Landslide : ক্রমশ বাড়ছে ধসের প্রবণতা, দার্জিলিং, কালিম্পংয়ে ঝুঁকি কতটা ?
Darjeeling Kalimpong Landslides Probability: উত্তরাখণ্ডের পাহাড়ি এলাকায় বিপর্যয় , পশ্চিমবঙ্গের পাহাড়ি এলাকাতেও কি কখনও এরকম বিপদ নেমে আসতে পারে? কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা ?

সনৎ ঝা, উমেশ তামাঙ্গ, কৃষ্ণেন্দু অধিকারী : উত্তরাখণ্ড থেকে হিমাচল প্রদেশ, বীভৎস প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ছবি ভয় ধরাচ্ছে এ রাজ্যের পাহাড়ের বাসিন্দাদের। যত্রতত্র পাহাড় কেটে বেআইনি নির্মাণ থেকে পাহাড় কেটে টানেল তৈরি, হাইড্রোপ্রজেক্ট, এসবের জেরে ক্রমশ ধসের প্রবণতা বাড়ছে দার্জিলিং, কালিম্পঙে। এখন সেখানে কী পরিস্থিতি? বিষেশজ্ঞরা কী বলছেন? এবিপি আনন্দর বিশেষ রিপোর্ট।
আরও পড়ুন, বিচার চেয়ে এবার CBI অধিকর্তার দ্বারস্থ অভয়ার পরিবার, কী বললেন নিহত চিকিৎসকের মা ?
উত্তরাখণ্ডে পাহাড় থেকে নেমে আসা মৃত্য়ুদূত গিলে খেয়েছে বিস্তীর্ণ এলাকাকে। মেঘভাঙা বৃষ্টির জেরে হড়পা বানে খড়কুটোর মতো ভেসে গেছে অসংখ্য় বাড়ি-হোটেল। খোঁজ নেই বহু মানুষের। আর উত্তরাখণ্ডের পাহাড়ি এলাকায় বিপর্যয়ের এই ছবি দেখার পর থেকে বহু মানুষের মনে প্রশ্ন উঁকি দিচ্ছে, পশ্চিমবঙ্গের পাহাড়ি এলাকাতেও কি কখনও এরকম বিপদ নেমে আসতে পারে? দার্জিলিং ও কালিম্পঙের মতো এলাকাতেও কি ঝুঁকি বাড়ছে? পাহাড়ের গায়ে যেভাবে বেআইনি হোটেল কিংবা ফ্ল্য়াট গড়ে উঠছে, তাই কি একদিন বড়সড় বিদপ ডেকে আনতে পারে? ইংরেজ আমলে পাহাড়ে বেশিরভাগ নির্মাণই ছিল কাঠের। কিন্তু এখন সেই জায়গা নিয়েছে কংক্রিট। অভিযোগ, যার জেরে নষ্ট হচ্ছে পাহাড়ের বাস্তুতন্ত্র।
জম্মু-কাশ্মীর উত্তরাখণ্ড ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল, জিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া শৈবাল ঘোষ বলেন, দার্জিলিং, সিকিম, এগুলো খুব বিপজ্জনক ভূমিধস প্রবণ এলাকা। হিমালয় এখনও উঠছে। হিমালয় এখনও নতুন পর্বত। হিমালয়ের ভূতাত্ত্বিক গঠন শক্তপোক্ত নয়। এ তৈরি হয়ে আছে ভূমিধসের জন্য। এই যে হোটেল বা বিভিন্ন কনস্ট্রাকশন হচ্ছে, ঝুঁকিটাকে বাড়িয়ে দিচ্ছে। ক্লাইমেট চেঞ্জ হচ্ছে। বিপর্যয়ের সম্ভাবনা আরও বাড়ছে। সাবধান হতে হবে, কনস্ট্রাকশন ঠিক করে করতে হবে পাহাড়ের যে অংশ ডেঞ্জারেস সেই জায়গায় এড়িয়ে নতুন জায়গা খুঁজে বের করতে হবে।'
বর্ষার মরসুমে এমনিতেও পাহাড়ে ধস নামে। এবারও তার ব্য়তিক্রম হয়নি। বিশেষজ্ঞদের মতে, তিস্তা ও তার শাখানদীর ওপর গত কয়েক দশকে একাধিক বাঁধ নির্মাণ করে জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরি হয়েছে। কৃত্রিমভাবে জলের ধারা আটকে দেওয়ার ফলে তার চাপ বাড়ছে! সেইসঙ্গে বাড়ছে বিপদের আশঙ্কাও। সেতিখোলা ও তারখোলা, দুটি জায়গা হচ্ছে ধসপ্রবণ। ধসের ফলে রাস্তা বসে যাচ্ছে। ৩ থেকে ৬ তারিখ পর্যন্ত করোনেশন সেতু থেকে রংপো যাওয়ার রাস্তা বন্ধ। গতকাল রাস্তা চালু হওয়ার কথা থাকলেও হয়নি। কবে চালু হবে, তা অনিশ্চিত।
নদী বিশেষজ্ঞ কল্যাণ রুদ্র বলেন, সিকিমের ক্যাচমেন্ট এরিয়া খুব কম। সেখানে ১১টা হাইড্রোপাওয়ার প্রজেক্টের কাজ চলছে। এগুলো করতে গিয়ে হিলস্লোপকে মডিফাই করা হয়েছে।কখনও দেখিনি তিস্তা নদী, তিস্তা বাজারের কাছে হাইরোডে এর উপর উঠে এসেছে। এখন সেটা দেখছি। আসলে ল্যান্ড স্লাইড হয়ে নদীর গর্ত ভরে গেছে। নদীর চলার পথে বাধা তৈরি করেছে, তাই কাঁকর, বালি নদীর খাতেই পড়ছে। সেকারণে প্রত্যেক বছর সিকিম দার্জিলিং কালিম্পং শিলিগুড়ি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে।
এই পরিস্থিতির মধ্য়েই পাহাড় কেটে চলছে রেলের টানেল তৈরির কাজ। প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় ভূতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক শান্তনু বোস বলেন, পাহাড়ি এলাকায় উন্নয়ন অবশ্যই দরকার। কিন্তু উন্নয়নের বিপুল ভার সামলাতে সেই জমি যথেষ্ট শক্তপোক্ত কি না, সেটা দেখে নেওয়াও একই রকম জরুরি। সতর্ক করছেন পরিবেশবিদরা। কারণ প্রকৃতি রুষ্ট হলে, সমূহ বিপদ।






















