Nandan Mela: প্রথা ভেঙে কচিকাঁচাদের শিল্পকর্মের প্রদর্শনী, অভিনব উদ্যোগ কলাভবনের ঐতিহ্যবাহী নন্দন মেলায়
Artistic Work: নিজেদের মনের খেয়ালে কেউ নারকেলের মালা, মাটির ভাঁড় দিয়ে বানিয়েছে ক্যামেরা, তো কেউ অন্য কিছু।
ভাস্কর মুখোপাধ্যায় ও আবির ইসলাম, বোলপুর : শীত মানেই মেলার শুরু। গায়ে ঠান্ডার আমেজ মেখে রং-বেরঙের জিনিসের পসরার মাঝে নিজেকে 'হারিয়ে' দেওয়া। মেলা মানেই নস্টালজিয়া। পুরনো সবকিছুকে নতুন করে আবার খুঁজে পাওয়া। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে বসে মেলা। বিভিন্ন উপলক্ষে। তারপর কয়েকটা দিন হইহল্লা। আর এই মেলার আনন্দ দিতে এবং কচিকাঁচাদের শিল্পকর্ম তুলে ধরতে উদ্যোগ নিয়েছে বিশ্বভারতীর কলাভবন। অভাব যাদের নিত্যসঙ্গী সেই গার্গী সাহা, সৌম্যজিৎ ধারা, সোনাম খাতুন, সমীর আনসারি, আমন সিং- এই রকম প্রথম থেকে ষষ্ঠ শ্রেণির ৪০-এরও বেশি ছাত্রছাত্রী এবার অংশ নিচ্ছে নন্দন মেলায়। এরা বিশ্বভারতীর সঙ্গে যুক্ত নয়। তবে, আশপাশের এলাকারই ছেলেমেয়ে।
প্রথা ভেঙে এবার এই কচিকাঁচাদের হাতের কাজ প্রদর্শনীর সুযোগ করে দিচ্ছে বিশ্বভারতী। তাদের শিল্পকর্ম ঠাঁই পাচ্ছে কলাভবনের ঐতিহ্যবাহী নন্দন মেলায়। অভাবি এই ছেলে-মেয়েরা সৃষ্টিকর্মে পারদর্শী। নিজেদের মনের খেয়ালে কেউ নারকেলের মালা, মাটির ভাঁড় দিয়ে বানিয়েছে ক্যামেরা, তো কেউ অন্য কিছু। একাধিক জিনিস নিয়ে মেলায় হাজির থাকবে এই কচিকাঁচারা। এমনকী তাদের ক্যামেরায় তোলা ছবি বড় আকারে প্রিন্ট করা হয়েছে। সেগুলি মেলায় প্রদর্শনীর পাশাপাশি বিক্রি করা হবে।
১৯৭২ সালে কলাভবনের এক ছাত্রের দুর্ঘটনায় অর্থসাহায্য সংক্রান্ত সমস্যা কলাভবনের সলককে ভাবিয়ে তোলে। একটি স্থায়ী অর্থভাণ্ডারের অভাব অনুভূত হয় সেই সময়। ঠিক তখনই নন্দলালের জন্মদিনের আনন্দ উৎসব ‘বরোদার আর্টফেয়ার’, স্থায়ী অর্থভাণ্ডার গঠন, সমস্ত মিলে জন্ম নেয় নন্দন শিল্প মেলার। মূল উদ্দেশ্য ছিল, দুর্দিনে দুর্ঘটনায় মোকাবিলা করার জন্য একটি স্থায়ী অর্থভাণ্ডার গঠন করার। ১৯৭৩ সালে কলাভবনে এই মেলাটি প্রথম অনুষ্ঠিত হয়েছিল 'নন্দ মেলা' নামে। পরের বছর, অর্থাৎ ১৯৭৪ সাল থেকে 'নন্দন মেলা' রূপেই তা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। কলাভবনের শিল্পী ছাত্রদের স্বহস্তে নির্মিত নানা শিল্পদ্রব্যের পসরা বসে মেলায়। এ প্রসঙ্গে উল্লেখযোগ্য, এসব জিনিস বিক্রির সঙ্গে চা ও খাবারের দোকানও থাকে।
'নন্দন উৎসব’ প্রকৃতপক্ষে শিল্পাচার্য নন্দলাল বসুর জন্মদিন। খুব স্বাভাবিক কারণেই কলাভবনের সকল ছাত্র, শিক্ষক নন্দলালের জন্মদিনটিকে স্মরণীয় করে রাখেন নন্দন উৎসবর মধ্যে দিয়ে। ৩ ডিসেম্বর, ১৮৮৩ সালে নন্দলালের জন্ম। বিভিন্ন ভাবে তাঁর জন্মদিন পালন করা হতো। পরে তাঁর জন্মদিন উৎসবের আকার, আর তা-ই হয়ে ওঠে নন্দন মেলা।