Calcutta High Court: 'বেআইনি জেনেও ভাতা ঘোষণা করেছিলেন, মমতা জানতেন খারিজ হবে', কলকাতা হাইকোর্টের রায়ে প্রতিক্রিয়া বিরোধীদের, পাল্টা কুণাল
SSC Group C, Group D Case: কলকাতা হাইকোর্টের এই রায় প্রসঙ্গে আইনজীবী ও সিপিএম-এর রাজ্যসভার সাংসদ বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, 'এই রায় হওয়ারই ছিল।'

কলকাতা: আজ কলকাতা হাইকোর্টে চাকরিহারা গ্রুপ সি ও গ্রুপ ডি কর্মীদের মাসিক ভাতা সংক্রান্ত মামলার রায় দিয়েছেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা। সুপ্রিম কোর্টে রিভিউ মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত চাকরিহারা গ্রুপ সি ও গ্রুপ ডি কর্মীদের মাসিক ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল রাজ্য সরকার। চাকরিহারা গ্রুপ C কর্মীদের ২৫ হাজার ও গ্রুপ D কর্মীদের ২০ হাজার টাকা ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। এরপর এই ভাতা ঘোষণা নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হন ২০১৬ সালে ওয়েটিং লিস্টে থাকা নিজেদের বঞ্চিত বলে দাবি করা চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ। সেই মামলাতেই চাকরিহারা গ্রুপ সি, গ্রুপ ডি কর্মীদের ভাতা দেওয়ার নির্দেশিকায় অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিয়েছেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহা। ২৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বহাল থাকবে নির্দেশ।
বিচারপতি সিনহা তাঁর দেওয়া আদেশের ৩৮ নম্বর পয়েন্টে বলেছেন, 'রিট পিটিশনের মাধ্যমে এই প্রকল্পকে চ্যালেঞ্জ করার ক্ষেত্রে আবেদনকারীদের অবস্থান প্রশ্নের মুখে পড়েছে। নির্দিষ্ট কিছু বেকার ব্যক্তিকে আর্থিক সুবিধা প্রদান করে অন্যদের বঞ্চিত করা বৈষম্যমূলক আচরণ বলে মনে করা হচ্ছে। রাজ্যের অবশ্যই আইনগত ক্ষমতা রয়েছে এবং তারা কল্যাণমূলক ব্যবস্থা প্রণয়ন করতে পারে। তবে একইভাবে একই পদ্ধতি প্রয়োগ করতে হবে একই নিয়মে। এক্ষেত্রে যখন দুই পক্ষের মানুষই ক্ষুধার্ত রয়েছে, তখন রাজ্য কেবল নির্দিষ্ট কিছু ব্যক্তিকে খাবার সরবরাহ করতে পারে না এবং অন্যদের অনাহারে থাকতে দিতে পারে না। বিশেষ করে যখন সমস্ত পক্ষ একই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করেছিল?'
এই মামলার আদেশের ৫১ নম্বর পয়েন্টে বিচারপতি অমৃতা সিনহার পর্যবেক্ষণ, 'এই বিতর্কিত প্রকল্পের মাধ্যমে রাজ্য কর্মসংস্থান নিশ্চিত করার জন্য কোনও ব্যবস্থা করছে না। প্রকল্পটি কোনও বেকার প্রার্থীকে কোনও সরকারি সহায়তাও প্রদান করছে না। বরং মনে হচ্ছে যে, রাজ্য সেই প্রার্থীদের আর্থিক সহায়তা প্রদান করছে যাদের চাকরি আদালতের আদেশে বাতিল করা হয়েছে কারণ এটি প্রতারণাজনিত কারণে হয়েছিল। যারা রাজ্যের কোনও সেবা করছে না, বাড়িতে বসে আছে বা অন্য ক্ষেত্রে নিযুক্ত তাদেরকে এই টাকা দেওয়া আদালতের কাছে গ্রহণযোগ্য বলে মনে হচ্ছে না।'
কলকাতা হাইকোর্টের এই রায় প্রসঙ্গে আইনজীবী ও সিপিএম-এর রাজ্যসভার সাংসদ বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, 'এই রায় হওয়ারই ছিল। রাজ্য সরকারের এই ঘোষণাই তো বেআইনি। সুপ্রিম কোর্ট যেখানে বলেছে টাকা ফেরত দিতে সেখানে রাজ্য সরকার টাকা দিয়ে তাঁদের পুষতে চাইছে।'
অন্যদিকে, প্রাক্তন কংগ্রেস সাংসদ অধীর চৌধুরীর কথায়, 'বাংলার মুখ্যমন্ত্রী এগুলো ইচ্ছাকৃতভাবে করছেন। এই প্রক্রিয়া শুরুর আগেই জানতেন যে এটা বেআইনি। তাও এটা করেছেন। তাই সবথেকে বড় অপরাধী যদি কেউ থেকে থাকেন, তিনি হলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।'
এক চাকরিহারা শিক্ষাকর্মী এবিপি আনন্দকে বলেন, 'যেভাবে নোটিফিকেশন ছিল, সেভাবে তো খারিজ হওয়ারই কথা। নোটিফিকেশন তো যোগ্য-অযোগ্য সবাইকে নিয়ে দিচ্ছে। তাহলে, সেক্ষেত্রে তো খারিজ হওয়াটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। আমরা তো জানতাম, জানতাম খারিজ হবে।'
এ প্রসঙ্গে তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, 'মানবিক দিক থেকে পাশে দাঁড়াচ্ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী এবং একটা শ্রেণি অমানবিক আচরণ করে চলেছেন। চাকরি খেতে হবে। লোককে বিপদে ফেলতে হবে। লোকের যন্ত্রণার উপর রাজনীতি করতে হবে। কোর্টকে আমরা সম্মান করি, তবে কোর্টের কিছু কিছু চেয়ার তো প্রেডিক্টেবল। কোন আইনজীবীরা কোন চেয়ারকে প্রেফার করে, আর কোন চেয়ার থেকে কোন অর্ডার আসবে, আর সিপিএম, বিজেপি, মিষ্টি বিলি করবে। সেটা প্রেডিক্টটেবল হয়ে উঠছে। এটা খুব দুর্ভাগ্যজনক।'






















