Kolkata Neurosciences Institute: অবস্থা সঙ্কটজনক ছিলই, বাঁচানো গেল না নিউরোসায়েন্সেস-এর রোগীকে, হাসপাতালে মৃত্যু
Kolkata News: শনিবার ঘড়ির কাঁটায় বেলা তখন সাড়ে ১১টা বাজে। আচমকা শোরগোল পড়ে যায় মল্লিকবাজারের ইনস্টিটিউট অফ নিউরো সায়েন্সেস চত্বরে। কার্নিশের উপর বসে থাকতে দেখা যায় এক রোগীকে।
কলকাতা: আশঙ্কাজনক অবস্থায় ভর্তি ছিলেন হাসপাতালে (Kolkata Neurosciences Institute)। কিন্তু ২৪ ঘণ্টাও কাটল না। মৃত্যু হল মল্লিকবাজারের ইনস্টিটিউট অফ নিউরো সায়েন্সেস-এর কার্নিশ থেকে পড়ে যাওয়া রোগী সুজিত অধিকারীর। চিকিত্সকরা জানিয়ছেন ঘটনার পর থেকে জ্ঞান আসেনি সুজিতের। ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছিল। সুজিতের মৃত্যুর পর হাসপাতালে ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরা। শনিবারই মল্লিকবাজারের ইনস্টিটিউট অফ নিউরো সায়েন্সেস চথেকে ছাড়া পাওয়ার কথা ছিল ৩৩ বছরের সুজিতের।
বাঁচানো গেল না সুজিত অধিকারীকে
শনিবার ঘড়ির কাঁটায় বেলা তখন সাড়ে ১১টা বাজে। আচমকা শোরগোল পড়ে যায় মল্লিকবাজারের ইনস্টিটিউট অফ নিউরো সায়েন্সেস চত্বরে (Kolkata News)। হাসপাতালের রোগী থেকে পরিজন, পথচারী সকলের নজর ঘুরে যায় হাসপাতালের কার্নিশের দিকে। তার উপর বসে থাকতে দেখা যায় এক রোগীকে। এই দৃশ্য দেখে মুহূর্তের মধ্যে হাসপাতালের নিচে ভিড় জমে যায়।
হাসপাতাল সূত্রে খবর, জানলা দিয়ে বেরিয়ে আট তলার কার্নিশে চলে যান ওই রোগী। নিচের দিকে তাকিয়ে তাঁকে হাত নাড়তেও দেখা যায়। নানারকম অঙ্গভঙ্গি করতে দেখা যায় সুজিত অধিকারী নামের ওই রোগীকে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান দমকল এবং বিপর্যয় মোকাবিলা কর্মীরা। ছিলেন হাসপাতালের কর্মীরাও।
কোনও রকমে ওই রোগীকে উদ্ধারের চেষ্টা চালানো হয়। ইশারা করে সুজিতকে বুঝিয়ে নামানোর চেষ্টা করতে থাকেন। কিন্তু কিছুতেই লাভ হয়নি। বরং সুজিত উপর থেকে পর পর কিছু জিনিস চাইতে শুরু করেন। তাঁর কাছে পৌঁছে দেওয়া হয় কোল্ড ড্রিঙ্ক, খাবার। স্কাই লিফট আনা হয়। তাতে নিরস্ত করা যায়নি তাঁকে। বরং এর পর তিনি আবার ঝাঁপ দেওয়ার হুমকি দেন। এর পরই কার্নিশ থেকে ঝুলে পড়েন তিনি। প্রায় লাফ দেওয়ার উপক্রম হয়। নিচে জাল আনার ব্যবস্থা করা হয়।
কিন্তু তাতেও শেষরক্ষা হয়নি। বরং কার্নিশ থেকে ঝুলে থাকা অবস্থায় হাত ফস্কে যায় সুজিতের। তাতেই সটান নিচে এসে পড়েন তিনি। তার পর হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাঁকে। জানা যায়, অবস্থা সঙ্কটজনক। এপর পরই সন্ধেয় সুজিতের মৃত্যুর খবর আসে।
পরিবার সূত্রে খবর, পরিবার বলতে বাড়িতে রয়েছেন সুজিতের ৮৭ বছরের ঠাকুমা, ৯ এবং ২.৫ বছরের দুই ছেলে। লোহার ছাঁটের ব্যবসা করতেন সুজিত। ২০-২৫ দিন আগে তাঁর স্ত্রী রিয়া অধিকারী মারা যান। মৃত্যুর মাস দুয়েক আগে কিডনির সমস্যা ধরা পড়ে তাঁর। স্ত্রীর চিকিৎসা করাতে প্রায় ২৫ লক্ষ টাকা খরচ হয়ে যায় সুজিতের। ধারদেনা করে সেই টাকা জোগাড় করেছিলেন তিনি। তাতেও বাঁচাতে পারেননি স্ত্রীকে।
আট তলার কার্নিশ থেকে পড়ে মৃত্যু
স্ত্রীর মৃত্যুর পর থেকেই সুজিত হতাশায় ডুবে যান বলে জানা গিয়েছে। মাঝে মাঝে খিঁচ ধরত বলেও জানা গিয়েছে। গত ২৩ জুন বাড়ির শৌচাগারে পড়ে যান তিনি। হাসপাতালে নিয়ে গেলে অজ্ঞান হয়ে যান। তার পর মল্লিকবাজারের ইনস্টিটিউট অফ নিউরো সায়েন্সেস-এ আনা হয় (Kolkata News)। এ দিন কাণ্ড শুনে সুজিতের বড় ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে কার্নিশের নিচে হাজির হন তাঁর ঠাকুমা, যাতে ছেলেকে দেখে মায়া হয়, কার্নিশ থেকে নেমে আসেন সুজিত। কিন্তু তাতেও মন পাল্টায়নি সুজিতের।