Rash Mela 2022 : একদিকে শ্যামের মন্দির, আরেকদিকে মাজার, যুগ যুগ ধরে সম্প্রীতির রাসের সাক্ষী বাংলা
Rash Mela 2022 : কোভিড আবহ কাটিয়ে দু'বছর পর রাসকে কেন্দ্র করে ফের বসেছে মেলা।
বিটন চক্রবর্তী, পূর্ব মেদিনীপুর : কার্তিক পূর্ণিমায় ঐতিহ্যের রাস, সেই উৎসবেই মাতোয়ারা পূর্ব মেদিনীপুর। ময়না থেকে পটাশপুর, রীতি মেনেই চলছে উত্সব। চারিদিকে পরিখা ঘেরা ময়নাগড়ের একদিকে রয়েছে শ্যামসুন্দরজিউয়ের মন্দির, আর অন্যদিকে রয়েছে মাজার। বিখ্যাত ময়নাগড়ের সম্প্রীতির রাস । এবছর ৪৬২ বছরে। কোভিড আবহ কাটিয়ে দু'বছর পর রাসকে কেন্দ্র করে ফের বসেছে মেলা। এখানকার শ্যামসুন্দরজিউয়ের নৌবিহার আজও ঐতিহ্য ও আভিজাত্যের সাক্ষ্য বহন করে চলেছে।
কার্তিক পূর্ণিমার রাতে নৌ-রাসযাত্রা
ময়নাগড়ের রাসমেলা এই জেলায় বেশ প্রাচীন ও সমারোহপূর্ণ। এই রাস উৎসবের অন্যতম আকর্ষণ কার্তিক পূর্ণিমার রাতে নৌ-রাসযাত্রা। হাজার হাজার মানুষের সমাগম হয় এই উৎসবকে কেন্দ্র করে।
ইতিহাস বলছে, ১৫৬১ সালে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ময়নার তদানীন্তন রাজা গোবর্ধনানন্দ বাহুবলীন্দ্র প্রচলন করেন ময়নাগড়ের রাস উৎসবের। বাহুবলিন্দ্র পরিবারের এই ময়নাগড়ের রাস সম্প্রীতির এক অনন্য নিদর্শন। রাজবাড়ির একদিকে রয়েছে কুলদেবতা শ্যামসুন্দরজিউ অর্থ্যাৎ কৃষ্ণের মন্দির, আর অন্যদিকে রয়েছে মাজার। আর পুরো রাজবাড়িটি পরিখা দিয়ে ঘেরা।
হিন্দু - মুসলিম দুই সম্প্রদায়ের মানুষের রাস
লাউসেনের ধর্মমঙ্গল কাব্যে উল্লেখ আছে এই ময়নাগড়ের। ময়নাগড়ের রাস উৎসব ঘিরে এলাকার বাসিন্দাদের উৎসাহ উদ্দীপনা চোখে পড়ার মত। তবে করোনা আবহে গত দুবছর সেভাবে জাঁকজমক না হলেও এবারে ময়নার রাস ফিরে পেয়েছে পুরনো মেজাজ। এখানে হিন্দু - মুসলিম দুই সম্প্রদায়ের মানুষই এই রাস উৎসব করে আসছেন।
মন্দির দর্শন করলেন অসংখ্য পুণ্যার্থী
চারিদিকে জলে ঘেরা ময়নাগড়ে যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম হলো নৌকো। সেই নৌকোয় করে এদিনও মন্দির দর্শন করলেন অসংখ্য পুণ্যার্থী। ময়না রাস উৎসবের বিশেষত্ব হলো রাসপূর্ণিমার দিন শ্যামসুন্দরজিউয়ের নৌকাবিহার। মঙ্গলবারও একটি নৌকোকে ভালো করে সাজিয়ে শ্যামসুন্দরজিউকে নিয়ে নৌবিহার করানো হয়।
১৯৭০ সাল থেকে স্থানীয় মেলা কমিটির উদ্যোগে এই রাসমেলা হয়ে আসছে। ময়নাগড়ের রাসমেলায় প্রত্যেকদিনই সকালে ঠাকুরকে নৌকায় করে নিয়ে আসা হয় রাসমঞ্চে। সারাদিন পূজার্চনার পর ফের নৌকায় করে ঠাকুর চলে যান রাজবাড়ির মন্দিরে। নৌ-রাস যাত্রার অপরূপ দৃশ্য দেখতে অসংখ্য মানুষ ভিড় করেছেন।