Nandigram Diwas 2024: নন্দীগ্রাম দিবসে বিজেপি-র অন্দরে বিভাজন? পৃথক কর্মসূচি পালন করলেন শুভেন্দু ও বিক্ষুব্ধরা
Suvendu Adhikari: নন্দীগ্রাম দিবস উপলক্ষে রবিবার নন্দীগ্রামের গোকুলনগরের করপল্লিতে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন কর্মসূচি ছিল।
নন্দীগ্রাম: একই শহিদ মঞ্চে দু'-দু'বার শ্রদ্ধাজ্ঞাপন বিজেপি-র। সকালে প্রথমে শহিদ স্মরণ করলেন শুভেন্দু অধিকারী। দুপুরে সেখানে হাজির হন বিজেপি-র বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠীর লোকজন। দুপুরে দলবল নিয়ে শহিদ বেদিতে শ্রদ্ধা জানাতে যান নন্দীগ্রাম পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ দেবাশিস দাস। শ্রদ্ধাজ্ঞাপনের পর সংবাদমাধ্যমের সামনে ক্ষোভও উগরে দেন তিনি। কেন সকালে ডাকা হল না, তা নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেন। (Nandigram Diwas ২০২৪)
নন্দীগ্রাম দিবস উপলক্ষে রবিবার নন্দীগ্রামের গোকুলনগরের করপল্লিতে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন কর্মসূচি ছিল। কিন্তু একসঙ্গে সকলে শহিদ মঞ্চে উপস্থিত হওয়ার পরিবর্তে, আলাদা আলাদা ভাবে শহিদ বেদিতে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করতে যান রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু এবং দেবাশিস ও তাঁর অনুগামীরা। বিষয়টি নিয়ে চাপানউতোর শুরু হয়েছে। গোকুলনগর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা বিজেপি-র দখলেই রয়েছে। সেখানে বিজেপি নেতৃত্ব কেন আলাদা আলাদা শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করলেন, তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। (Suvendu Adhikari)
এদিন সকালে, প্রথমে শহিদ বেদিতে শ্রদ্ধা জানাতে যান শুভেন্দু। দলের কর্মী-সমর্থকদের একাংশ শুভেন্দুর সঙ্গে সেখানে হাজির হন সকালে। এর কিছু ক্ষণ পর বিজেপি-র বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠী এবং নেতা ও কর্মীদের অন্য একটি অংশ সেখানে উপস্থিত হন। দেবাশিসের পাশাপাশি, দুপুরে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেন অশোক করল-সহ অন্য নেতারা। পৃথক ভাবে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করা নিয়ে কাটাছেঁড়া শুরু হয়ে গিয়েছে।
বিজেপি-র বিক্ষুব্ধ শিবিরের দাবি, ২০০৮ সাল থেকে এই শহিদ স্মরণ সভা করে আসছেন তাঁরা। কিন্তু আজকের শহিদ সমাবেশের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়নি তাঁদের। তাই আলাদা করে এসে শ্রদ্ধা জানালেন তাঁরা। সম্প্রতি গোকুলনগর গ্রাম পঞ্চায়েতে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। বিজেপি পরিচালিত পঞ্চায়েতের প্রধান দীনবন্ধু মণ্ডলের শাস্তির দাবিতে সরব হয়েছেন দেবাশিশ, অশোকেরা। সেই দাবিতে নন্দীগ্রাম থানায় স্মারকলিপিও জমা দেন তাঁরা। তাই পৃথক ভাবে শ্রদ্ধাজ্ঞাপনে যোগ দেওয়ার বিষয়টি যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ, এতে নন্দীগ্রামে বিজেপি-র অন্দরে বিভাজন তৈরি হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
এদিন সংবাদমাধ্যমে দেবাশিস বলেন, "প্রধান যে দলের, আমিও সেই দলের নির্বাচিত সদস্য। বিবেকের তাড়নায় ছুটে বেড়াচ্ছি। ২০২০ সালে শুভেন্দুবাবুর হাত ধরে বিজেপি-তে আসার পর থেকে প্রতিটি সভা-সমিতিতে থেকেছি। গলা ফাটিয়ে বলেছি, চোরমুক্ত, স্বচ্ছ পঞ্চায়েত মানুষকে দেব। নন্দীগ্রাম কলেজ মাঠে শেষ সভা হয়েছিল লোকসভা নির্বাচনের সময়, অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সমর্থনে। সেখানেও চোরমুক্ত বাংলা হবে বলেছিলাম। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য গোকুলনগরে কী হচ্ছে সবাই জানেন। তিন মাস ধরে কোনও সভা হয়নি, কোনও পরিকল্পনা নেই, গরম আসছে, জলের ব্যবস্থা হয়নি। মানুষের সামনে কী করে দাঁড়াব। কী জবাব দেব। কারও বিরুদ্ধে কিছু নয়, সেই বিবেকের তাড়নায় ছুটে বেড়াচ্ছি। দুর্নীতি হয়ে থাকলে যেন ব্যবস্থা নেয় প্রশাসন।"
২০০৭-এর নন্দীগ্রাম আন্দোলনের স্মৃতিতে ১৪ মার্চের পাশাপাশি, ১০ নভেম্বরও, নন্দীগ্রাম দিবস পালন করে ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটি। ওই দিনও নন্দীগ্রামে গুলিচলার অভিযোগ ওঠে। দু'জনের মৃত্যু হয়, ১২ জন নিখোঁজ হন বলে দাবি অভিযোগ। তার পরের বছর থেকেই নন্দীগ্রামে শহিদ স্মরণ সভা হয়ে আসছে। তৃণমূল ছেড়ে শুভেন্দু বিজেপি-তে যাওয়ার পর ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটিতে বিভাজন ঘটে। সেই থেকে তৃণমূল এবং বিজেপি আলাদা ভাবে শহিদ স্মরণ করে আসছে। কিন্তু এবার বিজেপি-রই দু'টি শিবির আলাদা করে শহিদ দিবস পালন করল।