Buddhadeb Bhattacharjee death : পার্টির ফান্ডের বেশি টাকা যাতে খরচ না হয়ে যায়, বুদ্ধবাবু ভর্তি হতে চাইতেন না হাসপাতালে, বললেন চিকিৎসক
Buddhadeb Bhattacharjee Death : শুধু পার্টি ফান্ডের টাকা যাতে অতিরিক্ত খরচ না হয়ে যায়, তাই এড়িয়ে যেতে চাইতেন হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার বিষয়টি।
ঝিলম করঞ্জাই, কলকাতা : ৮ অগাস্ট। গতবছর ঠিক এই দিনেই, উডল্যান্ডসের কেবিন থেকে ফিরেছিলেন তাঁর পাম অ্য়াভিনিউয়ের প্রিয় ঠিকানায়। এক বছর পর সেই আটই অগাস্টই চিরতরে বিদায় জানালেন তাঁর প্রিয় ঠিকানাকে। বহুদিন ধরেই ভুগছিলেন সিওপিডিতে। শরীরে ভাঙন ধরতে শুরু করে। বারবার হাসপাতালে গিয়েছেন। সামলে উঠেছেন । কিন্তু এবারটা আর হল না।
২০১১-র নির্বাচনে হারের পর থেকেই বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের শরীর ভাঙতে শুরু করে। দলের সক্রিয় কাজকর্ম থেকে ক্রমেই সরে আসতে শুরু করেন
তিনি। শ্বাসকষ্টের পুরনো সমস্যা মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। সিওপিডি-র সমস্যার জন্য ২০১০ সাল থেকে বিমানে উঠতে পারতেন না। তখনও তিনি দলের পলিটব্যুরো ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য। কিন্তু শারীরিক অবস্থার জন্য় কলকাতার বাইরে বৈঠকে অংশগ্রহণ অসম্ভব হয়ে যাওয়ায়, পলিটব্য়ুরো থেকে অব্য়হতি নেন। শেষ বার তাঁকে জনসমক্ষে দেখা গিয়েছিল ২০১৯ সালে বামফ্রন্টের ব্রিগেড সমাবেশে। কিন্তু ধুলোবালির জন্য় গাড়ি থেকেও নামতে পারেননি।
গত কয়েকদিন ধরে জ্বরে ভুগছিলেন। চিকিৎসকরা বলছেন, শারীরিক পরীক্ষার রিপোর্টে উদ্বেগের তেমন কিছুই ছিল না। কিন্তু বৃহস্পতিবার সকালে আচমকা নামতে শুরু করে স্যাচুরেশন লেভেল। তারপরই সব শেষ। যেসব বিশিষ্ট চিকিৎসকরা তাঁর চিকিৎসার দায়িত্বে ছিলেন, তাঁরাই জানালেন কতটা অনাড়ম্বর জীবনে অভ্যস্ত ছিলেন তিনি। কতটা নির্মেদ জীবনযাত্রায় বিশ্বাসী ছিলেন। শুধু পার্টি ফান্ডের টাকা যাতে অতিরিক্ত খরচ না হয়ে যায়, তাই এড়িয়ে যেতে চাইতেন হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার বিষয়টি।
হাসপাতালে তাঁর মন টিকত না। শেষ দিকে পাম অ্যাভিনিউয়ের ওই একচিলতে ঘর ছেড়ে যেতেই চাইতেন না। তাঁর এই অনীহাই কি বিপদ ডেকে আনল? ফুসফুস বিশেষজ্ঞ কৌশিক চক্রবর্তীই জানালেন, 'বারবার হাসপাতালে যেতে চাইত না। যাতে পার্টিফান্ডের খরচ না হয়। টাকা যেন না যায়।
হাসপাতালে থাকলে সামাল দেওয়া যেত হয়তো। বাড়িতে দ্রুত অবনতি হয়েছে। '
বুদ্ধবাবু যখন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, তখনও ডাক্তারি পড়ছেন, আজ তিনিই নিজের হাতে লিখলেন ডেথ সার্টিফিকেট। তিনি চিকিৎসক সোমনাথ মাইতি,।
বললেন, রোগী হিসেবে সব কথা মানতেন। দেখা হলেই শারীরিক অবস্থা খারাপ থাকলেও আমি কেমন আছি জিজ্ঞাসা করতেন। যে যাই বলে বলুক, বিরল ব্যক্তিত্ব।
চিকিৎসক নারায়ণ বন্দ্যোপাধ্যায়। চেম্বারে একাধিক রোগীকে অপেক্ষা করতে বলে ছুটে এসেছেন বুদ্ধবাবুর চলে যাওয়ার খবর পেয়ে। কথা বলতে গিয়ে আবেগতাড়িত হয়ে পড়লেন তিনিও।
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে
আরও পড়ুন
দলীয় পতাকা, ফুলে শেষ শ্রদ্ধা, পিস ওয়ার্ল্ডে শায়িত প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের মরদেহ