Arabul Islam: গাড়িতে পড়ল চাঙড়, চলল ইঁটবৃষ্টিও, কোনও রকমে পালালেন আরাবুল, তৃণমূলের প্রতিষ্ঠা দিবসে তপ্ত ভাঙড়
Arabul Islam: ভাঙড় ও হাতিশালা থানার পুলিশ লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি সামাল দেয়।
ভাঙড়: বছরের প্রথম দিন দলের প্রতিষ্ঠা দিবসে তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দলে রণক্ষেত্র ভাঙড়। পতাকা তুলতে গিয়ে নিজের গড়েই আক্রান্ত আরাবুল ইসলাম। ভাঙড়ের প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়কের গাড়ি লক্ষ্য করে ছোড়া হল ইট, পাথর। আরাবুলের সঙ্গীর গাড়ি লক্ষ্য করে উড়ে এল কংক্রিটের চাঙড়। ক্যানিং পূর্বের তৃণমূল বিধায়ক ও ভাঙড়ের পর্যবেক্ষক সওকত মোল্লার অনুগামীরা হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ। পুলিশের সামনেই চলল গুন্ডামি। ছেলেকে নিয়ে গাড়িতে চড়ে কার্যত পালালেন আরাবুল ইসলাম। (Bhangar News)
ভিডিও-য় দেখা গিয়েছে, ছুটে এসে এক যুবক গাড়ির উপর একটি চাঙড় ফেলে দেন। এই ঘটনায় উত্তেজনা ছড়ালে ভাঙড় ও হাতিশালা থানার পুলিশ লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি সামাল দেয়। জেলমুক্তির পর আরাবুল ইসলাম ফেরার পর থেকেই ভাঙড়ে মাথাচাড়া দিয়েছে তৃণমূলের কোন্দল। বাগ্যুদ্ধ থেকে শুরু করে হাতাহাতি, বাদ যাচ্ছে না কিছুই। এদিন তৃণমূলের প্রতিষ্ঠা দিবসে হাতিশালার ওয়ারি এলাকায় পতাকা তুলতে যান আরাবুল। অশান্তির আঁচ পেয়ে আগে থেকেই মজুত ছিল পুলিশ। তাদের সামনেই আরাবুল ও তাঁর সঙ্গীর গাড়িতে হামলা চলে। (Arabul Islam)
১ জানুয়ারি তৃণমূলের প্রতিষ্ঠা দিবসে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ভাঙড়। ভাঙড়ের হাতিশালা থেকে খানিকটা দূরে ওয়াড়িতে আরাবুলের দলের পতাকা তোলা নিয়ে উত্তেজনা ছড়ায়। পতাকা উত্তোলন করে আরাবুল ফেরার সময় তাঁর এক সহযোগীর গাড়ির উপর হামলা ছড়া হয়। কংক্রিটের চাঙড় এনে গাড়ির উপর ফেলেন এক যুবক। চলে ইঁট, পাথরবৃষ্টিও। গোটা ঘটনায় তেতে ওঠে এলাকা। পরিস্থিতি সামাল দিতে নামতে হয় পুলিশকে।
এই হামলার জন্য সওকত মোল্লার দিকে আঙুল তুলেছেন আরাবুল। জানা গিয়েছে, ওয়াড়িতে সওকতের অনুগামীরা পতাকা উত্তোলন করেন এদিন। তার পরও নতুন করে পতাকা উত্তোলন করতে যান আরাবুল। সেই নিয়েই ঝামেলা বাধে। একই পতাকা দু'বার করে কেন উত্তোলন করা হল, সেই নিয়ে বিক্ষোভ দেখান এলাকার মানুষজন। এমন পরিস্থিতিতে সওকত বলেন, "সকাল ৬টা থেকে ভাঙড় বিধানসভার ১৩টি অঞ্চলে পতাকা উত্তোলন করছি। দলের তরফে শীতবস্ত্র বিতরণও করা হচ্ছে। ওয়াড়িতে সবাই মিলে পতাকা উত্তোলন করে। সেই পতাকা নামিয়ে আবার পতাকা তুলতে যায়। উনি তো দলের কোনও পদে নেই! কেন বিশৃঙ্খলা তৈরি করছেন জানি না। আমি দিদিকে জানাব এটা, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কেও জানাব। ভাঙড়ে কোনও গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নেই। আমাদের নেতাকর্মী, যাঁরা ২০২৪ সালে নির্বাচন করেছে, সকলে ঐক্যবদ্ধ।"
এক পতাকা নামিয়ে কেন আর এক পতাকা তোলা হল, প্রশ্ন তুলেছেন সওকত। তাঁর কথায়, "দলের কোনও পদে নেই উনি। পরিষ্কার জানিয়ে দিলাম। আমার মনে হয় অশান্তি ছড়ানোর জন্য পরিকল্পিত ভাবে এটা ঘটানো হল। ভাঙড়ে তৃণমূল ঐক্যবদ্ধ। আমার মনে হয়, পিছন থেকে কলকাঠি নেড়ে পরিবেশ নষ্ট করার চেষ্টা হচ্ছে।"
যদিও আরাবুল বলেন, "আমি ওই গাড়িতে ছিলাম না। একটা কথা বলি, গাড়ি ভেঙে, আক্রমণ করে আরাবুল ইসলামকে তৃণমূল থেকে সরানো যাবে না। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে আস্থা রেখে যতদিন বেঁচে থাকব, তৃণমূলে ঝান্ডা হাতে নিয়ে থাকব। পরিকল্পনা করে হামলা চালিয়েছে। সওকত মোল্লা নিজে সিক্সথ লেনে বলে রয়েছে। ওর নির্দেশে হামলা হচ্ছে আমার উপর। কুখ্যাত সমাজবিরোধীরা আমার গাড়ির উপর হামলা করেছে। আরাবুল যতদিন বাঁচবে, তৃণমূলের ঝান্ডা ঘাড়ে বইবে।" শুধু ইঁট, পাথর নয়, বোমও পড়েছে বলে দাবি করেছেন আরাবুল। তাঁর দাবি, নেতৃত্বের কথা শুনেই উদযাপন করেছেন তিনি। সওকত প্রসঙ্গে বলেন, "কে সওকত মোল্লা? সওকত দলের কেউই নন। তিনি বিধায়ক, আমি কনভেনার। পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি আমি।" দোষীদের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন আরাবুল। ক্যানিংয়ের পর ভাঙড়ে তৃণমূলকে শেষ করতে সওকত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে দাবি করেছেন।