Kolkata Municipal Corporation: ওয়েবসাইটেই মিলবে অবৈধ নির্মাণের তালিকা, প্রতারণা রুখতে বিশেষ পদক্ষেপ, জানাল কলকাতা পুরসভা
Kolkata News: শুধু ফ্ল্যাট কিনতে গিয়ে নয়, অনেক সময় কেনার পরেও ওঠে প্রতারণার অভিযোগ। যে চার দেওয়ালের মধ্যে এতদিনের বসবাস, সেটি বৈধভাবে তৈরি হয়নি জানার পর যেন মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে।
অনির্বাণ বিশ্বাস, কলকাতা: প্রতারণার হাত থেকে শহরবাসীকে রক্ষা করতে নয়া উদ্যোগ কলকাতা পুরসভার (Kolkata Municipal Corporation)। অবৈধ ভাবে নির্মিত বিল্ডিংয়ের তালিকা এ বার প্রকাশ করবে তারা। পুরসভার ওয়েবসাইটে মিলবে তার পূর্ণাঙ্গ তালিকা। যে ভাবে লাগাতার অবৈধ নির্মাণের (Illegal Construction) অভিযোগ উঠে আসছে, তার প্রেক্ষিতেই এমন পদক্ষেপ পুরসভা কর্তৃপক্ষের।
প্রতারণা রুখতে পদক্ষেপ কলকাতা পুরসভার
নগরায়ণের জোয়ারে সবুজ-সতেজ সব কিছু ফুঁড়ে নিত্যনতুন বিল্ডিং গজিয়ে উঠছে শহরের ইতিউতি। তাতে একচিলতে মাথাগোঁজার জায়গা পেতে সর্বস্ব উডজাড় করে দিচ্ছেন সাধারণ মানুষ। চড়া সুদে মোটা টাকার ঋণ নিতেও পিছপা হচ্ছেন না। কিন্তু গগনচুম্বী বহুতলের টপ ফ্লোরে সংসার পাতার স্বপ্ন দেখলেই হল না, সেটি আদৌ বৈধ কিনা, তা জানা জরুরি। সেই সংক্রান্ত যাবতীয় প্রশ্নের উত্তর দিতেই নয়া পদক্ষেপ কলকাতা পুরসভার। পুরসভা সূত্রে খবর, শহরবাসীকে অসাধু প্রোমোটারদের হাত থেকে বাঁচাতে এবার প্রকাশ করা হবে শহরের সব অবৈধ বিল্ডিং-এর তালিকা। তা আপলোড করা হবে পুরসভার ওয়েবসাইটে।
শুধু ফ্ল্যাট কিনতে গিয়ে নয়, অনেক সময় কেনার পরেও ওঠে প্রতারণার অভিযোগ। যে চার দেওয়ালের মধ্যে এতদিনের বসবাস, সেটি বৈধভাবে তৈরি হয়নি জানার পর যেন মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে। পুরসভা সূত্রে খবর, এরকম ভূরি ভূরি অভিযোগ জমা পড়ছে প্রতিদিন। টক টু মেয়র অনুষ্ঠানেও আসছে অভিযোগ।
আরও পড়ুন: Nupur Sharma: বারবার তলবেও বেপাত্তা নূপুর ! বিজেপি নেত্রীর বিরুদ্ধে লুক আউট নোটিস কলকাতা পুলিশের
কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমের (Firhad Hakim) কথাতেও সেই উদ্বেগ ধরা পড়েছে। তিনি বলেন, "প্রোমোটারা আগে বেআইনি বিল্ডিং তৈরি করেছে। এখন আমরা আটকে দিচ্ছি। কারণ সাব অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার সাসপেন্ড হচ্ছেন। তাই প্রবণতা কমেছে। মুখ্যমন্ত্রী অনেক ছাড় দিয়েছেন। আগে ঠিকাতে বেআইনি কাজ হতো। এখন ছাড় হয়েছে। তাই প্রবণতা কমেছে। ঠিক ১৫ দিনের মধ্যে পরিষেবা মিলছে। লোকজন না জেনেই কিনছেন। তাই ওয়েবসাইটে সব তুলে দিলে লোকে বুঝবেন, কোটা বেআইনি, কোনটা বৈধ। রেজিস্ট্রি করার আগেই দেখতে পাবেন। রেজিস্ট্রি অফিসকেও জানাব। প্রচারেও আনব বিষয়টি।"
পাশাপাশি, নো ডিউ সার্টিফিকেট নিয়েও সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ কমাতেও নেওয়া হচ্ছে উদ্যোগ। পুরসভা সূত্রে খবর, অনেক সময় সম্পত্তির অ্যাসেসমেন্ট-এর পর দেখা যায়, কোনও নির্দিষ্ট জমির ওপর বিপুল পরিমাণ কর বকেয়া রয়ে গিয়েছে। আর সেই বকেয়ার চাপ এসে পড়েছে নতুন ফ্ল্যাটের মালিকদের ওপরে। তা যাতে না হয়, তার জন্য এবার থেকে জমি বিক্রির সঙ্গে সঙ্গে অ্যাসেসমেন্ট করা হবে। দেখা হবে ওই জমির কোনও কর বকেয়া রয়েছে কিনা। তারপর মিলবে নো ডিউ সার্টিফিকেট।
দুর্ভোগ কমাতে উদ্যোগী পুরসভা
মেয়র ফিরহাদ বলেন, "নো ডিউ সার্টিফিকেট দিচ্ছিলাম। আমাদের গাফিলতি হচ্ছিল এটা। ওঁরা চেপে যাচ্ছিলেন কত ডিউ আছে। ফলে নতুন যিনি নিচ্ছেন,তাঁর উপর টাকা চাপছে। তাই এ বার থেকে অ্যাসেসমেন্ট হলে তবেই সার্টিফিকেট।" পুরসভার এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন সাধারণ মানুষ। তবে প্রকাশ করার মতো অবৈধ নির্মাণের পূর্ণাঙ্গ তালিকা পুরসভার হাতে আছে কি, উঠে আসছে এমন প্রশ্নও।