Malda: 'তৃণমূলকে চোর বললে...', কী করা হবে? হুঁশিয়ারি তৃণমূল জেলা সভাপতির
Panchayat Election:পঞ্চায়েত ভোট যত এগোচ্ছে, ততই বাড়ছে হুমকি হুঁশিয়ারির স্রোত। কয়েকদিন আগে প্রকাশ্যে সভা থেকে কংগ্রেস ও সিপিএম প্রচারে গেলে তাদের দাওয়াই দেওয়ার বিধান দিয়েছিলেন আব্দুর রহিম বক্সী।
করুণাময় সিংহ, মালদা: ফের শিরোনামে মালদা জেলার তৃণমূল সভাপতি এবং বিধায়ক আব্দুর রহিম বক্সী। এবার তাঁর নিশানায় বিরোধীরা। তৃণমূলকে চোর বললে বাটন চলবে বলে হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
এর আগে আব্দুর রহিম বক্সী বলেছিলেন, 'যারা আপনাদের বাড়িতে যাবে, সেই কংগ্রেস, সিপিএমকে ধরুন, আচ্ছা করে দাওয়াই খাওয়ান, যাতে করে আর কোনওদিন কংগ্রেসের নাম নিয়ে পাড়ায় ঢুকতে না পারে, ঘুরতে না পারে।' পরে মঞ্চ থেকে তৃণমূল নেতা ও বিধায়ক বলেন, 'দ্বিতীয়বার এরকম চোর চোর কথা বললে মালদায় এসে, বাটন চলবে তোমাদের ওপরে।'
পঞ্চায়েত ভোট যত এগোচ্ছে, ততই বাড়ছে হুমকি হুঁশিয়ারির স্রোত। কয়েকদিন আগে প্রকাশ্যে সভা থেকে কংগ্রেস ও সিপিএম প্রচারে গেলে তাদের দাওয়াই দেওয়ার বিধান দিয়েছিলেন। আর এবারও তৃণমূলের মালদা জেলার সভাপতির নিশানায় কংগ্রেস। রবিবার মালদার কালিয়াচকে কংগ্রেসের যোগদান কর্মসূচিতে গিয়ে তৃণমূলকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন কৌস্তভ বাগচী। মঙ্গলবার সেই কালিয়াচকেই জনসভা থেকে কংগ্রেস নেতার নাম করে কার্যত হুমকি দেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি। তিনি বলেন, 'বন্ধু কৌস্তভ বাগচী জেনে রাখো, এটা সুজাপুর কালিয়াচকের মাটি। তোমাকে প্রথমবার ছাড় দেওয়া হয়েছে। দ্বিতীয়বার এরকম চোর চোর কথা বললে মালদায় এসে, বাটন চলবে তোমাদের ওপরে, মালদার মানুষ তোমাদের ছেড়ে কথা বলবে না।'
পাল্টা কংগ্রেস নেতা কৌস্তভ বাগচী বলেন, 'এরপরের যখন যাব আমি রহিম বাবুকে বলেই যাব।'
সম্প্রতি, মুর্শিদাবাদের সংখ্যালঘু অধ্যুষিত সাগরদিঘি বিধানসভা কেন্দ্র হাতছাড়া হয়েছে তৃণমূলের। মাত্র দেড় বছর আগে, বিধানসভা নির্বাচনে, যে কেন্দ্রে ৫০ হাজারের বেশি ভোটে জিতেছিলেন তৃণমূল প্রার্থী, জোটবদ্ধ ভাবে লড়ে সেই আসনই প্রায় ২৩ হাজার ভোটে জয়ী হয়েছেন বাম সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থী। পঞ্চায়েত ভোটে সাগরদিঘির পুনরাবৃত্তি আটকাতে এখন মরিয়া তৃণমূল।
মুর্শিদাবাদের প্রতিবেশী জেলা মালদা। এই জেলাও সংখ্যালঘু অধ্যুষিত। সেখানেই জনসভা থেকে কংগ্রেসের পাশাপাশি দলত্যাগী তৃণমূল কর্মীদেরও চাঁচাছোলা ভাষায় আক্রমণ শানিয়েছেন আব্দুর রহিম বক্সী। মালদা জেলা তৃণমূল সভাপতি বলেন, 'সত্যিকারের যদি সে তৃণমূল করত তাহলে দল ছাড়ত না। সত্যিকারের যদি সে তৃণমূল করত তাহলে পদের লোভে কংগ্রেসে যেত না। তাই তাকে সমাজে বয়কট করতে হবে বন্ধু। সমাজে যে পথে হাঁটবে তাকে ধিক্কার দিতে হবে। সমাজে যেই পথে চলবে মাথার ওপরে থুতু ফেলবেন। যারা দলকে ভাঙিয়ে ১০টি বছর দলের সমস্ত কিছু শোষণ করে খেল, সমস্ত রস শোষণ করল আর দলের বিপদের সময় এসে দল ছেড়ে টাকার বিনিময়ে পালিয়ে গেল।'
পাল্টা কটাক্ষ করেছে বিরোধীরাও:
মানিকচকের প্রাক্তন কংগ্রেস বিধায়ক মোত্তাকিন আলম বলেন, 'পায়ের নীচের মাটি সরে গেছে বলে তৃণমূল এসব বলছে। ভয়ের বাতাবরণ তৈরির চেষ্টা। মানুষ পঞ্চায়েত ভোটে এর জবাব দেবে।' বিজেপির দক্ষিণ মালদা সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক বলেন, 'এখন বিরোধীদের বাজনীতি করাই দুসহ হয়ে গেছে তৃণমূলের এসব শাসানিতে। এখন বলছে দল ছাড়লে বয়কট করব, বিরোধীদের বাটাম মারব। পুরোটাই অসাংবিধানিক।'
পঞ্চায়েত ভোটের দিনক্ষণ এখনও ঘোষণা হয়নি। তার অনেক আগে থেকেই হুমকি হুঁশিয়ারির রাজনীতি চলছে। এই পরিস্থিতিতে পঞ্চায়েত ভোট কতটা নির্বিঘ্নে হবে, বাড়ছে উদ্বেগ।
আরও পড়ুন: অবশেষে মিলল খোঁজ! খুনে ব্যবহৃত গাড়িটি কার? কী বলল পুলিশ?