TMC Conflict : ৫ মাসে ৭ বার ! তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে মুর্শিদাবাদে মৃত্য়ু একাধিক দলীয় নেতা-কর্মীর
Murshidabad News : পঞ্চায়েত ভোটের আগে বারবার শান্তির বার্তা দিচ্ছে শাসকদল। কিন্তু আদৌ কি নির্বিঘ্নে মিটবে ভোট? এক একটা মৃত্য়ু সেই প্রশ্নটাই জোরাল করছে।
রাজীব চৌধুরী, শিবাশিস মৌলিক ও আশাবুল হোসেন, মুর্শিদাবাদ : বৃহস্পতিবার নওদায় দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে খুন হয়েছেন এক তৃণমূল কর্মী। আর রবিবার বোমাবাজিতে নিহত আরও এক তৃণমূল কর্মী। এই নিয়ে ৫ মাসে ৭ বার। তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে মৃত্য়ু হয়েছে একাধিক দলীয় নেতা-কর্মীর। জখম হয়েছেন বেশ কয়েকজন। তৃণমূলে (TMC) মুষল পর্ব চলছে, কটাক্ষ বিরোধীদের।
৫ মাসে মোট ৭ বার। অভিযোগ, শুধু মুর্শিদাবাদেই তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে কখনও চলল গুলি। কখনও বোমাবাজি। কখনও মৃত্য়ু। কখনও বা গুরুতর জখম হন তৃণমূলের নেতা কর্মীরা। আর প্রত্য়েকটা ঘটনাতেই উঠছে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের অভিযোগ। যা নিয়ে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরীর কটাক্ষ, 'বখরা নিয়ে তাদের মারামারি তীব্র হচ্ছে। কারণ, অন্য়ান্য় জায়গায় কামাই কমে যাচ্ছে। এখন মাংসের টুকরো একটা, কুকুর সেখানে হাজারটা। তো কে কার ভাগ খাবে, তাহলে মারামারি কর নিজেরাই। এবার এই করতে করতে বাংলায় তৃণমূল নামক সন্ত্রাসের যে যদুবংশ আছে, সেই সন্ত্রাসের যদুবংশ ধ্বংস হবে।'
রবিবার, মুর্শিদাবাদের বড়ঞায় বাড়ির অদূরে বোমাবাজিতে খুন হন পঞ্চায়েত সদস্য়র ভাই, তৃণমূল কর্মী আমির শেখ। বড়ঞায় পঞ্চায়েত সদস্য় বনাম তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতির দ্বন্দ্বের জেরেই তাঁকে প্রাণ হারাতে হয় বলে দাবি। এর ঠিক ৩ দিন আগে, বৃহস্পতিবার, নওদায় দু-পক্ষের সংঘর্ষের মধ্য়েই, এক তৃণমূল কর্মীকে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ ওঠে তৃণমূলেরও অপর গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে।
এই বছরের ১৭-ই এপ্রিল সাগরদিঘিতে শ্য়ুটআউটের ঘটনা ঘটে। মৃত্য়ু হয় এক তৃণমূল কর্মীর। পরিবার অভিযোগ করে, দলীয় সংঘর্ষের জেরেই এই খুন। এর আগে, ৯ ই মার্চ নওদায় বোমা ফেটে জখম হন কাবেজুল শেখ নামে এক তৃণমূল কর্মীর। ২ দিন পর মৃত্য়ু হয় তাঁর। চলতি বছরের, পয়লা ফেব্রুয়ারি নবগ্রামে পিকনিক চলাকালীন গুলিবিদ্ধ হন রুবেল শেখ নামে এক তৃণমূল কর্মী। বুকে এফোঁড় ওফোঁড় হয়ে যায় গুলি। কয়েকদিন পর মৃত্য়ু হয় তাঁর। ঘটনায় নবগ্রাম ব্লকের তৃণমূল সভাপতির বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তোলে তৃণমূল কর্মীর পরিবার।
জানুয়ারির ২৪ ও ২৫ মুর্শিদাবাদে পরপর ২ দিন গুলি চলে। বোমাবাজি হয়। ২৪ শে জানুয়ারি মুর্শিদাবাদ থানার আজিমসরার কাছে গুলিবিদ্ধ হন রানিনগরের প্রাক্তন প্রধান আলতাব আলির। সেদিন ছিল লোচনপুর পঞ্চায়েতে প্রধান নির্বাচন। সন্ধেয় বাড়ি ফেরার পথে, তৃণমূল নেতাকে লক্ষ্য় করে চলে গুলি। পরের দিন মৃত্য়ু হয় আলতাব আলির। পর দিন, অর্থাৎ ২৫ শে জানুয়ারি নওদার মধুপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানকে লক্ষ্য করে বোমাবাজি ও গুলি চালানোর অভিযোগ ওঠে। দুটি ঘটনার নেপথ্য়েই তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বলে অভিযোগ। আর এবার সেই মুর্শিদাবাদেই তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে প্রাণ গেল তৃণমূল কর্মীর।
আরও পড়ুন- 'আমাকে কিনে কেউ আনেনি, বিশ্বাসঘাতকতা করিনি' দাবি বায়রনের
পঞ্চায়েত ভোটের আগে বারবার শান্তির বার্তা দিচ্ছে শাসকদল। কিন্তু আদৌ কি নির্বিঘ্নে মিটবে ভোট? এক একটা মৃত্য়ু সেই প্রশ্নটাই জোরাল করছে।
আরও পড়ুন: বাড়িতে সহজ পদ্ধতিতে তৈরি করুন আমন্ড মিল্ক