.৬ বিলিয়ন ডলার আয় করেছে। ২০২৫ সালে মোট ১৫৩ বিলিয়ন ডলার আয় হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এই পরিসংখ্যানগুলি দেখায় যে- রাশিয়ার উপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা সত্ত্বেও এর জ্বালানি রপ্তানি সীমিতভাবে প্রভাবিত হয়েছে। এশিয়ান বাজারগুলি এখন রাশিয়ার অর্থনৈতিক মেরুদণ্ড তৈরি হয়েছে।
অন্যদের থেকে ভারতের পরিস্থিতি কেন ভাল ?
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতের উপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা সত্ত্বেও, ভারতের অবস্থান চিনের চেয়ে ভালো। ট্রাম্প প্রশাসন চিন থেকে আমদানি করা পণ্যের উপর ৩০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে, যেখানে ভিয়েতনাম থেকে আমদানির উপর মাত্র ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। যেহেতু ভিয়েতনামের উপর শুল্ক ভারতের তুলনায় কম, তাই মার্কিন বাজারে দুই দেশের পণ্যের মধ্যে প্রতিযোগিতা বজায় থাকবে।
এদিকে, ফিচ রেটিং সম্প্রতি তার শুল্ক নীতি ট্র্যাকিং ইন্টারেক্টিভ টুল "Effective Tariff Rate (ETR) Monitor" আপডেট করেছে। এই তথ্য় অনুযায়ী, আমেরিকার গড় কার্যকর শুল্ক হার এখন ১৭ শতাংশে উন্নীত হয়েছে, যা গত বছরের তুলনায় ২ শতাংশ বেশি। আমেরিকার প্রধান বাণিজ্যিক অংশীদারদের মধ্যে, চিনের ETR সর্বোচ্চ ৪১.৪ শতাংশ (যা আগে ১০.৭ শতাংশ ছিল) হিসেবে রেকর্ড করা হয়েছে। যেখানে ভারতের ETR ২১ শতাংশের একটু বেশি, যে কারণে এটি চিনের তুলনায় তুলনামূলকভাবে ভাল অবস্থানে রয়েছে।
আমেরিকার এই সিদ্ধান্ত নিয়ে কী বলছে চিন
ETR অর্থাৎ কার্যকর শুল্ক হার ব্যবহার করে বোঝা যায় যে কোনও দেশের উপর আরোপিত শুল্ক আসলে বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক কৌশলগুলিকে কীভাবে প্রভাবিত করে। চিনের রেনমিন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক লিয়াও ইউ-এর মতে, ট্রাম্পের "মেক আমেরিকা গ্রেট অ্যাগেইন" এজেন্ডা তার দ্বিতীয় মেয়াদে আরও আক্রমণাত্মক রূপ ধারণ করেছে।
লিয়াও বলেছেন, এই মতাদর্শের সমর্থকরা বিশ্বাস করেন যে মুক্ত বাণিজ্য আমেরিকার ক্ষতি করেছে, এর জন্য চিনকে বিশেষভাবে দায়ী করা হচ্ছে। আগামী সময়ে চিনকে আরও গুরুতর শুল্ক যুদ্ধের মুখোমুখি হতে হতে পারে। যদিও ট্রাম্পের 'আমেরিকা ফার্স্ট' নীতি আমেরিকার ঐতিহ্যবাহী জোটগুলির দুর্বলতার কারণে চিনের জন্য কৌশলগত সুযোগ তৈরি করতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।






















