NASA Scientist From Bengal : হারিকেনের আলোয় পড়া, আধপেটা খাওয়া, নবগ্রাম থেকে নাসার জার্নির কথায় মহাকাশবিজ্ঞানী গৌতম চট্টোপাধ্যায়
NASA Scientist Gautam Chatterjee : মহাকাশবিজ্ঞানীর কথায়, ' মা-বাবা একটা কথাই বলতেন, আমাদের মতো আর্থিক অবস্থায় একটাই কাজ, ভালভাবে পড়া শোনা করা।'

ক্লাস নাইন অবধি বাড়িতে ছিল না বিদ্যুতের সংযোগ। হারিকেনের আলোয় পড়াশোনা। আর এই আলো আঁধারিতেই খুঁজে নেওয়া আগামীর উজ্জ্বল পথ। আধপেটা খেয়ে শুয়ে পড়া ছেলেটার যখন রাতে ঘুম ভেঙে যেত, তখন দুচোখে ছিল না যন্ত্রণা, বরং ছিল অনেকটা স্বপ্ন। যে স্বপ্নের স্টেশন কয়েক আলোকবর্ষ দূরের জগৎ ঘিরে। নক্ষত্র, জ্যোতিষ্ক, ছায়াপথে হেঁটে চলত ছেলেটার স্বপ্ন।
অনেকেরই স্বপ্ন হারিয়ে যায়। কিন্তু তাঁর লক্ষ্য ছিল স্থির। তাই তিনি এখন পৃথিবীর অগ্রণী মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্রের মিস্টার ডিপেন্ডেবল। ১২ বছর পার করে দিয়েছেন নাসায়। সম্মানিত হয়েছেন বিশেষ সম্মানে। তিনি মহাকাশ বিজ্ঞানী গৌতম চট্টোপাধ্যায়। এবিপি আনন্দ-র সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট সুমন দে-র সঙ্গে সাক্ষাৎকারে জানালেন, তাঁর হুগলির নবগ্রাম থেকে নাসায় যাওয়ার লম্বা জার্নির কথা। হাসতে হাসতে বললেন, 'আসলে স্বপ্ন দেখতে তো কোনও পয়সা লাগে না, তাই বড় বড় স্বপ্ন দেখা যায়'।
গৌতম বাবু জানালেন, বাড়িতে আসত না নিউজ পেপার। কাছাকাছি ক্লাবে গিয়ে পড়ে ফেলতেন আনন্দবাজার পত্রিকা ও স্টেটসম্যান। বিজ্ঞানের খবরগুলি গিলতেন গোগ্রাসে। মনে মনে হতে যেতেন বিজ্ঞানী। নাসার বিজ্ঞানীদের গবেষণা , আবিষ্কারের কথা পড়ে ভাবতেন....যদি আমিও ....। কিন্তু তার জন্য তো অনেক পড়াশোনা করতে হয়, প্রচুর বই পড়তে হয়। কিন্তু অভাবের সংসার। দুই-সেট বই কেনার ক্ষমতা ছিল না বলে, ছোট ভাইকেও বাবা-মা ভর্তি করিয়ে দিয়েছিলেন তাঁর সঙ্গে একই ক্লাসে। এভাবে একই সঙ্গে পড়াশোনা, এগিয়ে চলা।
মহাকাশবিজ্ঞানীর কথায়, ' মা-বাবা একটা কথাই বলতেন, আমাদের মতো আর্থিক অবস্থায় একটাই কাজ, ভালভাবে পড়া শোনা করা। পড়াশোনা বা অধ্যাবসায়ের কোনও বিকল্প হয় না। আমরা ৬ ভাইবোন তাই করেছি। মন দিয়ে পড়াশোনা করেছি।'
তাঁর স্মৃতিচারণায় উঠে এল স্কুলের ফেলে আসা দিনগুলোর কথা। নবগ্রাম বিদ্যাপীঠের স্যর ভক্ত স্যরের কথা বলতে গিয়ে তিনি বললেন, 'স্যর ক্লাসে এসে বলতেন, সত্যেন বোসের কথা, জগদীশ চন্দ্র বোসের কথা। ভাবতাম ওঁদের মতো যদি হওয়া যায়। মহাকাশ নিয়ে যদি পড়াশোনা করা যায়...'। এই স্বপ্নটাই তাঁকে পৌঁছে দিয়েছিল নবগ্রাম থেকে শিবপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ । শিবপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ থেকে ক্যালিফর্নিয়া টেকনোলজি কলেজ, যেখানে পাশের কেবিনে বসতেন স্টিফেন হকিংস। ক্যালকাটা থেকে ক্যালটেকে পৌঁছোনো বিজ্ঞানীর চোখে এখনও রয়েছে স্বপ্ন, 'আমরা কি এ বিশ্বে একা ? এ বিশ্বে পৃথিবী ছাড়া কি আর কোথাও প্রাণের অস্তিত্ব নেই ?' । মহাকাশবিজ্ঞানী গৌতম চট্টোপাধ্যায়ের গবেষণা এখন তা নিয়েই।
আরও পড়ুন :
'তবলার চক্রব্যূহ করা হত,' হামাগুড়ি দিতে দিতে 'তালে' হাতেখড়ি বিক্রম ঘোষের






















