Jyotipriyo Mullick : বরুণ বিশ্বাস হত্য়াকাণ্ডে পরোক্ষ যোগ ছিল জ্য়োতিপ্রিয়র! বিস্ফোরক অভিযোগ তুলে CBI তদন্তের দাবি পরিবারের
Barun Biswas : ২০১২ সালের ৫ জুলাই ছিল সেই অভিশপ্ত দিন। কলকাতার মিত্র ইন্সটিটিউটশনের শিক্ষক বরুণ বিশ্বাস সবে গোবরডাঙা স্টেশনে নেমে বাড়ির পথ ধরার আগেই কয়েকটা বুলেট এফোঁড়-ওফোঁড় করে দেয় তাঁকে।
ব্রতদীপ ভট্টাচার্য ও সমীরণ পাল, উত্তর ২৪ পরগনা : বরুণ বিশ্বাস হত্য়াকাণ্ডে পরোক্ষ যোগ ছিল জ্য়োতিপ্রিয় মল্লিকের (Jyotipriyo Mullick) ! হত্য়াকারীদের আড়াল করার চেষ্টা করেছিলেন তৃণমূল নেতা ! এমনই বিস্ফোরক অভিযোগ তুলেছেন বরুণ বিশ্বাসের আত্মীয় ও ঘনিষ্ঠরা। পাশাপাশি, খুনের ঘটনায় CBI তদন্তেরও দাবি তুলেছে পরিবার।
রেশন দুর্নীতি মামলায় (Ration Distribution Scam) ইডি-র হাতে গ্রেফতার হয়েছেন জ্য়োতিপ্রিয় মল্লিক। সোমবার তাঁকে ফের ইডি-র হেফাজতে পাঠিয়েছে আদালত।আলোর উৎসব, কালীপুজো কাটবে জেলেই ! কিন্তু এরইমধ্য়ে আরেকটি পরিবারে অন্ধকার নেমে এসেছে সেই ১১ বছর আগে। বিশ্বাস পরিবারে ! গুলিতে ঝাঁঝরা করে দেওয়া হয়েছিল প্রতিবাদী স্কুল শিক্ষক বরুণ বিশ্বাসকে। আর সেই জ্য়োতিপ্রিয় মল্লিকের বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্তের দাবি জোরাল হচ্ছে। গর্জে উঠেছে উত্তর ২৪ পরগনার সুটিয়া।
দোষীদের আড়ালের চেষ্টার অভিযোগ তোলা হয়েছে জ্য়োতিপ্রিয় মল্লিকের বিরুদ্ধে। নিহত বরুণ বিশ্বাসের (Barun Biswas) দিদি প্রমীলা বিশ্বাসের অভিযোগ, জ্য়োতিপ্রিয় এখানকার নেতা। যারা খুন করল, তাদেরকে বাঁচানোর জন্য় উঠে পড়ে লাগে। CID যে তদন্ত করেছে ঠিকমতো হয়নি আমাদের সঙ্গে কথাই বলেনি। পিপি বলত আমি যা শিখিয়ে দেবে, তাই বলবে। ওখানেও তো জ্য়োতিপ্রিয়র প্রভাব। সাক্ষীদের আসতে দেয়নি। ভয় দেখাত। প্রত্য়ক্ষদর্শীদের আসতে দেয়নি। আমার ভাইয়ের খুনের বিচার চাই। চাই সিবিআই তদন্ত চাই।
২০১২ সালের ৫ জুলাই ছিল সেই অভিশপ্ত দিন। কলকাতার মিত্র ইন্সটিটিউটশনের শিক্ষক বরুণ বিশ্বাস সবে গোবরডাঙা স্টেশনে নেমেছিলেন। সবে বাইক নিয়ে বাড়ির দিকে রওনা দিতে যাবেন, তখনই কয়েকটা বুলেট এফোঁড়-ওফোঁড় করে দেয় তাঁকে। কিন্তু ঝকঝকে এই তরুণের এমন মর্মান্তিক পরিণতি হয়েছিল কেন ? সেই গল্প হাড় হিম করার মতো। স্থানীয়দের দাবি, আটের দশকের শেষ দিকে, সুটিয়ায় শুরু হয়েছিল লাগামছাড়া দুষ্কৃতী দৌরাত্ম্য়। এলাকায় একের পর এক গণধর্ষণ, অত্য়াচারের প্রতিবাদে গর্জে উঠেছিলেন বরুণ।
এলাকার মানুষকে সংগঠিত করে প্রতিবাদী মঞ্চ তৈরি করে অত্যাচারীদের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তুলেই দুষ্কৃতীদের দু’চোখের বিষ হয়ে ওঠেন বরুণ বিশ্বাস। এখানেই শেষ নয়, ২০০০ সালে ভয়াবহ বন্য়ার পর, এলাকায় নদী সংস্কারের জন্য় আন্দোলন করেন বরুণরা। স্থানীয় সূত্রে দাবি, পরবর্তীতে এর জন্য় প্রায় ৩৪ কোটি টাকার অনুমোদন আসে। সেই টাকার বড় অংশ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছিল জ্য়োতিপ্রিয় মল্লিকের বিরুদ্ধে। যা নিয়েও সরব হন বরুণ বিশ্বাস। এসবের জেরেই তাঁকে খুন হতে হয়েছিল বলে অভিযোগ।
এক দশকের বেশি সময় পেরিয়ে গেছে। এখনও বরুণ-হত্যার মামলার শুনানি চলছে বনগাঁ মহকুমা আদালতে। চার্জশিটে সুশান্ত চৌধুরী ও এক নাবালক সহ ১০ জনের নাম ছিল। প্রথম দফায় ৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়। পরবর্তীকালে আরও ৩ জন গ্রেফতার হয়। এরই মধ্য়ে জেলেই মৃত্য়ু হয় সুশান্ত চৌধুরীর। বাকি ৯ জনের প্রত্য়েকেরই জামিন হয়ে গেছে। আর যে বরুণ রুখে দাঁড়াতে, বিচারের দাবিতে সরব হতে শিখিয়েছিলেন, তাঁর পরিবারই এখনও বিচারের অপেক্ষায় বসে।
আরও পড়ুন- রেশন দুর্নীতিতে প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রীর ফের ৭ দিনের ইডি হেফাজত