Arambagh Voter List Row: জীবিত ব্যক্তি খাতায়কলমে মৃত, আরামবাগে ভোটার তালিকায় গরমিল, ‘আমরা কি ভূত?’ ফুঁসে উঠলেন স্থানীয়রা
Hooghly News: গোটা ঘটনায় সপ্তমে উঠেছে রাজনৈতিক তরজা।

আরামবাগ: কেউ বেঁচে থেকেও মারা গিয়েছেন। কেউ আবার মারা গিয়েও জীবিত। ভোটার তালিকায় গরমিল নিয়ে রাজনীতি যখন তপ্ত, সেই আবহে হুগলির আরামবাগ থেকে কার্যতই ভূতুড়ে ঘটনা সামনে এল। সেখানকার প্রায় ১৩ জনকে মৃত বলে দেখানো হয়েছে। অথচ দিব্যি বেঁচেবর্তে রয়েছেন তাঁরা। লোকসভা নির্বাচনে ভোটও দিয়েছেন। আবার এমন কয়েক জনের নাম রয়েছে, তাঁদের এলাকার কেউ চেনেন না। গোটা ঘটনায় সপ্তমে উঠেছে রাজনৈতিক তরজা। (Arambagh Voter List Row)
হুগলির আরামবাগ বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত আড়ান্ডি ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রতাপনগরের ঘটনা। ২০২৫ সালের ভোটার তালিকায় প্রতাপনগরের একটি বুথে ১৩ জন জীবিত ব্যক্তিকে মৃত বলে দেখানো হয়েছে বলে অভিযোগ। আবার তালিকায় এমন আটজনকে জীবিত বলে দেখানো হয়েছে, তাঁদের এলাকার কেউ চেনেনই না। অভিযোগকারিণী কাকলি রায় বলেন, "এখন ভোটার তালিকায় যে নাম এসেছে, তাঁদের চিনি না আমরা। আমাদের সংসদীয় তালিকাতেও নামগুলি নেই। তাঁরা কোথাকার বাসিন্দা খুঁজে দেখতে হবে। আমরা এখানকার দীর্ঘদিনের বাসিন্দা। কিন্তু এঁরা কারা, আমরা কেউ জানি না।" (Hooghly News)
আর এক অভিযোগকারী গৌরচন্দ্র ঘোষ বলেন, "দেখলাম, ভোটার তালিকায় আমাকে মৃত বলে দেখানো হয়েছে। ২০২৫ সালের ১ জানুয়ারি যে নতুন তালিকা বেরিয়েছে, আমাকে মৃত বলে দেখানো হয়েছে এবং লেখা আছে ডিলিটেড। অথচ আমি প্রকৃত ভোটার। গত লোকসভা নির্বাচনেও ভোট দিয়েছি। এলাকার প্রধান, বিধায়ক সকলেই আমাকে চেনেন এবং জানেন। আমি সংশোধনের জন্য অনুরোধ জানিয়েছি।"
ভোটার তালিকায় মৃত বলে দেখানোয় ফুঁসে ওঠেন এলাকার আর এক বাসিন্দা। তিনি বলেন, "আমি কি ভূত? বেঁচে থাকা সত্ত্বেও মৃত ঘোষণা করা হল। এ আবার কোন দেশের নিয়ম? পরের বার ভোট দেব কী করে? সরকারি প্রকল্পের সুযোগ-সুবিধা কী করে মিলবে? আমি তো কোনও কাজই করতে পারব না! কী ভাবে জীবন চলবে?" এক মহিলা বলেন, "নাম কাটিয়ে দিয়েছে। আমি কিছু পাচ্ছি না। আমি কি ভূত এসেছি না কি? আমি কেন কিছু পাব না? প্রতাপনগরের রথতলায় থাকি আমি। বেঁচে রয়েছি। কিছু পাচ্ছি না আমি। বেঁচে থাকতে সব চলে যাবে? কেন নাম কাটল?"
এই ঘটনায় নির্বাচন কমিশন ও বিজেপি-কে নিশানা করছে তৃণমূল। তৃণমূলের আরামবাগ সাংগঠনিক জেলার চেয়ারম্যান স্বপন নন্দী বলেন, "বিজেপি চক্রান্ত করে, নির্বাচন কমিশনকে হাত করে, যাঁরা বেঁচে আছেন ১৩ জনকে মৃত করা হয়েছে। আবার ন'জনকে অন্য বুথ থেকে এনে এখানে দিয়েছে। হরিয়ানা, গুজরাত, দিল্লি, পঞ্জাবে যেমন চক্রান্ত করে দেখছে, বাংলাতেও তেমন করার চেষ্টা করেছিল বিজেপি। মুখ্য়মন্ত্রী ধরে ফেলেছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন আছেন, বাংলার মাটিতে কেউ আঁচড় কাটতে পারবে না।"
যদিও পুরশুড়ার বিজেপি বিধায়ক বিমান ঘোষ বলেন, "২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে পরাজয়ের ভয়ে নাটক করছে তৃণমূল। ভোটার তালিকায় কারসাজি তৃণমূলের কাজ। নাম ঢোকানো, কারসাজি ওদের কারবার। এর আড়ালে বড় ষড়যন্ত্র রয়েছে। এসব ওরাই করে। বাংলার মানুষ বর্জন করবে জেনে এসব করছে এখন।" এই বিতর্কে মুখ খুলেছেন আরামবাগের মহকুমা শাসক রবিকুমার। তিনি বলেন, "এটা আমি দেখছি। ভুলচুক কিছু থাকলে আইন অনুযায়ী দেখে নেওয়া হবে।" কিন্তু গত নির্বাচনেও যাঁরা ভোট দিয়েছেন, তাঁদের নাম হঠাৎ বাদ যায় কী করে, জীবিতদেরই বা মৃত বলে দেখানো হয় কী করে, মেলেনি প্রশ্নের উত্তর। এতে উদ্বেগও ছড়িয়েছে এলাকায়।























