Kunal Ghosh: 'কেউ যদি নিজেকে অরণ্যদেব ভেবে নেন, সেটা দুর্ভাগ্যজনক', কাকে নিশানা কুণালের
Recruitment Case: কুণাল বলেন, 'বিচারকের চেয়ারে বসে রাজনৈতিক বক্তৃতা করা বন্ধ হোক।' যদিও গোটা বক্তব্যের সময় কোনও নাম উচ্চারণ করেননি কুণাল ঘোষ।
কলকাতা: নিয়োগ দুর্নীতির মামলা প্রসঙ্গে বিস্ফোরক তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। এখানে নিয়োগ নিয়ে যে সমস্যা হয়েছে তার জট খোলার চেষ্টা হচ্ছে। তার মধ্যে কারও নাম না করে বিচারব্যবস্থার একটি প্রসঙ্গ তুলে সরব হন কুণাল।
কী বলেছেন কুণাল:
কুণাল ঘোষ বলেন, 'বিচারব্যবস্থার প্রতি আমাদের পূর্ণ আস্থা আছে। বিচারব্যবস্থা ঠিক আছে বলেই সমাজ দাঁড়িয়ে আছে। বিচারপতিরা নির্দেশ দিলে মানুষ মাথা পেতে নেয়। গোটা বিচারব্যবস্থাই ন্যায়ের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। কিন্তু কেউ যদি নিজেকে অরণ্যদেব ভেবে নেন, সেটা দুর্ভাগ্যজনক। সরকারের ভুল হলে নিশ্চয় বলবেন। কিন্তু তার জন্য একটা দল তুলে দিতে বলবেন! কেউ যদি বলেন আমার দল তুলে দেবেন, আমি কি তাঁকে রসগোল্লা খাওয়াব?'
এদিন কুণাল আরও বলেন, 'মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে জট খোলার চেষ্টা করা হচ্ছে। বাংলাকে বদনাম করতে চাইছেন? আর আপনি হিরো সেজে বলবেন দালাল মুখপাত্র! একটা দল তুলে দিতে বলছেন, এটা হয়? এই ধরনের ব্যক্তিপ্রচার কেন্দ্রিক প্রবণতা কেউ মেনে নেবে না। যখনই জট খোলার চেষ্টা হচ্ছে, তখনই আবার মামলা। একজন মঙ্গলগ্রহ থেকে এসে অরণ্যদেব সাজছেন, আর কেউ কিছু করছে না, এটা ভাববেন না। চেয়ারের সুরক্ষাকবচ নিয়ে রাজনৈতিক অ্যাজেন্ডা পূরণ করার চেষ্টা করবেন না। বিচারকের চেয়ারে বসে রাজনৈতিক বক্তৃতা করা বন্ধ হোক।' যদিও গোটা বক্তব্যের সময় কোনও নাম উচ্চারণ করেননি কুণাল ঘোষ।
এর আগে:
নিয়োগ নিয়ে ‘বেনামি আবেদন’ মামলা প্রসঙ্গেই শিক্ষাসচিব মণীশ জৈনকে ডেকে পাঠিয়েছিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। বিচারপতচির এজলাসে এসে শিক্ষাসচিব জানান, অতিরিক্ত শূন্যপদ তৈরি হয় করা হয় শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর নির্দেশে। 'উপযুক্ত স্তর থেকে নির্দেশ এসেছিল, শিক্ষামন্ত্রীর নির্দেশ এসেছিল। শিক্ষামন্ত্রী আইনি পরামর্শ নেওয়ার কথা বলেছিলেন। আইন দফতরের সঙ্গে কথা হয়েছে, এজি-র সঙ্গে কথা হয়েছে। এসএসসি চেয়ারম্যানের সঙ্গেও কথা হয়। মুখ্যসচিবকে জানিয়ে ক্যাবিনেটে নোট পাঠানো হয়।' বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের প্রশ্নের মুখে জানালেন শিক্ষাসচিব মণীশ জৈন। এর পরেই বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, 'আমি বিস্মিত যে কীভাবে ক্যাবিনেটে এই ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হল? ক্যাবিনেটকে বলতে হবে যে তাঁরা অযোগ্যদের পাশে নেই। ১৯ মে-র বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহার করতে হবে। না হলে এমন পদক্ষেপ করব যেটা গোটা দেশে কখনও হয়নি। হয় গণতন্ত্র সঠিক হাতে নেই, না হলে গণতন্ত্র বিকশিত হয়নি। আমি ক্যাবিনেটকে পার্টি করে দেব, সবাইকে এসে উত্তর দিতে হবে। আমি ইলেকশন কমিশনকে বলব তৃণমূল কংগ্রেসের লোগো প্রত্যাহার করার জন্য। দল হিসাবে তাদের মান্যতা প্রত্যাহার করতে বলব নির্বাচন কমিশনকে। সংবিধান নিয়ে যা ইচ্ছে করা যায় না।' হুঁশিয়ারি বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের। তাঁর আরও মন্তব্য, 'আমি মুখ্যমন্ত্রীর যন্ত্রণা বুঝতে পারি, কিন্তু কিছু দালাল মুখপাত্র বলে পরিচিত। তাঁরা আদালতের নামে যা ইচ্ছে বলছে। তাঁরা বলছে যে, নিয়োগ হলেই আদালতে গিয়ে স্থগিতাদেশ নিয়ে আসছে। আদালত কি এগরোল নাকি যে আসলেই স্থগিতাদেশ পেয়ে যাবে?'
শূন্যপদে অযোগ্যদের নিয়োগে 'বেনামি আবেদন' মামলায় ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশের উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। তিন সপ্তাহের জন্য স্থগিতাদেশ দেয় প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ। ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল রাজ্য ও এসএসসি। প্রসঙ্গত গত কাল ‘বেনামি আবেদন’ নিয়ে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের বেঞ্চের রায়ই বহাল রেখেছিল ডিভিশন বেঞ্চ। সঙ্গে প্রশ্ন তুলেছিল, 'কী ভাবে অবৈধদের চাকরি দিতে এরকম আবেদন করল স্কুল সার্ভিস কমিশন?'
আরও পড়ুন: 'আপনার বাবা সিনিয়র নেতা, তাঁকে সম্মান করি', শুভেন্দুকে বললেন মমতা