DA Demand : পার্থ-র গ্রেফতারি পর্বে DA-র দাবিকে হাতিয়ার করে সরব সরকারি কর্মচারী সংগঠনগুলি
DA Issue : পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের দু’টো ফ্ল্যাট থেকে যে পরিমাণ টাকা উদ্ধার হয়েছে তাকে টাকার গদি বললে খুব একটা ভুল হবে না
কৃষ্ণেন্দু অধিকারী, আশাবুল হোসেন, শিবাশিস মৌলিক, কলকাতা : পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের (Partha Chatterjee) ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের দু’টো ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হওয়া টাকা এবং গয়নার পরিমাণ চমকে দিয়েছে অনেককেই ! এনিয়ে তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে একযোগে আক্রমণ শানাচ্ছে বিরোধীরা। এই প্রেক্ষাপটে DA’র দাবিকে হাতিয়ার করে, সরব হয়েছে সরকারি কর্মচারী সংগঠনগুলোও (Government Employees Organization)। এনিয়ে পাল্টা জবাব দিয়েছে তৃণমূল।
নোটের গদির কথা, গল্পের বইতে অনেকেই পড়েছেন। কিন্তু, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের দু’টো ফ্ল্যাট থেকে যে পরিমাণ টাকা উদ্ধার হয়েছে তাকে টাকার গদি বললে খুব একটা ভুল হবে না। দু’দিনে মন্ত্রী-ঘনিষ্ঠ অর্পিতার মাত্র দু’টো ফ্ল্যাটে তল্লাশি হয়েছে। তাতেই উদ্ধার হয়েছে প্রায় ৫০ কোটি টাকা। আর এই বিপুল টাকা-সোনা উদ্ধারের পর তৃণমূল সরকারের দিকে ধেয়ে আসছে বিরোধীদের নানা প্রশ্ন।
এত টাকা কার ?
রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, এত টাকা কার টাকা ? আরও পাওয়া যাবে। লোকে ডিএ পাচ্ছে না। লক্ষ্মীর ভাণ্ডারে পাঁচশোর জায়গায় পাঁচ হাজার করতে পারেন।
আরও পড়ুন ; আন্দোলনকারী চাকরিপ্রার্থীদের হুমকি দিচ্ছেন কে? ভাইরাল ক্লিপ ঘিরে চাঞ্চল্য
প্রসঙ্গত, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পে জেনারেল কাস্টের মহিলাদের প্রতি মাসে ৫০০ টাকা দেয় রাজ্য সরকার। SC-ST দের ক্ষেত্রে মাসে ১ হাজার টাকা। কন্যাশ্রী প্রকল্পে অষ্টম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত বছরে ৭৫০ টাকা। তারপর বিয়ে না করে পড়াশোনা চালাতে চাইলে এককালীন ২৫ হাজার টাকা দেওয়া হয়।
সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলেন, এটা লুঠ হয়েছে। এটা ২৫ শতাংশ। বাকিটা কালীঘাটে। একশো দিনের কাজ, কন্যাশ্রী, আরও প্রকল্পের টাকা লুঠ হয়েছে। তার টাকা। কন্যাশ্রীর টাকা বাড়াতে পারতেন, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার বাড়াতে পারতেন।
এই মুহূর্তে কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীদের সঙ্গে বাংলায় রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের ডিএ-র ফারাক ৩১ শতাংশ। ২০ মে কলকাতা হাইকোর্ট নির্দেশ দেয়, আগামী ৩ মাসের মধ্যে রাজ্য সরকারকে বকেয়া DA মিটিয়ে দিতে হবে। সেই সময়সীমা শেষ হতে বেশিদিন বাকি নেই। অতীতে নানা সময় নানা ইস্যুতে মুখ্যমন্ত্রী একাধিকবার রাজ্যের বেহাল আর্থিক অবস্থার কথা তুলে ধরেছেন। কিন্তু, মন্ত্রী-ঘনিষ্ঠর দু’টো ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হওয়া প্রায় ৫০ কোটি টাকা, গয়না, সম্পত্তির ছবি দেখে সরব হয়েছে সরকারি কর্মচারী সংগঠনগুলোও। তাদের প্রশ্ন, এরপর কি আর কোষাগারের রুগ্ন দশার কথা খাটে ?
এপ্রসঙ্গে কর্মচারী ইউনিয়ন ও অ্যাসোসিয়েশন স্টিয়ারিং কমিটির সাধারণ সম্পাদক সঙ্কেত চক্রবর্তী বলেন, এক কিস্তি ডিএ দিতে বছরে ২৫ কোটি খরচ হয়। এই টাকা দিয়ে ২ কিস্তি ডিএ হয়ে যেত। টাকা নেই বলে বেড়ান, এদিকে টাকা উদ্ধার হচ্ছে।
পাল্টা তৃণমূল বিধায়ক তাপস রায় বলেন, এসব আজব দাবি। আমাদের দল দুর্নীতির সঙ্গে আপস করে না।
আপাতত পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠর ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হওয়া কুবেরের ধন ইডি’র হেফাজতে। আর তার উৎস জানতে পার্থ চট্টোপাধ্যায়, অর্পিতা মুখোপাধ্যায়-সহ অন্যান্যদের জেরা করছেন গোয়েন্দারা।