Kali Puja 2024: পাতা ছিঁড়লে, গাছ কাটলে অঘটন ঘটে, মনোবাঞ্ছা পূরণে দেবীই সহায় সকলের, অত্যন্ত জাগ্রত মোহনপুরের 'শ্যামা মা'
Paschim Medinipur News: পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার একেবারে শেষপ্রান্তে মোহনপুর থানা। সেই থানার সামনেই রয়েছে মন্দির।
অমিত জানা, পশ্চিম মেদিনীপুর: জেলার মানুষ তাঁকে ডাকেন শ্য়ামা মা নামে। পার্শ্ববর্তী রাজ্য় ওড়িশা থেকেতাঁর কাছে পুজো দিতে ছুটে আসেন ভক্তরা। সেই দেবীর পুজো ঘিরেই রয়েছে বিভিন্ন জনশ্রুতি। (Kali Puja 2024)
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার একেবারে শেষপ্রান্তে মোহনপুর থানা। সেই থানার সামনেই রয়েছে মন্দির। মন্দিরে প্রতিষ্ঠিত কষ্টি পাথরের প্রতিমা। ছোট থেকে বড় সবাই বিশ্বাস করেন দেবী খুব জাগ্রত। কিন্তু কী ভাবে শুরু হয়েছিল এই পুজো? কী ভাবেই বা প্রতিষ্ঠিত হল এই মূর্তি? সেই নিয়ে রয়েছে বিভিন্ন জনশ্রুতি। (Paschim Medinipur News)
১৯৬৫ সালে থানার সামনের একটি গাছের নীচে মাটির মূর্তি গড়ে, ঘট বসিয়ে শুরু হয় পুজো। বেশ কিছু বছর এই ভাবে পুজোর পর, একদিন এক বালক গাছের ডাল কাটতে গিয়ে পড়ে যায় গাছ থেকে। শোনা যায়, এরপর থেকে কেউ গাছের ডাল কাটতে গেলে কিংবা পাতা ছিঁড়তে গেলেই ঘটতে থাকে একের পর এক অলৌকিক ঘটনা।
কথিত আছে, তারপরই স্বপ্নাদেশ পেয়ে ১৯৭৭ সালে এই মূর্তি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন মোহনপুর থানার তৎকালীন ওসি শিশির চক্রবর্তী। পরে ২০০৪ সালে গড়ে তোলা হয় শ্য়ামা মায়ের মন্দির। শ্যামা মন্দিরের পুরোহিত তারাশঙ্কর দাস বলেন, "আগে পুজো হতো। পরে সাহেব স্বপ্নাদেশ পেয়ে কষ্টিপাথরের মূর্তি স্থাপন করা হয়। স্বপ্নে বলা হয় পুজো করতে। সেই থেকে শুরু।"
এই মন্দিরে পুজো দিতে পার্শ্ববর্তী রাজ্য় ওড়িশা থেকে ছুটে আসেন ভক্তরা। মানুষের বিশ্বাস চাকরি হোক কিংবা সন্তান লাভ, যে কোনও ধরনের মনোবাঞ্ছা পূরণ করেন মা শ্য়ামা। মনোবাঞ্ছা পূরণ হলে অন্নপ্রসাদ ও মাছ দিয়ে ঠাকুরকে ভোগ দেন ভক্তরা। অন্য় দিকে, মা কালীর মন্দিরের সামনে থাকা সেই বট এবং অশ্বথ গাছের পাতা ছেঁড়া আজও নিষিদ্ধ। মানুষজন বলেন, সেই গাছের পাতা ছিঁড়লে রুষ্ট হন দেবী। কথায় আছে বিশ্বাসে মিলায় বস্তু, তর্কে বহুদূর। তবুও মায়ের প্রতি বিশ্বাস নিয়ে দূর দূরান্ত থেকে ছুটে আসেন মানুষ।
আজ কালীপুজো। কালীঘাট থেকে কামাখ্যা, কালীপুজোয় সতী পীঠে বিশেষ পুজো অর্চনার আয়োজন। দিকে দিকে শক্তির আরাধনা চলছে। কার্তিক মাসের অমাবস্যা তিথির গভীর রাতে যোগিনী পরিবৃতা হয়ে আবির্ভূতা হন মা কালী। জগতে কল্যাণ এবং শান্তি স্থাপনের জন্য ভক্তরা দেবীর আরাধনা করেন। তিনি অসুখ বিনাশিনী। মহা শক্তিধর শুম্ভ-নিশুম্ভের হাত থেকে ত্রিলোককে রক্ষা করতেই দেবীর সৃষ্টি। নরমুণ্ডই দেবীর অলঙ্কার। যুদ্ধে পরাজিত সেনাপতিদের মুণ্ডের মালা মা কালীর কণ্ঠের শোভা। বলা হয়, পঞ্চাশটি মুণ্ডের এই মালা আসলে জ্ঞানের প্রতীক। যে সেনাপতি তাঁর চুল ধরে অপমান করেছিল, তাঁর মুণ্ড দেবী হাতে ধরে থাকেন। মৃত সেনাপতিদের হাতের পাতা দেবী কোমরে ধারণ করেন। শাস্ত্রমতে এই করতলও জ্ঞানের প্রতীক। ভুল করে স্বামী মহাদেবের গায়ে পা তুলে ফেলায় লজ্জিতা রণে উন্মত্ত দেবী।