Rampurhat Fire: রামপুরহাটে হত্যালীলা, স্বজন হারানোর যন্ত্রণা বকটুই গ্রামে
রামপুরহাটের এই বাড়িতে, জীবন্ত পুড়িয়ে মারা হয়েছে শিশু, মহিলা-সহ আটজনকে। যে পোড়া মৃতদেহগুলোর ছবি দেখে রাজ্যবাসী শিউড়ে উঠেছে। তারা কেউ এদের মা, স্ত্রী, মেয়ে, কিংবা বোন।
অর্ণব মুখোপাধ্যায়, রামপুরহাট: রামপুরহাটের (Rampurhat Fire) বকটুই গ্রামে জীবন্ত পুড়িয়ে মারা হয়েছে আটজনকে। এর মধ্যে অনেকে একই পরিবারের। সেই পরিবারের পুরুষরা কোনওমতে পালিয়ে প্রাণে বেঁচেছেন। কিন্তু, স্বজন হারানোর যন্ত্রণা এখনও তাড়া করছে তাঁদের।
রামপুরহাটের এই বাড়িতে, জীবন্ত পুড়িয়ে মারা হয়েছে শিশু, মহিলা-সহ আটজনকে। যে পোড়া মৃতদেহগুলোর ছবি দেখে রাজ্যবাসী শিউড়ে উঠেছে। তারা কেউ এদের মা, স্ত্রী, মেয়ে, কিংবা বোন। আপনজনকে হারানোর সেই তীব্র যন্ত্রণা, এদের নিজেদের প্রাণে বাঁচার আনন্দকে ফিকে করে দিয়েছে।
রামপুরহাটের যে গ্রামে এই গণহত্যা হয়েছে, সেই বকটুইয়ের বাসিন্দা, দুই ভাই মিহিলাল শেখ এবং বানিরুল শেখ। তাঁদের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল সাঁইথিয়ার বাসিন্দা দুই বোনের। মঙ্গলবার হামলার সময়, মিহিলাল এবং বানিরুল কোনওমতে পালিয়ে, সাঁইথিয়ায় শ্বশুরবাড়িতে চলে যান। কিন্তু, পরিবারের মহিলারা বাড়িতেই আটকে পড়েন। তার মধ্যে ছিলেন মিহিলাল ও বানিরুলের মা, স্ত্রী, মেয়েরা। তারপরই ঘটে গণহত্যা। গণহত্যাকাণ্ডে নিহতের আত্মীয় মিহিলাল শেখের জানান, “সাতজন একটা বাড়িতে লুকিয়ে ছিল। আরেকটা বাড়িতে তিনজন। ভিতর থেকে আটকেছিল। গেট ভেঙে ঢোকে। তারপর আগুন।’’ বানিরুল শেখ জানান, “পুলিশ ছিল। পুলিশ কিছু করেনি। আমাদের সঙ্গে ঝামেলা ছিল। ভাদুর বালি, কয়লা খাদান ছিল শুনেছি। ’’ মা, দিদিকে হারিয়ে শোকে আকুল বানিরুল শেখের আরেক মেয়ে। তিনি এই ঘটনায় সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। বানিরুল শেখের মেয়ের কথায়, “মা ফোন করছিল। বলছিল, ওরা তালা ভেঙে ঢুকছে, আগুন দিচ্ছে। পুলিশকে জানিয়েছিল। সিবিআই (CBI) তদন্ত চাই।‘’
উল্লেখ্য,রামপুরহাটকাণ্ডের আঁচ পৌঁছেছে লোকসভাতেও। লোকসভায় বিষয়টি তোলেন কংগ্রেসের দলনেতা অধীর চৌধুরী। রামপুরহাট হত্যাকাণ্ডের আঁচ এসে পড়ে বিধানসভাতেও। প্রশ্নোত্তরপর্ব শেষ হওয়ার পর, মুখ্যমন্ত্রীর বিবৃতি দাবি করে বিধানসভার ভিতরে বিক্ষোভ দেখান বিজেপির বিধায়করা। পরে, ওয়াক আউট করেন তাঁরা। রামপরহাটের ঘটনায়, বিধানসভায় বিবৃতি দেন পরিষদীয়মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। পাল্টা বিধানসভা থেকে মিছিল করে রাজভবনে যান বিজেপি বিধায়করা। হত্যাকাণ্ডের জন্য তৃণমূলকে দুষছে সিপিএম। তৃণমূলের সমালোচনায় সরব কংগ্রেসও। একসঙ্গে প্রাণ চলে গেল আটটা মানুষের। ছারখার হয়ে গেল পরিবার। কিন্তু, এর নেপথ্যে রয়েছে কারা? কারণ কী? বিচার হবে কবে? তারই অপেক্ষায় এই স্বজনহারারা।
আরও পড়ুন: Rampurhat Fire: ছুটিতে শ্বশুরবাড়ি এসে রাতের আগুনে প্রাণ খোয়ালেন নব দম্পতি