Madan Mitra : ‘নদিয়া জেলার নেতাদের পকেট ভারী হয়ে গেছে’,দলীয় নেতৃত্বকেই তোপ মদন মিত্র-র
TMC Controversy : নদিয়ায় যাঁরা দায়িত্বে ছিলেন, তাঁরা নিজেদের পকেকটা বড্ড ভারী করেছেন। হরিণঘাটায় দলের নেতৃত্বের একাংশকে উদ্দেশ্য করে এই মন্তব্য করলেন তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্র।
সুজিত মণ্ডল, নদিয়া : গিয়েছিলেন দলের শ্রমিক সংগঠন INTTUC-র রক্তদান শিবিরের উদ্বোধন করতে। নদিয়ার (Nadia) হরিণঘাটায় সেই অনুষ্ঠানের মঞ্চেই দুর্নীতির প্রসঙ্গে দলের একাংশকে কাঠগড়ায় তুললেন মদন মিত্র (Madan Mitra)। নিজের ফেসবুক (Facebook) পেজেও সেই ভিডিও পোস্ট করেছেন তৃণমূল বিধায়ক। যেখানে মদন মিত্রকে বলতে শোনা গিয়েছে, 'নদিয়া জেলায় যাঁরা দীর্ঘদিন ধরে দায়িত্বে ছিলেন, তাঁরা কার কী করেছেন আমি জানি না, তাঁরা নিজেদের পকেটটা বড্ড ভারী করেছেন।' আর তৃণমূল বিধায়কের যে বক্তব্যের পরই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর।
মদনের দুর্নীতি-বার্তায় রাজনৈতিক চাপানউতোর
জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশ অবশ্য পুরোপুরি দুর্নীতির অভিযোগ উড়িয়ে দিচ্ছে না। রানাঘাট উত্তর-পূর্বের প্রাক্তন বিধায়ক তথা তৃণমূল (TMC) নেতা সমীর পোদ্দার বলেছেন, 'হয়তো কিছু ক্ষেত্রে এমন ঘটনা ঘটতেও পারে। যেহেতু তিনি নদিয়া জেলার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। সেই হিসাবে হয়তো তিনি বিশেষ কোনও তথ্য জানেন। তবে আমাদের সেই সম্পর্কে কিছু জানা নেই। আমাদের কোনরকম দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত বা পকেট ভারী করার মতো অবস্থান সেই অর্থে চোখে পড়েনি।' গোটা ঘটনা নিয়ে কটাক্ষ ছুড়তে দেরি করেনি বিজেপি (BJP)। রানাঘাট উত্তর-পূর্বের বিজেপি বিধায়ক অসীম বিশ্বাস বলেছেন, 'এই রাজ্যের একাধিক পঞ্চায়েত, একাধিক জেলায় কোটি কোটি টাকার দুর্নীতি হচ্ছে। কোন পুকুর না কেটে, সেখান থেকে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ হয়েছে। তাই আমি মদন মিত্রের কথাকে সমর্থন জানাই। কারণ তৃণমূলের বাস্তব চিত্র ও চরিত্রটা তিনি তুলে ধরেছেন।'
নদিয়ার রাজনৈতিক চিত্র
যে হরিণঘাটায় (Haringhata) দাঁড়িয়ে মদন মিত্র এই বার্তা দিয়েছেন, তা তৃণমূলের রানাঘাট দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলার মধ্যে পড়ে। যার মধ্যে শান্তিপুর বাদ দিয়ে ৭টি বিধানসভা কেন্দ্রই বিজেপির দখলে আছে। এই প্রেক্ষাপটে, পঞ্চায়েত ভোটের দিকে তাকিয়ে কর্মীদের সতর্ক করে দিয়েছেন মদন মিত্র। তৃণমূলের রাজ্য কমিটির সদস্য বলেছেন, 'আপনাদের বলি, ভোটটা থাকে কৃষকের ঘরে। কৃষকের ঘরে ভোটটা থাকে। টেন্ডারের কাগজের মধ্যে ভোট থাকে না। তাই পার্টির নেতৃত্ব কোনও টেন্ডার নিয়ে ব্যস্ত থাকলে, আর ভেন্ডার পকেটে আসবে না।'
প্রসঙ্গত, ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনে নদিয়া জেলার ১৭টি কেন্দ্রের মধ্যে বিজেপি জেতে ৯টিতে। তৃণমূলের দখলে যায় ৮টি। পরে উপনির্বাচনে (By Election) জিতে, বিজেপির থেকে শান্তিপুর ছিনিয়ে নেয় তারা। তারপরেও প্রশ্ন ওঠে, তৃণমূলের দূর্নীতির কারণেই কি বেশি আসন ঝুলিতে পুরেছে বিজেপি? মদন মিত্র কি সেটাই বোঝাতে চেয়েছেন?
২০১৮-র পঞ্চায়েত ভোটের ফলাফলে, নদিয়া জেলায় একছত্র আধিপত্য দেখিয়েছিল তৃণমূল। ২০২৩-এর পঞ্চায়েত ভোটে কী হয়, এখন সেটাই দেখার।
আরও পড়ুন- জে পি নাড্ডার বঙ্গসফরের মাঝে বাংলা ভাগ নিয়ে বিভক্ত বিজেপি