Howrah News: নলেনগুড়েই পেটের যোগান, লালগোলায় চেপে কলকাতা সফর জেলা ব্যবসায়ীদের
Jaggery Businessman In Kolkata: পিঠেপুলি থেকে রসগোল্লা, কিংবা শুকনো রুটি, নলেনগুড় সহযোগে খেতে কোন বাঙালিই না ভালবাসে, তবে এই নলেনগুড় নিয়েই না বলা অনেককথা সামনে রাখলেন গুড় ব্যবসায়ীরা...
সুনীত হালদার, হাওড়া: শীত মানেই বাঙালির ঘরে ঘরে পিঠেপুলির পর্ব। আর পিঠেপুলির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপাদান নলেনগুড়। বাঙালি রসনা তৃপ্ত করতে হাওড়া এবং কলকাতায় সুস্বাদু নলেনগুড় সরবরাহ করেন নদিয়ার গুড় ব্যবসায়ীরা। তিন মাসের মরশুমি ব্যবসায় বাড়তি লাভের মুখ দেখেন তারা।
বিন্দু বিন্দু খেজুর রসে ভরে ওঠে হাঁড়ি
নদিয়ার বেথুয়াডহরি ও বগুলার বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে খেজুর গাছের চাষ হয়। প্রতিবছর শীত এলেই রসে টইটুম্বুর হয়ে ওঠে খেজুর গাছগুলি। ভোর বেলায় চাষিরা খেজুর গাছের মাথায় মাটির হাঁড়ি বসিয়ে দেন। বিন্দু বিন্দু খেজুর রসে ভরে ওঠে হাঁড়ি। সুস্বাদু এই খেজুর রস থেকেই তৈরি হয় নলেন গুড়। এই শিল্পের সঙ্গে কম করে পাঁচ হাজার চাষী যুক্ত আছেন। তারা খাঁটি খেজুর রসকে কাঠের জ্বালে তৈরি করেন ঘন নলেন গুড় এবং পাটালি।
'আমরা লালগোলা এক্সপ্রেস ধরে চলে আসি শিয়ালদা স্টেশনে'
শীতকালে কলকাতা এবং হাওড়ায় মিষ্টির দোকানগুলিতে নলেন গুড়ের চাহিদার কথা ভেবে ওখানকার গুড় ব্যবসায়ীরা সরাসরি গুড় এখানে পাঠিয়ে দেন। শেখ বশির নামে বেথুয়াডহরীর এক গুড় ব্যবসায়ী বলেন ,'গুড় তৈরির পর ২২ কেজির ড্রামে বন্দি করা হয়। তারপর আমরা লালগোলা এক্সপ্রেস ধরে চলে আসি শিয়ালদা স্টেশনে। সেখান থেকে বাসে করে নিয়ে আসি হাওড়া ময়দানে। হাওড়া ময়দান থেকে ছোট ছোট টোটোর মাধ্যমে হাওড়া শহরাঞ্চলের যেসব বড় বড় মিষ্টির দোকান আছে সেখানে সরবরাহ করি।'
তিন মাসের মরশুমি ব্যবসা
ওই নলেন গুড় থেকেই তৈরি হয় নলেন গুড়ের সন্দেশ, রসগোল্লা এবং রসমালাই এর মতো সুস্বাদু মিষ্টি। এছাড়াও দুধপুলি, পিঠে, পাটিসাপটায় নলেন গুড় অপরিহার্য। তাই শীতে শহরের মানুষের রসনা তৃপ্ত করতে গুড় নিয়ে চলে আসেন শহরে। বাংলা ক্যালেন্ডারের অগ্রহায়ণ, পৌষ এবং মাঘ এই তিন মাস চুটিয়ে ব্যবসা করেন। বেশিরভাগ ব্যবসায়ী বছরের অন্য সময় চাষবাসের কাজে যুক্ত থাকলেও বছরের এই তিনটে মাসের দিকেই কার্যত তারা তাঁকিয়ে থাকেন।
আরও পড়ুন, 'রাজ্যজুড়ে চাকরি লুঠ করেছে TMC সরকার', দাবি শুভেন্দুর
নলেন গুড়ের সন্দেশ, রসগোল্লার পাশাপাশি পিঠে
এক মিষ্টির দোকানের মালিক জানিয়েছেন, 'গুড়ের কোয়ালিটির ওপর তারা দাম দেন। তবে শীতকালে এখন অনেক বাড়িতে পিঠে তৈরির রেওয়াজ উঠে যাওয়ায় ক্রেতারা পিঠে পুলি অথবা পাটিসাপটার স্বাদ পেতে মিষ্টির দোকানের উপর নির্ভর করেন। তাই নলেন গুড়ের সন্দেশ, রসগোল্লার পাশাপাশি পিঠে বিক্রি ভালো হয়।