East Midnapore: হনুমানের হাত থেকে ফসল বাঁচাতে অভিনব উদ্যোগ পটাশপুরে
কৃষি নির্ভর পূর্ব মেদিনীপুর জেলার পটাশপুর জুড়ে হনুমানের তাণ্ডবে অতিষ্ঠ গ্রামবাসীরা। দস্যি হনুমানের হাত থেকে ফসল বাঁচাতে অভিনব উদ্যোগ নিল কৃষি দফতর।
ঋত্বিক প্রধান, পূর্ব মেদিনীপুর: কৃষি নির্ভর পূর্ব মেদিনীপুর জেলার পটাশপুর জুড়ে হনুমানের তাণ্ডবে অতিষ্ঠ গ্রামবাসীরা। হনুমানের উপদ্রবে ফসলের ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে ব্যাপক হারে। দস্যি হনুমানের হাত থেকে ফসল বাঁচাতে অভিনব উদ্যোগ নিল কৃষি দফতর।
হনুমানের হাত থেকে ফসলের ক্ষতি আটকাতে অভিনব কৌশল গ্রহণ করল কৃষি দফতর। পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় ফুল, সব্জি, পান বিভিন্ন ফসল উৎপাদন বেশি হয়ে থাকে। চাষ করতে গিয়ে বিভিন্ন রোগের জন্য ফসল নষ্ট হয়, তাছাড়া অতিবৃষ্টি,অনাবৃষ্টির সমস্যা তো আছেই। এর ফলে এমনিতেই অনেক ফসল নষ্ট হয়। তার উপর বিভিন্ন জায়গায় হনুমানের উপদ্রবে ফসলের ব্যপক ক্ষতি হয়ে থাকে। হনুমানের দল ফসল বা সব্জি খেয়ে, আবার ফসল ছিঁড়ে ব্যাপক পরিমাণে নষ্ট করে। শুধু তাই নয়, হনুমান তাড়া করতে গিয়ে অনেক সময়েই আক্রান্ত হতে হয় কৃষকদের।
পূর্ব মেদিনীপুর জেলার পটাশপুর ১ ব্লকের চিত্রটাও হুবহু এক। এই এলাকায় প্রতিবছর হনুমানের তাণ্ডবে প্রচুর সব্জি ও ফসল নষ্ট হয়। দীর্ঘদিনের এই সমস্যায় স্বভাবতই দিশেহারা অবস্থা কৃষকদের। রেহাই পেতে কখনও বন দফতর তো কখনও কৃষি দফতরের দ্বারস্থ হয়েছেন কৃষকেরা। অথচ হনুমানের নিধন আইনত অপরাধ। তাই কৃষকদের এই সমস্যার থেকে রেহাই কীভাবে দেওয়া হবে সেই নিয়ে চিন্তায় ছিলেন বন দফতরের কর্মীরাও। পাশাপাশি কৃষি দফতরের আধিকারিকেরা কৃষকদের নিয়ে যে কোনও মিটিং বা এলাকা পরিদর্শনে এলেও কৃষকদের কাছে একটাই অভিযোগ পেতেন, হনুমানের হাত থেকে ফসল রক্ষা করা যাবে কীভাবে?
কৃষকদের সমস্যার সমাধান করতে অভিনব পন্থা গ্রহণ করলেন পটাশপুর ১ ব্লকের সহ কৃষি অধিকর্তা স্নিগ্ধা মণ্ডল। বিদেশী প্রযুক্তিতে ক্ষেত থেকে হনুমান তাড়ানোর বিশেষ সাউন্ড সিস্টেম "Monkey Repellent System" ক্ষেতে রাখার পরামর্শ দিচ্ছেন তিনি। এই বিশেষ যন্ত্রটি চালিয়ে ক্ষেতে রেখে দিলে এর থেকে একপ্রকার বিকৃত শব্দ বের হয়, যা হনুমানের স্নায়ুতে অস্বস্তির অনুভূতি সৃষ্টি করবে, এবং সেই অস্বস্তিকর পরিবেশ থেকে বাঁচতে তারা আর ক্ষেতে প্রবেশ করবে না। ফলে কোনও পশুকে হত্যা না করে বা পরিবেশ দূষণ না করেই হনুমান তাড়ানো সম্ভব হবে। খুব সামান্য বিদ্যুৎ খরচেই এই "Monkey Repellent System" ব্যবহার করে উপকার পাবেন কৃষকরা, দাবি স্নিগ্ধা মণ্ডলের।
কৃষি দফতরের আতমা প্রকল্পের মাধ্যমে কয়েকদিন আগেই ৪৫ জন কৃষকের হাতে বিনামূল্যে তুলে দেওয়া হয়েছে এই বিশেষ সাউন্ড সিস্টেম। স্নিগ্ধা মণ্ডলের দাবি, 'হনুমানের হাত থেকে কৃষকদের ফসল বাঁচাতে এই অভিনব উদ্যোগ জেলায় সর্বপ্রথম।' এই বিশেষ যন্ত্রের একটি দিয়েই ২ একর জমি পর্যন্ত হনুমানের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব। কৃষি আধিকারিক জানান, এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে আগামী অর্থবর্ষে আতমা প্রকল্পের মাধ্যমে এই "Monkey Repellent System" যন্ত্র, হনুমানের তাণ্ডবে ক্ষতিগ্রস্ত আরও বেশকিছু কৃষকদের হাতে বিনামূল্যে তুলে দেওয়া হবে। তবে কৃষি দফতরের দেওয়া এই যন্ত্র দেখবার ও কেনার জন্য উৎসুক কৃষকেরা ইতিমধ্যেই ক্রমে খোঁজখবর নিচ্ছেন পটাশপুর ১ ব্লকের কৃষি দফতরে।