VC: 'প্রশাসন বলিষ্ঠ না হলে বিশ্ববিদ্যালয় এগোবে কী করে?', রাজ্য সরকারকে খোঁচা তৃণমূল আমলে নিযুক্ত উপাচার্যদেরই!
রাজভবন কি নতুন নবান্ন হয়ে গেল? উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে বেআইনি কাজ করছেন রাজ্যপাল'। আচার্যের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন প্রাক্তন উপাচার্যদের।
কলকাতা: রাজ্য সরকারকে খোঁচা তৃণমূল আমলে নিযুক্ত উপাচার্যদেরই! 'প্রশাসন বলিষ্ঠ না হলে বিশ্ববিদ্যালয় এগোবে কী করে?' রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সঙ্কট নিয়ে খোঁচা প্রাক্তনীদের! ২৫ জন প্রাক্তন উপাচার্য নিয়ে 'দ্য এডুকেশনিস্ট ফোরাম' । 'রাজভবন কি নতুন নবান্ন হয়ে গেল? উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে বেআইনি কাজ করছেন রাজ্যপাল'। আচার্যের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন প্রাক্তন উপাচার্যদের। 'কড়া নরমের ব্যাপার নেই, আইনসঙ্গতভাবেই এগোবে সরকার'। তৃণমূল আমলে নিযুক্ত উপাচার্যদের অভিযোগ খারিজ শিক্ষামন্ত্রীর।
রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করে রাজ্য সরকার। মামলায় রাজ্যপালকে পার্টি করতে বলে নোটিস দেয় সর্বোচ্চ আদালত। ২ সপ্তাহ পর শুনানি। কোনও প্রতিষ্ঠান প্রধান ছাড়া কাজ চালাতে পারে না, মন্তব্য করে সুপ্রিম কোর্ট। প্রতিষ্ঠানের স্বার্থে উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজ্য-রাজ্যপাল কেন সমস্যা মেটাচ্ছেন না? প্রশ্ন সর্বোচ্চ আদালতের। নিয়োগ হতে হবে স্বচ্ছ পদ্ধতিতে, এমনটাও মন্তব্য করে সুপ্রিম কোর্ট। উপাচার্য নিয়ে নিয়োগ মামলায় রাজ্যের হয়ে সুপ্রিম কোর্টে সওয়াল করেন অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি।
স্থায়ী প্রধান ছাড়া কোনও প্রতিষ্ঠান কাজ চালাতে পারে না! কেন আচার্যকে শুধুমাত্র একটি নামের তালিকা পাঠিয়ে দিলেন মন্ত্রী? রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজ্যপালের সঙ্গে সরকারের সংঘাতের আবহ। ঠিক এই পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকারের দায়ের করা মামলায় আচার্য ও রাজ্যপাল এবং রাজ্য সরকার - উভয়েরই দায়িত্বের কথা মনে করিয়ে দিল সর্বোচ্চ আদালত।
পাশাপাশি এ ক্ষেত্রে, বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থই যে সবার আগে, তাও বুঝিয়ে দিল সুপ্রিম কোর্ট। আচার্য-রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসের বিরুদ্ধে একতরফা উপাচার্য নিয়োগের যে অভিযোগ করেছিল রাজ্য সরকার সেই অভিযোগের বিষয়েও এখনই কোনও হস্তক্ষেপ করল না সুপ্রিম কোর্ট।
এর আগে আচার্য ও রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস রাজ্যের ৮টি বিশ্ববিদ্য়ালয়ে নতুন অন্তর্বর্তী উপাচার্য নিয়োগ এবং ৩ জন উপাচার্যের মেয়াদ বৃদ্ধির নির্দেশ দেন তখন থেকেই এই সংঘাত সপ্তমে পৌঁছেছে। এই নিয়োগকে চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাইকোর্টের জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়। কিন্তু, উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজ্যপাল যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, তাতেই মান্যতা দেয় হাইকোর্ট।
এরপর সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় রাজ্য সরকার। শিক্ষাক্ষেত্রে নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে যখন বাংলাজুড়ে তোলপাড় চলছে, তখন এদিন উপাচার্য নিয়োগ সংক্রান্ত মামলায় সুপ্রিম কোর্ট তার পর্যবেক্ষণে উল্লেখ করেছে, স্বচ্ছতা বজায় রেখে নিয়োগ প্রক্রিয়া হওয়া উচিত। আচার্য নাকি রাজ্য সরকার, কে সবচেয়ে দক্ষ, আমরা তা নিয়ে ভাবিত নই। কিন্তু প্রতিষ্ঠানের স্বার্থে কেন, উভয়ে মিলে সমস্যার সমাধান করতে পারলেন না? সমস্ত যোগ্য প্রার্থীদের আবেদনের ভিত্তিতে, যোগ্যতমকে বেছে নেওয়া হোক।
চৌঠা অগাস্ট, বাংলার ৩১টি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগে সার্চ কমিটি গঠনের জন্য,দ্য ওয়েস্ট বেঙ্গল ইউনিভার্সিটি লজ অ্যামেন্ডমেন্ড বিল পাস করায় সরকারপক্ষ। এতদিন রাজ্যে উপাচার্য নিয়োগের সার্চ কমিটিতে ৩ জন প্রতিনিধি থাকতেন। নতুন বিল অনুযায়ী, সার্চ কমিটিতে রাখা হয়েছে ৫ জনকে। সেই বিলে আপত্তি তুলে বিজেপি যুক্তি দেয়, উপাচার্য নিয়োগে যে সার্চ কমিটি গড়া হয়েছে, তাতে ৫ জনের মধ্যে, রাজ্য সরকারের তরফেই ৩ জন প্রতিনিধি থাকছেন। ফলে বিরোধীদের আশঙ্কা, উপাচার্য নিয়োগের ক্ষেত্রে রাজনীতি হবে।
সুপ্রিম কোর্ট এদিন জানতে চায়, আচার্যকে কি এই মামলায় পক্ষ করা হয়েছে? রাজ্য সরকারের তরফে আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভি জানান,আচার্য এই মামলায় পক্ষ নন। তবে সেটা করার জন্য যা পদক্ষেপ নেওয়ার, আমরা করব। এরপরই সুপ্রিম কোর্ট,সবপক্ষ নোটিস দেওয়ার কথা বলে, ২ সপ্তাহ পরে মামলার পরবর্তী শুনানি হবে বলে জানিয়েছে।