Cooch Behar News: ফের কোচবিহারের বাসিন্দার কাছে অসম থেকে NRC নোটিস ! 'আদালতে হাজির না হলে, গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হতে পারে ..'
Cooch Behar Resident Got NRC Notice: অসমে এক বছর সংসার করার পর, পশ্চিমবঙ্গে চলে আসেন, তুফানগঞ্জের শালবাড়ি পঞ্চায়েত এলাকায় মোমিনা বিবিকে অসম থেকে NRC নোটিস

শুভেন্দু ভট্টাচার্য,কোচবিহার: ফের কোচবিহারের বাসিন্দার কাছে এল অসম থেকে NRC নোটিস। উত্তমকুমার ব্রজবাসী, অঞ্জলি শীল, নিশিকান্ত দাসের পর এবার মোমিনা বিবি। তুফানগঞ্জের শালবাড়ি পঞ্চায়েত এলাকায় এবার মোমিনা বিবিকে নোটিস দেওয়া হয়েছে খবর।
আরও পড়ুন, 'একলাফে পুজো অনুদান বাড়ল ২৫ হাজার টাকা , ঘুষ দিয়ে লাভ নেই..' ! খোঁচা শুভেন্দুর
নোটিস পাওয়ার পর মোমিনা বিবি বলেছেন, '৪০ বছর আগে অসমের ধুবরির বাসিন্দা জহিরের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল তাঁর। তখন বাড়ি ছিল তুফানগঞ্জ ২ ব্লকে। অসমে এক বছর সংসার করার পর, পশ্চিমবঙ্গে চলে আসেন তিনি। ফের বিয়েও করেন। কিন্তু সেই স্বামী ছেড়ে চলে গেছেন। বছরখানেক ধরে তাঁকে দেওয়া হয়েছে ৩টি নোটিস'! মোমিনা বিবি আরও বলেন, গতকাল বাড়িতে এসেছিল পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, 'আদালতে হাজির না হলে, গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হতে পারে।'
মূলত, এই নিয়ে চতুর্থবার। ফের কোচবিহারের এক বাসিন্দাকে NRC-র নোটিস পাঠাল অসম সরকার। উত্তমকুমার ব্রজবাসী, অঞ্জলি শীল, নিশিকান্ত দাসের পর এবার অসম সরকারের থেকে NRC-র নোটিস পেলেন মোমিনা বিবি। তবে এবারই প্রথম নয়, গত বছর সেপ্টেম্বর মাস থেকে তিন তিনবার তাঁকে নোটিস পাঠিয়েছে অসম সরকার। আর গতকাল, তাঁর বাড়িতে গিয়ে সোজা আদালতে গিয়ে হাজিরা দেওয়ার কথা বলে এসেছে পুলিশ। যিনি অসম থেকে প্রায় ৪০ বছর আগে চলে এসেছেন, তাঁকে NRC-র নোটিস পাঠায় কী করে? প্রশ্ন তুলল তৃণমূল। পাল্টা বিজেপির প্রশ্ন, বৈধ নথি থাকলে জমা দিচ্ছেন না কেন NRC-র নোটিসপ্রাপ্ত তুফানগঞ্জের ওই মহিলা?
প্রথমে কোচবিহারের দিনহাটার উত্তমকুমার ব্রজবাসী, এরপর আলিপুরদুয়ারের ফালাকাটার অঞ্জলি শীল, তারপর কোচবিহারেরই মাথাভাঙার বাসিন্দা নিশিকান্ত দাসের কাছে এসে পৌঁছেছে অসম সরকারের NRC নোটিস। আর এবার এই তালিকার নাম জুড়ল কোচবিহারেরই আরেক বাসিন্দা মোমিনা বিবির। তুফানগঞ্জের শালবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের বাঁশরাজার বাসিন্দা মোমিনা বিবি। ৪০ বছর আগে অসমের ধুবরি জেলার এক বাসিন্দার সঙ্গে বিয়ে হয় তাঁর। ১ বছর সেখানে ছিলেন তিনি। এরপর অসম থেকে স্বামীর সঙ্গে চলে আসেন কোচবিহারের বাঁশরাজায় বাপের বাড়িতে। ২ বছর পর বিবাহবিচ্ছেদ হয় তাঁর। বর্তমানে ২ ছেলে ও পুত্রবধূদের নিয়ে কোচবিহারেই থাকেন মোমিনা বিবি। আর তাঁর কাছেই তিন তিনবার এসেছে অসম সরকারের এনআরসি নোটিস। বুধবার হঠাৎই পুলিশ তাঁর বাড়িতে পৌঁছয়। অভিযোগ, তাঁকে বলা হয়, আদালতে হাজিরা না দিলে তাঁর নামে জারি হতে পারে গ্রেফতারি পরোয়ানা।
মোমিনা বিবি : আমরা বাংলাদেশের না।
প্রশ্ন : কোর্টে যেতে বলেছে, কোর্টে যাননি?
মোমিনা বিবি : না যাইনি।
প্রশ্ন : কেন?
মোমিনা বিবি : ভয়েতে যাইনি। কী কারণে নোটিসটা আসল ওইটাই চিন্তা। প্রমাণপত্র সব আছে।
কোচবিহারের আরও এক বাসিন্দার কাছে বিজেপি শাসিত আসাম থেকে এনআরসি-র নোটিস পৌঁছনো নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতর। কোচবিহারের তৃণমূল কংগ্রেসের সহ-সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন,তাঁর নামে এর আগেও দু'বার এই এনআরসির নোটিস এসেছে। থার্ড টাইম আবার মোমিনা বিবির কাছে নোটিস এসেছে তাঁকে অসমে গিয়ে হাজিরা দেওয়ার জন্য, তথ্যপ্রমাণ দেওয়ার জন্য। যে মানুষটা অসমে থাকেই না, প্রায় ৩৮ বছর আগে, বিবাহবিচ্ছেদের কারণে চলে এসেছে, তাঁর নামেও নোটিস কীভাবে পাঠায়? কোচবিহার বিজেপি সহ-সভাপতি উজ্জ্বল কান্তি বসাক বলেন, অসম থেকে যে নোটিস পাঠানো হয়েছে, যার নামে, সে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী কিনা। যদি বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী হয়ে না থাকে, সরকারিভাবে যথাযথ ডকুমেন্টস, এখানকার স্থায়ী অধিবাসী যদি সে হয়ে থাকে, তার যেটা যেটা ডকুমেন্টস থাকার কথা, সেটা পেশ করুক। এটা কেন পেশ করছে না? সব মিলিয়ে, কোচবিহারের একের পর এক বাসিন্দার কাছে অসম থেকে এনআরসির নোটিস আসা নিয়ে ক্রমশ চড়ছে রাজনীতির পারদ।






















