Burdwan Medical College: ছাদ থেকে পড়েও ভাঙেনি হাড়, নেই 'সঠিক' কারণও, বর্ধমান মেডিক্যালে জুনিয়র ডাক্তারের মৃত্যু নিয়ে আজও রহস্য!
Doctors Death News: এখন বর্ধমান-সহ বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজ থেকে, যেভাবে থ্রেট কালচারের অভিযোগ সামনে আসছে, তা শুনে এই পরিবারের মনে নতুন করে প্রশ্ন জাগছে-তাহলে কি তাদের ছেলের সঙ্গেও এরকম কিছু হয়েছিল?
রানা দাস, পূর্ব বর্ধমান: আর জি কর-কাণ্ডের আবহে, আবার চর্চায় উঠে এসেছে, বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের এক জুনিয়র ডাক্তারের রহস্যমৃত্যুর ঘটনা। তিন বছর আগে, হস্টেলের পাশ থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার হয়েছিল তেইশ বছর বয়সী মোবারক হোসেনের মৃতদেহ। খুনের অভিযোগ তুলেছিল পরিবার। এখন বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজ থেকে যেভাবে থ্রেট কালচারের অভিযোগ সামনে আসছে, তা দেখে পরিবারের আশঙ্কা, তাদের ছেলের সঙ্গেও এরকম কিছু হয়নি তো?
মেডিক্যাল কলেজ থেকে একটা ফোন এসেছিল। সেই ফোনেই পরিবার জানতে পেরেছিল, সন্তানের মৃত্যু সংবাদ। কিন্তু কীভাবে মৃত্যু? তা নিয়ে আজও রহস্য। না... আর জি কর-কাণ্ড নয়। তারও তিন বছর আগে, কার্যত একইরকম মর্মান্তিক অভিজ্ঞতার সাক্ষী হয়েছিল পূর্ব বর্ধমানের এই পরিবার।
এখন বর্ধমান-সহ বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজ থেকে, যেভাবে থ্রেট কালচারের অভিযোগ সামনে আসছে, তা শুনে এই পরিবারের মনে নতুন করে প্রশ্ন জাগছে-তাহলে কি তাদের ছেলের সঙ্গেও এরকম কিছু হয়েছিল? নিহত জুনিয়র ডাক্তারের বাবা শেখ হাফিজুল ইসলাম বলেন, এই মৃত্যু উপর থেকে পড়ে নয়। সেইদিন রাতে সিনিয়ররা তাকে খাবারের জন্য ডাকে। হয়ত সেখানেই কোন কিছুর প্রতিবাদ করাতেই খুন করা হয়েছে ছেলেকে।
ঠিক কী হয়েছিল?
২০২১-এর ১১ অগাস্ট বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের তিন নম্বর হস্টেলের পিছন দিক থেকে উদ্ধার হয় ২৩ বছর বয়সী জুনিয়র ডাক্তার মোবারক হোসেনের মৃতদেহ। পরিবারের দাবি, তাদের জানানো হয়, ওপর থেকে পড়ে গেছিলেন মোবারক। বাড়ির লোক হাসপাতালে গিয়ে দেখেন মোবারকের মৃত্যু হয়েছে। এরপরই পরিবারের তরফে খুনের অভিযোগ তোলা হয়।
আর জি কর-কাণ্ডের মতো, বর্ধমান মেডিক্যালের এই জুনিয়র ডাক্তারের মৃত্যু নিয়েও একাধিক জায়গায় রহস্য ছিল। নিহত মোবারকের বাড়ির লোকের দাবি, সেই রাতে জুনিয়র ডাক্তারদের মধ্যে থেকে একা মোবারককে তাদের সঙ্গে খেতে ডেকেছিল সিনিয়ররা। এরপরই ওই ঘটনা ঘটে।
পরিবারের দাবি, তাদের বলা হয়েছিল মদ্যপানের পর তিনতলা থেকে পড়ে যান মোবারক। কিন্তু ময়নাতদন্তে তাঁর শরীরে অ্যালকোহল মেলেনি। তিনতলা থেকে পড়ে গেছে বলে জানানো হলেও, কোনও হাড়ও ভাঙা ছিল না। ঘটনার পুনর্নির্মাণের সময় 'ডামি' ফেলা হলে, বারবার তা মৃতদেহ যেখানে ছিল তার থেকে দূরে গিয়ে পড়ে।
ছেলের মৃত্যুর পর তিনবছর পেরিয়ে গেলেও এখন বিচার পাননি মা-বাবা। আর জি কর মেডিক্যালসের নিহত চিকিৎসকের পরিবারের মতোই, তাঁরাও সন্তানের ছবি বুকে আঁকড়ে চোখের জল ফেলছেন। দাবি একটাই, সিআইডি নয়, তদন্তভার দেওয়া হোক সিবিআই-কে।
নিহত জুনিয়র ডাক্তারের বাবার কথায়, 'প্রথমে বলে মদ খেয়ে পড়ে যায়। কেন সিনিয়ররা ওকে একা ডাকল, পিএম রিপোর্টে অ্য়ালকোহল পায়নি। আমাদের ধারণা খুন করা হয়েছে। হাইকোর্টে গেছি। সিআইডি চাই না। সিবিআই চাই। আমরা চাই দোষীরা শাস্তি পাক।'
থ্রেট কালচার নির্মূল করার দাবিতে, আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। আর বর্ধমানের এই দম্পতি জানতে চাইছেন, তাঁদের একমাত্র সন্তান কি থ্রেট কালচারেরই বলি হয়েছিল? কী হয়েছিল তাঁদের মেধাবী ছেলের সঙ্গে? কোনওদিনও কি সেই রহস্যের কিনারা হবে?
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে