Kulpi News: কলমের আঁচড়ে নিমেষে জীবিত থেকে মৃত, দু’বছর ধরে নেই বার্ধক্যভাতা, আতান্তরে প্রবীণ দম্পতি
South 24 Parganas News: দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলপির ঘটনা। কুলপি ব্লকের ঢোলাহাট গ্রাম পঞ্চায়েতের তেলে গ্রামের বাসিন্দা বিজয় হাতি।
গৌতম মণ্ডল, কুলপি: দিব্যি বেঁচেবর্তে রয়েছেন তিনি। জোড়াতাপ্পি দেওয়া হলেও, সংসার একটা রয়েছে তাঁর। কিন্তু হঠাৎ একদিন সরকারের খাতায় মৃত প্রতিপন্ন হয়ে গেলেন। বেঁচে থাকতে থাকতেই তাঁকে মৃত ঘোষণা করে দেওয়া হল কলমের আঁচড়ে। বৃদ্ধ বয়সে সরকারি ভাতায় যে টুকু সহায় হতো, বন্ধ হয়ে গেল সেটুকুও। তাতে আক্ষরিক অর্থেই মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ল কুলপির (Kulpi News) এক বৃদ্ধের। স্ত্রী এবং অসুস্থ ছেলেকে নিয়ে বিগত দু'বছর ধরে কোনও রকমে দিন গুজরান হচ্ছে। অসুস্থতার চিকিৎসা পর্যন্ত করাতে পারছেন না। কিন্তু এ দোর, ও দোর ঘুরেও নিজেকে মৃত থেকে জীবিত বলে দেখাতে পারেননি তিনি (Kulpi Local News)।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলপির ঘটনা (South 24 Parganas News)। কুলপি ব্লকের ঢোলাহাট গ্রাম পঞ্চায়েতের তেলে গ্রামের বাসিন্দা বিজয় হাতি। বয়স ৭৯ বছর। বৃদ্ধা স্ত্রী এবং অসুস্থ ছেলেকে নিয়ে অভাবের সংসার। নুন আনতে পান্তা ফুরোয় অবস্থা। তবে দীর্ঘ দশ বছর ধরে বার্ধক্য ভাতা পেয়ে এসেছেন। তাতে একবেলার খাবার অন্তত জুটে যাচ্ছিল। কিন্তু তাতেও কোপ পড়ে বছর দুয়েক আগে।
বিজয় জানিয়েছেন, বছর দুয়েক আগে, একদিন হঠাৎই তাঁর বার্ধক্যভাতা বন্ধ হয়ে যায়। তাতেই আকাশ ভেঙে পড়ে মাথায়। পঞ্চায়েত এবং বিডিও অফিসে গিয়ে খোঁজ খবর নিতে শুরু করেন। তাতে জানতে পারেন, সরকারি নথিতে তাঁকে মৃত বলে দেখা যাচ্ছে। তার জেরেই বন্ধ হয়ে গিয়েছে বার্ধক্য়ভাতা। তিনি যে বেঁচেবর্তে রয়েছেন, তা প্রমাণ করতে মরিয়া হয়ে ওঠেন বিজয়।
আরও পড়ুন: Malda: নদীবাঁধ তৈরিতে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার? কাটমানি অভিযোগে বিদ্ধ তৃণমূল
সেই মতো নথিপত্র নিয়ে, ভাতা পুনরায় চালুর আবেদন নিয়ে পঞ্চায়েতের দ্বারস্থ হন। সেখান থেকে বিডিও, এমনকি জেলাশাসকেরও দ্বারস্থ হন। কিন্তু শত চেষ্টা করেও, ভাতা পুনরায় চালু করাতে পারেননি বিজয়। তার পর থেকে গত দু'বছর ধরে কোনও রকমে বেঁচে রয়েছেন বিজয় এবং তাঁর পরিবার। অসুস্থতার চিকিৎসা পর্যন্ত করাতে পারছেন না।
কলমের আঁচড়ে বিজয়ের আচমকা জীবিত থেকে মৃত হয়ে যাওয়ার ঘটনা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল স্থানীয়রাও। গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য চিত্তরঞ্জন হালদার ভুলও স্বীকার করেছেন। গোটা ঘটনার দায় পঞ্চায়েত কর্মীদের উপরই চাপিয়েছেন তিনি। পঞ্চায়েত প্রধান রুবিয়া বিবি কয়ালের স্বামী, স্থানীয় তৃণমূল নেতা, হোসেন কয়ালও পঞ্চায়েত কর্মীদের উপরই দায় চাপিয়েছেন।
এ নিয়ে প্রশ্ন করলে কুলপির বিডিও সৌরভ গুপ্ত বলেন, "পঞ্চায়েত থেকে ওই নাম বাদ দেওয়া হয়েছিল। পুনরায় ভাতা চালুর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।" পঞ্চায়েত দফতরের কাছে নথি পাঠানো হয়েছে বলেও জানান তিনি। কিন্তু মাঝের দু'বছরের এই হয়রানি, আচমকা জীবিত ব্যক্তিকে মৃত বলে প্রতিপন্ন করার দায় কে নেবেন, মেলেনি সদুত্তর।